বয়স ৪২ বছর, মাস দুয়েক পরেই ৪৩ হবে। জীবনের এই পর্যায়ে এসে ক্রিকেটাররা ভিন্ন পেশার কথা ভাবেন, পরিকল্পনা করেন অবসর জীবন নিয়ে। অথচ মহেন্দ্র সিং ধোনি উল্টো পথে হাঁটছেন; অবশ্য পুরো ক্যারিয়ার জুড়ে উল্টো পথে হেঁটে সাফল্য চিনিয়ে আনা মানুষটা এখনো উল্টো পথে হাঁটবেন সেটিই তো স্বাভাবিক। তাই তো অবসর ভাবনা নয়, বরং তাঁর মাথা ভর্তি হয়ে আছে পারফরম্যান্সের চিন্তায়।
এইতো মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে স্রেফ চার বল খেলেই এই ব্যাটার করেছিলেন বিশ রান; চেন্নাই সুপার কিংস সে ম্যাচে বিশ রানের ব্যবধানে জিতেছিল। কিন্তু এতেও তুষ্ট হননি তিনি, পরের ম্যাচে লখনৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে নিজেকে ছাড়িয়ে গেলেন। তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে নয় বলে ২৮ রানের ক্যামিও। স্ট্রাইক রেট ৩১১!
আঠারোতম ওভারের শেষ বলে বাইশ গজে এসেছিলেন এই ডানহাতি, সেই বলটা লং অফে ঠেলে দিয়ে স্ট্রাইক ধরে রেখেছিলেন। পরের ওভারের প্রথম দুই বলেই চার আর ছক্কা হাঁকিয়ে স্ট্রাইক ধরে রাখার সিদ্ধান্ত যৌক্তিক প্রমাণ করেছেন তিনি।
ইনিংসের বিশতম ওভারে এরপর চার বল মোকাবিলা করেছেন ধোনি, ফলাফল ৬, ৪, ২, ৪। অর্থাৎ চার বল থেকে আদায় করেছেন ১৬ রান, স্ট্রাইক রেট ৪০০! শেষ ওভারে অবশ্য তাঁর আগ্রাসন আকাশ ছোঁয়া, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের বিশতম ওভারে ২৫০ ছুঁই ছুঁই স্ট্রাইক রেট ব্যাট করেন তিনি। এমনকি এইসময়ে তাঁর চেয়ে বেশি ছয় মারতে পারে আর কোন ব্যাটার।
মুম্বাইয়ের বিপক্ষে ছোট কিন্তু কার্যকরী ক্যামিওতে খেলার মোমেন্টাম বদলে দিয়েছিলেন এই উইকেটকিপার। ১৮০/১৯০ রান হওয়ার কথা থাকলেও সেদিন দলীয় সংগ্রহ ২০০ পার করিয়ে দলকে বাড়তি আত্মবিশ্বাস এনে দিয়েছিলেন তিনি। লখনৌর বিপক্ষেও প্রায় একই কাজ করেছেন – মোমেন্টাম চেঞ্জার বলা যায় তাই তাঁকে।
লং অন, মিড উইকেটের উপর দিয়ে বড় বড় ছক্কা – মহেন্দ্র সিং ধোনির এসব স্মৃতি আমাদের হৃদয়ে গেঁথে আছে। এবার স্মৃতির ভান্ডারে যোগ হলো তাঁর স্কুপ খেলার নতুন দৃশ্য – তিনি মাঠে থাকুক, নিত্যনতুন উপায়ে বিস্মিত করুক সমর্থকদের সেটাই এখন প্রার্থনা সবার।