ক্রিকেটের প্রথম টেলিভিশন স্টার!

যেন কোনো ক্রীড়াবিদ নন, সাক্ষাৎ সিনেমার নায়ক। চাইলে দিব্যি হলিউডের ছবিতে নায়ক হয়ে যেতে পারতেন। তবে, তিনি চলে এসেছেন মাঠে। এই মাঠ কিন্তু একটা মাঠ নয়, একাধিক মাঠ। তিনি ক্রিকেট কিংবা ফুটবল – দু’টোতেই সমান ভাবে পারদর্শী ছিলেন, দুই খেলাতেই নৈপুণ্য দেখানো সত্যিকারের অলরাউন্ডার তিনি। ব্রিটিশ ক্রিকেটের অস্ত্রশালার সবচেয়ে চকচকে অস্ত্র তিনি।

যেন কোনো ক্রীড়াবিদ নন, সাক্ষাৎ সিনেমার নায়ক। চাইলে দিব্যি হলিউডের ছবিতে নায়ক হয়ে যেতে পারতেন। তবে, তিনি চলে এসেছেন মাঠে। এই মাঠ কিন্তু একটা মাঠ নয়, একাধিক মাঠ। তিনি ক্রিকেট কিংবা ফুটবল – দু’টোতেই সমান ভাবে পারদর্শী ছিলেন, দুই খেলাতেই নৈপুণ্য দেখানো সত্যিকারের অলরাউন্ডার তিনি। ব্রিটিশ ক্রিকেটের অস্ত্রশালার সবচেয়ে চকচকে অস্ত্র তিনি।

আর বাইশ গজের বিবেচনায় যদি বলি – ক্রিকেটের টেলিভিশন যুগের প্রথম সুপারস্টার। অবিস্মরণীয় সব রেকর্ড রয়েছে তাঁর –  টেস্টের এক সেশনে সর্বাধিক রান (১৭৩, প্রতিপক্ষ পাকিস্তান ছিল), প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে এক পঞ্জিকাবর্ষে যেকোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ রান (৩৮১৬ রান) কিংবা সময়ের হিসেবে দ্রুততম ট্রিপল সেঞ্চুরির রেকর্ড (১৮১ মিনিট) এবং আরো অনেক কিছু।

তিনি ডান হাতি ব্যাটসম্যান, বাঁ-হাতি রিস্ট স্পিনার। টেস্টে তিনি ৫০ গড়ে ৫৮০৭ রান করেছেন। ১৭টি সেঞ্চুরি, ২৫ উইকেট ছিল। সাথে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৫২ গড়ে ৩৮৯৪২ রান। এখানে সেঞ্চুরির সংখ্যাটা অবিশ্বাস্য – ১২৩ টি সেঞ্চুরি। আবার ৬২২ উইকেটও পেয়েছিলেন।

কম্পটন ফুটবলার হিসেবেও ছিলেন দুর্দান্ত। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দল আর্সেনালের হয়ে জিতেছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও এফএ কাপ, ৫৪ ম্যাচে গোল করেছেন ১৫টি। এই কিংবদন্তির পছন্দের পজিশন ছিল রাইট উইং।

আরেকটা দিক থেকে তিনি সবার থেকে আলাদা। ইংল্যান্ড, মিডলসেক্স ও আর্সেনালের এই তারকাই ব্রিটেনের ইতিহাসের প্রথম ক্রীড়াবিদ যিনি বিজ্ঞাপনে অংশ নিয়ে বিরাট অংকের মালিক মনে যান। তিনি হেয়ারজেল ব্র্যান্ড ব্রাইলক্রিমের বিজ্ঞাপন করেছেন ৪০ ও ৫০-এর দশকে। খুব জনপ্রিয় ছিলেন। মানে, চাইলে সত্যিই সিনেমা করে ফেলতে পারতেন। তাঁর সাফল্যের জের ধরে পরে ব্রাইলক্রিমের মডেল হয়েছিলেন পাকিস্তানের ফাস্ট বোলার ফজল মাহমুদও।

তাঁর সময়ের ক্রিকেটারদের কিছু সময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে হারিয়ে গেছে। সেই সময় সেনাবাহিনীর হয়ে ভারতে ছিলেন ডেনিস। ভারতে এসে তিনি রীতিমত রঞ্জি খেলতে নেমে যান। অস্ট্রেলিয়ার কিথ মিলারও তখন ভারতেই। দুই কিংবদন্তি কলকাতার মাঠে মুখোমুখিও হন। কিথ মিলার খেলেন অস্ট্রেলিয়ান সার্ভিসের হয়ে। আর কম্পটন খেলেন ইস্ট জোনের হয়ে।

কম্পটন যখন ৯৪ রানে ব্যাট করছিলেন তখন ম্যাচটা বাতিল হয়ে যায়। কারণ, দর্শকরা নাকি মাঠে ঢুকে পড়েছিল। আর খেলা ফেরানো যায়নি। ম্যাচ বাতিল হলেও সেখান থেকেই কম্পটন-মিলারের বন্ধুত্ব শুরু হয়। আর দুই বন্ধুর নামেই অ্যাশেজের সিরিজ সেরার পুরস্কার ‘কম্পটন-মিলার মেডেল’ দেওয়া হয় ২০০৫ সাল থেকে।

একবার মিডলসেক্সের হয়ে কেন্টের বিপক্ষে খেলতে নেমেছিলেন লর্ডসে। শেষ ইনিংসে জিততে দরকার ৩৯৭ রান। হাতে মাত্র দুই সেশন। কম্পটন সেখানে দাঁড়িয়ে ১৬৮ রান করেন, যদিও ৭৫ রান বাকি থাকতেই খেলা শেষ করে মিডলসেক্স। এটাকে নিজের প্রিয় ইনিংস বলতেন কম্পটন

ইনিংসটা দেখে নেভিল কার্ডাস লিখলেছিলেন, ‘এর আগে মাঠের কোনো ঘটনা আমাকে এতটা ছুঁয়ে যায়নি, যতটা এই গ্রীস্মে ঘটলো যখন গেলা লর্ডসের মাঠে। মলিন মুখে দুশ্চিন্তাই ছিল বেশি, কিন্তু দেখলাম পূর্ণশক্তিতে কম্পটন যখন জ্বলে উঠলেন – সেই মুখগুলোই তখন বিশেষ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। যেন প্রত্যেকেই স্বাস্থ্যকর আর সুখী একেকজন মানুষ। কম্পটনের ইনিংস সবার মুখে হাসি ফোটায়, ওতে কোনো বৈষম্য নেই।’

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...