লা মাসিয়া থেকে বার্সেলোনার তারকা হওয়ার হার যত বেশি লা ফ্যাব্রিকা থেকে রিয়াল মাদ্রিদে জায়গা পাওয়ার হার ততটাই কম। আর কেউ যদি ধারে অন্য কোথাও চলে যান, তাহলে তাঁর আর মাদ্রিদে ফেরা হয় না বললেই চলে ৷ সম্ভাবনা প্রায় তলানিতে, তবে সেটাকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন দানি কারভাহাল। লা ফ্যাব্রিকা থেকে অন্য ক্লাবে গিয়েছেন, যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে ফিরেছেন শিকড়ের কাছেই – যোদ্ধা পরিচয়ের শুরুটা সেখানেই।
উচ্চতার কারণে কারভাহাল ডিফেন্ডার হবেন সেটাই একরকম অবিশ্বাস্য ছিল; কিন্তু তিনি কেবল ডিফেন্ডার হননি, সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর মত আভিজাত্যময় দুর্গের প্রহরী বনে গিয়েছেন।
আজন্ম লড়াই করা মানুষটাকে আবারো ইনজুরি নামক অদৃশ্য শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামিয়ে দিলো ভাগ্য। এসিএলের মত ঘাতক চোট আঘাত হানলো তাঁর পায়ে; এই চোটের কারণেই তো মার্কো আসেনসিও মাদ্রিদের স্টার বয় থেকে সুপার স্টার হতে পারেননি, ডেভিড আলাবার নামই ভুলে গিয়েছে অনেকে।
কিন্তু এবার লড়াইটা যেহেতু কারভাহালের, তাই বিশ্বাসের ভিত্তিটা শক্তই আছে। কতবারই তো তাঁকে ঘিরে সন্দেহের জাল বড় হয়েছে; আধুনিক ফুটবলে বেমানান ট্যাগ দিয়ে বিকল্প খোঁজার পরামর্শ দিয়েছিলেন কতজনেই। অথচ তিনি দাঁতে দাঁত চেপে নিজের মত করে সামলেছেন রয়্যাল মাদ্রিদের ডান অংশ। শুধু সামলেছেন বললে কম হয়, সাফল্যের পথে অগ্রণী সেনানির মত ছিলেন।
গত মৌসুমেই তো লা লিগা আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছিলেন এই স্প্যানিশ। জাতীয় দলের হয়ে জিতলেন ইউরো – যার ক্যারিয়ারের শেষ আরো তিন বছর আগেই লেখা হয়ে গিয়েছিল তিনি ইতিহাস রাঙিয়েছেন কি অনায়াসে।
লুকা মদ্রিচ অনিয়মিত; দানি কারভাহালই তাই রিয়াল মাদ্রিদের নিয়মিত অধিনায়ক হয়েছেন, প্রায় সময়ই আর্মব্যান্ড শোভা পায় বাহুতে। অন্য ক্লাবে থেকে রিয়ালকে মুগ্ধ করা, প্রাইম টাইম পার করে আবারো প্রাইমে ফেরা – অতঃপর অধিনায়কত্ব। তাঁর ক্যারিয়ার জুড়ে কেবলই ঘুরে দাঁড়ানোর আখ্যান। আরও একবার তাই তিনি ঘুরে দাঁড়াবেন, নিশ্চিত!
কারভাহাল ফিরে আসবেন নিশ্চিত দেখেই ইনজুরিতে পড়ার একদিন পরে চুক্তি নবায়নের ঘোষণা দিতে দুই বার ভাবেনি ম্যানেজম্যান্ট। এই ভরসা জোরেই তিনি ফিরবেন বার্নাব্যুতে, তাঁকে ফিরতেই হবে।