এশিয়া কাপে এ কেমন বৈষম্য এসিসির!

নানাভাবে জল ঘোলা করার পর অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ পেয়েছে এশিয়া কাপের সূচি। ভারত, পাকিস্তান দুই দলের বিভিন্ন দাবি দাওয়ার কারণেই বারবার পিছিয়েছে সূচি প্রকাশের দিনক্ষণ। শেষ পর্যন্ত দু’পক্ষকে খুশি করেই তৈরি হয়েছে টুর্নামেন্টের রূপরেখা। এতে অবশ্য কপাল পুড়েছে বাংলাদেশের।

পাকিস্তানের মাটিতে বসার কথা ছিল এবারের এশিয়া কাপ। তবে বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই) দল পাঠাতে অস্বীকৃতি জানানো তে বাড়ে বিপত্তি। পরবর্তীতে অবশ্য শ্রীলঙ্কাকে সহ-আয়োজক দেশ ধরে হাইব্রিড মডেলে টুর্নামেন্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয় এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি)।

তাতেও অবশ্য অচলাবস্থা কাটেনি। ম্যাচ সংখ্যা বাড়ানো, রেভিনিউ ভাগাভাগি নিয়ে বেশ কয়েকবার বসতে হয়েছে এশিয়ান ক্রিকেটের নীতি নির্ধারকদের। সবশেষে যে সূচি প্রকাশিত হয়েছে তাতে দেখা যায়, বাংলাদেশ দলকে শ্রীলঙ্কা থেকে পাকিস্তান ঘুরে বেড়াতে হবে একাধিকবার।

 

আসরের প্রথম ম্যাচে ৩১ তারিখ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ক্যান্ডি স্টেডিয়ামে মাঠে নামবে সাকিব,তামিমরা। পরের ম্যাচে আবার আফগানিস্তানের সাথে খেলতে হবে পাকিস্তানের লাহোরে। অর্থাৎ মাত্র ভ্রমণক্লান্তি নিয়েই তিনদিনের ব্যবধানে ব্যাট-বলের লড়াইয়ে নামতে হবে টিম টাইগার্সকে।

অর্থাৎ বাংলাদেশ যদি গত আসরের মত এবারও গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে পড়ে তবে বিমানে ওঠার সংখ্যার চেয়ে ম্যাচ সংখ্যা কম হবে। মাত্র দুই ম্যাচ খেলার জন্য তিনবার এয়ারপোর্টের ঝক্কি – অবিশ্বাস্য।

গ্রুপ পর্বের বাঁধা ডিঙালেও নিস্তার নেই বাংলাদেশের। আবার ফিরতে হবে শ্রীলঙ্কায়। তবে এর আগে পাকিস্তানেই খেলবে আরেক ম্যাচ। তিনদিনের ব্যবধানে দুই লাহোরে খেলে বাংলাদেশী ক্রিকেটারদের খুঁজতে হবে পাসপোর্ট; কারণ নয় তারিখের ম্যাচ খেলতে হবে লঙ্কানদের ডেরায়। এরপর অবশ্য ছোটাছুটির পরিমাণ কমবে, কারণ টুর্নামেন্টের বাকি ম্যাচ খেলা হবে কলম্বো স্টেডিয়ামে।

বাংলাদেশের মত ভাগ্য বরণ করতে হবে আফগানিস্তান আর নেপালকেও। বাংলাদেশের পরিবর্তে আফগানরা সুপার ফোরে জায়গা পেলে তাদের পরপর দুইদিন দুই ম্যাচ খেলতে হবে। অন্যদিকে, নেপাল খুব সম্ভবত দুই ম্যাচ খেলেই বাদ পড়বে, আর এই দুই ম্যাচ খেলতে তাঁদের ঘুরতে হবে দুই দেশ।

দ্রুত টুর্নামেন্ট শেষ করার জন্য আর ভারত, পাকিস্তানকে সন্তুষ্ট করতে ভুলে ভরা এক সূচি প্রকাশ করেছে এসিসি। ভারতীয় দল সবগুলো ম্যাচ খেলবে শ্রীলঙ্কাতে; পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কাকে স্বস্তিতে ভ্রমণ করার জন্য তাঁদের ম্যাচের মাঝে ব্যবধান দেয়া হয়েছে চার থেকে পাঁচ দিনের। অথচ বাকি দলগুলোর বেলায় যেন বড্ড তাড়াহুড়ো মহাদেশীয় ক্রিকেট সংস্থার।

স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে দুই পরাশক্তি ভারত, পাকিস্তান এবং সহ-আয়োজক শ্রীলঙ্কাকে সুবিধা দিতে গিয়ে এসিসি কি বাংলাদেশের মত দলের সাথে বৈষম্য করেনি?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link