বিধ্বংসী ওয়ার্নার বড্ড ভয়ংকর

দুই দফা জীবন পেলেন। ডেভিড ওয়ার্নার সেই সুযোগগুলোর সদ্ব্যবহারই করলেন। ব্যাস! তুলোর মত স্রেফ উড়ে গেল পাকিস্তানের বোলিং লাইনআপ। দূর্ধর্ষ এক ইনিংস এলো ওয়ার্নারের ব্যাট থেকে। যত ক্ষোভ যেন উগড়ে দিলেন ব্যাঙ্গালুরুতে।

দিনটা ওয়ার্নারের ছিল। ভাগ্যের পূর্ণ সহয়তাই যেন তিনি পেলেন। কাজেও লাগালেন সুদে আসলে। এক ওয়ার্নারকে জীবন দানের খেসারতই দিতে হলো শাহীন আফ্রিদিদের। ব্যক্তিগত ১০ রানের মাথায় ওয়ার্নার ক্যাচ তুলে দিলেন মিড অনে। সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন উসামা মির। বিশ্বকাপে পেয়েছেন প্রথম সুযোগ। তাইতো স্নায়ুচাপ কাবু করেছিল উসামাকে।

তাতে দিনের সবচেয়ে বড় ক্ষতিটাই হয়ে গেল তার হাত ধরে। সহজ এক ক্যাচ ফেলে দিলেন তিনি। তাও আবার ডেভিড ওয়ার্নারের! এরপর ওয়ার্নারকে আর থামায় কে! দূর্বার গতিতে ছুটল তার ব্যাট। একেবারে স্টিমরোলার হয়ে। বুলডোজারের মত ছত্রখান করে দিলেন তিনি পাকিস্তানের পেস আক্রমণকে।

তার বিপক্ষে গোটা পাকিস্তানের বোলিং লাইনআপ হয়ে গেলো দিশেহারা। ভাল বল করেও হজম করতে হয় বাউন্ডারি। বিশ্বকাপের মঞ্চে, প্রথম তিন ম্যাচে একেবারেই নির্বিষ ছিলেন ওয়ার্নার। চোখ ধাঁধানো এক পারফরমেন্সের ক্ষুধা তার নিশ্চিতরুপেই ছিল।

সেই ক্ষুধা আর ১০ রানে পাওয়া দ্বিতীয় সুযোগ মিলেমিশে দানবীয় এক শক্তির সঞ্চার ঘটালো। সেখান থেকে ওয়ার্নারকে যেন স্রেফ ওয়ার্নারই থামাতে পারতেন। তবে তিনি থামবেন না বলেই যেন ব্রত নিলেন। উদ্দ্যম নৃত্যের মতই বিনোদন ছড়িয়ে দিতে থাকলেন ব্যাঙ্গালুরু থেকে ক্যানবেরা অবধি। পথিমধ্যে রেকর্ডের সঙ্গী হলেন তিনি।

মিশেল মার্শকে সঙ্গী করে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ ইতিহাসের সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েন ডেভিড ওয়ার্নার। ২৫৯ রানে মার্শের বিদায়ে থেমেছে যেই জুটি। তবুও যেন দমানো যায়নি ওয়ার্নারকে। সুযোগ অবশ্য এসেছিল। এবার উসামা মির ছিলেন বোলিং প্রান্তে। তার বলে ক্যাচ উঠেছিল। সেটা অবশ্য খানিক কঠিন এক ক্যাচই ছিল। আবদুল্লাহ শফিক পারেননি তালুবন্দী করতে।

ততক্ষণে অবশ্য সেঞ্চুরি পেরিয়ে গেছে ওয়ার্নারের রান। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে যা তার ২১তম সেঞ্চুরি। ১০৫ রানের মাথায় দ্বিতীয় দফা আউট হওয়া থেকে বেঁচে ফিরলে আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠেন ওয়ার্নার। ব্যক্তিগত ৯০ বলের সময় তৃতীয় সুযোগ পাওয়া ওয়ার্নার পরবর্তী ৩৩ বলে তোলেন ৫৮ রান।

তার ব্যক্তিগত রান গিয়ে দাঁড়ায় ১৬৩-তে। ৯টা সুবিশাল ছয় আর ১৪টি বাউন্ডারির মিশেলে আগ্রাসনের দারুণ এক চিত্রায়ন। তবে একটা পর্যায়ে থামতে হয়েছে তাকে। হারিস রউফ তাকে অবশেষে থামাতে পেরেছেন। এদফা অবশ্য বদলি ফিল্ডার শাদাব খান ক্যাচ লুফে নিতে ভুল করেননি।

অবশেষে ওয়ার্নার হাঁটা শুরু করেন প্যাভিলনের দিকে। সমাপ্তি ঘটে এক দানবীয় ইনিংসের। ততক্ষণে অবশ্য পাকিস্তানের আত্মবিশ্বাস চুরমার করে দিয়েছেন ওয়ার্নার। ১২৮ বলে ১৬৩ রান করে যখন ফিরে যাচ্ছিলেন ওয়ার্নার তখন তো অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ছিল ৪২.২ ওভারে ৩২৫।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link