মিশেলের ব্যাটে প্রায় পঞ্চাশ বছরের অপেক্ষার অবসান

এক যুগ নয়, চার যুগ ধরে একটা রেকর্ডে রীতিমত নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েছিলেন নিউজিল্যান্ডের সাবেক ক্রিকেটার গ্লেন টার্নার। তবে দীর্ঘ সময়ের অবসান ঘটিয়ে এবার গ্লেন টার্নারের পাশে নাম লেখালেন ড্যারিল মিশেল।

ধর্মশালায় ভারতের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছেন এ কিউই ব্যাটার। আর তাতেই একটি কীর্তি গড়েছেন ড্যারিল মিশেল। ১৯৭৫ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেছিলেন কিউই তারকা গ্লেন টার্নার।

এরপর থেকে ভারতের বিপক্ষে বিশ্বকাপের মঞ্চে তিন অঙ্ক ছুঁতে পারেনি আর কোনো কিউই ব্যাটার। ৪৮ বছর বাদে সেটাই করলেন মিশেল। শুধু তাই নয়, বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ভারতের মাটিতে এই প্রথম কোনো ব্যাটার করলেন সেঞ্চুরি।

অথচ নিজের সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার দিনে দলের কী নাজুক অবস্থাতেই না ব্যাটে নেমেছিলেন মিশেল। প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে নিউজিল্যান্ডের ইনিংসে নেই ২ উইকেট। ডেভন কনওয়ে আর উইল ইয়াং, দুই ওপেনারকে হারিয়ে তখন রীতিমত ধুঁকছিল কিউইরা।

তবে দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তোলেন ড্যারিল মিশেল। ক্রিজেই নেমেই নিজের স্বভাবজাত সাবলীল ব্যাটিংয়ে প্রতিপক্ষের উপর চড়াও হতে শুরু করেন তিনি।

তবে তাঁর আক্রণাত্মক ব্যাটিংয়ে সবচেয়ে ভুক্তভোগী হয়েছে কুলদ্বীপ যাদব। বাঁ হাতি এ রিস্ট স্পিনারের স্পিনবিষে যেখানে নামী ব্যাটাররা পর্যন্ত কুপোকাত হয়ে পড়ে, সেখানে আজ এ স্পিনারকেই টার্গেট করেছিলেন ড্যারিল মিশেল।

সব মিলিয়ে কুলদ্বীপের ২৮ বলে ৪৪ রান তোলেন কিউই এ ব্যাটার। যেখানে ৩ টি ছক্কার মারও ছিল। পরিসংখ্যান বলে এক ইনিংসে আজ অবধি কোনো ব্যাটারই কুলদ্বীপের বিপক্ষে এত রান তোলেননি।

অবশ্য এমন দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের সময় মিশেল যোগ্য সঙ্গ পেয়েছিলেন রাচিন রবীন্দ্রর। এই দুইজন মিলে তৃতীয় উইকেটে গড়েন ১৫৯ রানের জুটি। আর তাতেই বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে যায় নিউজিল্যান্ড।

৮৭ বলে ব্যক্তিগত ৭৫ রান করে রাচিন রবীন্দ্র ফিরে গেলে ম্যাচের মোমেন্টাম আবার দূরে সরে যাওয়ার আশঙ্কায় ছিল কিউইদের। এর মধ্যে আবার গ্লেন ফিলিপস, টম ল্যাথামরাও ফিরে গেছেন অল্প রানে।

মিডল অর্ডার ব্যাটারদের দ্রুত বিদায়ে স্বাভাবিকভাবেই চাপে পড়েছিল কিউইরা। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন মিশেল। তাঁর ব্যাটে ভর করেই লড়াই করার পেয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। নিজের শতক পূরণ করেন ১০০তম বলে।

তবে শতক ছোঁয়ার পরও তাঁর সাবলীল ব্যাটিং ঠিকই অব্যাহত ছিল। ইনিংসের শেষ ওভারে যদিও আউট হয়ে ফিরেছিলেন। তবে তার আগে নিজের নামের পাশে ৯ চার আর ৫ ছক্কায় যোগ করেন ১২৭ বলে ১৩০ রানের ইনিংস। আর এতেই ২৭৩ রানের পুঁজি পায় নিউজিল্যান্ড।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link