জার্সি পাল্টেছে, হাফ সেঞ্চুরি নয়

গুটিকতক ক্রিকেট টিমে এখন আর সীমাবদ্ধ নেই ক্রিকেট। ছড়িয়ে যাচ্ছে পুরো বিশ্ব জুড়েই। তবে সদস্য দল ও সহযোগী দলদের মধ্যে সুযোগ-সুবিধার পার্থক্য যেমন রয়েছে ঠিক তেমনি রয়েছে খেলতে পারার বা পরিচিত পাবার কিংবা নিজের ক্যারিয়ারকে সমৃদ্ধ করার। তাই সচারসচরই দেখা যায় আইসিসির সহযোগী দেশের অনেক খেলোয়াড় নিজেদের ক্যালিবারের জোড়ে জায়গা করে নিচ্ছে সদস্য দেশগুলোর দলে এবং একাদশে।

আবার ভিন্ন চিত্রও ঘটে থাকে। যেহেতু যুক্তরাষ্ট্র, কানাডার মত দেশগুলো বর্তমানে মনোযোগ দিয়েছে ক্রিকেটে সেহেতু সদস্য দেশের অনেক খেলোয়াড়ই পাড়ি জমাচ্ছেন সেসকল দেশের হয়ে ক্রিকেটের প্রতিনিধিত্ব করতে। সদ্য সমাপ্ত হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই মিলেছে এর প্রমাণ।

স্কটল্যান্ড, নামিবিয়া, পাপুয়া নিউ গিনি এবং ওমান দলগুলোতে দেখা মিলেছে এমন নাগরিকত্ব স্থানান্তরিত করা কিংবা পৈতৃকসূত্রে অন্যদেশের নাগরিক হওয়া খেলোয়াড়রাও খেলেছেন এসকল সহযোগী দেশের হয়ে। সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যম গুলোতে ছড়িয়েছে বাংলাদেশের পেস বোলার আবুল হাসান প্রতিনিধিত্ব করতে চলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে। দশম পজিশনে নেমে টেস্ট রেকর্ড গড়া শতক হাঁকানো আবুল হাসানকে পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেখা যেতে পারে আমেরিকানদের জার্সি গায়ে।

এত আলোচনা সেড়ে নেওয়ার কারণ বিশেষ রয়েছে। আজকের আয়োজন এমন ব্যাটারদের নিয়ে যারা কিনা এই একবিংশ শতাব্দীতে দুইটি ভিন্ন দেশের হয়ে অর্ধশতকের দেখা পেয়েছেন। চলুন তবে সেই সকল ব্যাটারদের সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

  • জ্যাভিয়ার মার্শাল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্র)

ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ২০০৮ সালে জ্যাভিয়ার মার্শাল করেছিলেন অর্ধশতক ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে। অভিজ্ঞ এই ব্যাটার সেদিন ব্যাট হাতে কানাডার বিপক্ষে রান করেছিলেন ১৫৭। ঠিক তাঁর এগারো বছর পর তাঁকে আবার ব্যাট হাতে মাঠে দেখা যায় যুক্তরাষ্ট্রের জার্সি গায়ে। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষের ম্যাচে তিনি অর্ধশতক তুলে নিতে সক্ষম হন।

  • এড জয়েস (ইংল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ড) 

ইংল্যান্ডের সাবেক ব্যাটার এড জয়েস তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ারে জাতীয় দলের হয়ে প্রথম অর্ধশতকের দেখা পেয়েছিলেন ২০০৭ সালে, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। তাঁর চার বছর বাদে অর্থাৎ ২০১১ সালে তিনি কানাডার বিপক্ষে আয়ারল্যান্ডের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করাকালীন সময়ে রান করেছিলেন ৮৮। সেই অর্ধশতক ছাপিয়ে যাওয়া রানের সুবাদে তিনি জায়গা করে নিয়েছেন আজকের এই তালিকায়।

  • ইয়ন মরগ্যান (আয়ারল্যান্ড ও ইংল্যান্ড) 

ইংল্যান্ডকে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতানো অধিনায়ক ইয়ন মরগ্যান তাঁর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শুরু করেছিলেন আয়ারল্যান্ডের হয়ে ২০০৬ সালে। ওয়ানডে অভিষেক ম্যাচেই তিনি মাত্র এক রানের জন্যে শত রান স্পর্শ করতে ব্যর্থ হন। ৯৯ রানে থামে তাঁর অভিষেক ইনিংস। ২০০৯ সালে মরগ্যান আয়ারল্যান্ডের জার্সি ত্যাগ করে ইংল্যান্ডের জার্সি গায়ে জড়ান। তাঁর কিছু মাস বাদেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ডের হয়ে অর্ধশতকের দেখা পান তিনি। সেই ম্যাচে মরগ্যানের ব্যাট থেকে এসেছিলো ৫৮ রান ৪১ বলে।

  • লুক রঞ্চি (অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যনান্ড)

অস্ট্রলিয়া এবং নিউজিল্যান্ড এই দুই দলের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অর্ধশতক হাঁকানো একমাত্র ব্যাটার লুক রঞ্চি। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ২০০৮ সালে তিনি মাত্র ২৮ বলে ৬৪ রানের এক ঝড়ো ইনিংস খেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। তারপির তিনি ২০১৩ সালে নিজেকে স্থানান্তর করেন নিউজিল্যান্ড জাতীয় দলে । ব্ল্যাকক্যাপসদের হয়ে ২০১৪ সালে তিনি দেখা পান অর্ধশতকের দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।

  • মার্ক চ্যাপম্যান (হংকং ও নিউজিল্যান্ড)

তালিকার শেষ ব্যক্তি বা খেলোয়াড় নিউজিল্যান্ডের মার্ক চ্যাপম্যান। বাকি খেলোয়াড়েরা ওয়ানডেতে অর্ধশতকের দেখা পেলেও তিনি দুইটি ভিন্ন জাতীয় দলের হয়ে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে অর্ধশতক তুলে নিয়েছেন। ২০১৬ সালের অর্ধশতক ছিল হংকং এর হয়ে এবং নিউজিল্যান্ডের হয়ে অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন সম্প্রতি ভারত-নিউজিল্যান্ড দ্বিপাক্ষিক সিরিজে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link