করোনার কারণে গত বছরের মার্চে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ স্থগিত হওয়ার মধ্য দিয়ে বন্ধ হয়ে যায় দেশের সব ধরণের ক্রিকেট। এই সময় বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ম্যাচের সাথে স্থগিত হয়ে যায় ঘরোয়া টুর্নামেন্ট গুলোও। চলতি বছরের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার আগে দুটি ঘরোয়া টুর্নামেন্ট মাঠে গড়ালেও এখনো আলোর মুখ দেখেনি নিয়মিত হওয়া টুর্নামেন্ট গুলো।
তবে, দীর্ঘ বিরতির পর অবশেষে অপেক্ষার পালা শেষ হচ্ছে। আজ গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দীন চৌধুরী সুজন জানিয়েছেন চলমান বাংলাদেশ ইমার্জিং দল ও আয়ারল্যান্ড উলভসের মধ্যকার সিরিজ শেষ হলেই চলতি মাসেই শুরু হবে জাতীয় লিগ। জাতীয় লিগ শেষে মাঠে গড়াবে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমাদের চেষ্টা থাকবে যত দ্রুত সম্ভব ঘরোয়া ক্রিকেটকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। এই মুহূর্তে যে গ্যাপগুলো আছে তাতে লঙ্গার ভার্সন দিয়েই হয়তো আমরা শুরু করবো। পরবর্তীতে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে। বর্তমানে আমাদের একটা সিরিজ চলছে ইমার্জিং দলের সাথে। সে ক্ষেত্রে এই সিরিজের পরপরই আমরা চেষ্টা করবো ঘরোয়া ক্রিকেটকে ফিরিয়ে আনার।’
ঘরোয়া লিগ নিয়মিত মাঠে রাখতে বিভিন্ন পরিকল্পনাও করছে বিসিবি। আগে কখনো ঘরোয়া লিগের জন্য ক্যালেন্ডার না করলেও এবার ক্যালেন্ডার বানানোর কাজ শুরু করেছে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
আইসিসির ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রাম (এফটিপি) অনুযায়ী ২০২৩ সাল পর্যন্ত ঠিক করা রয়েছে বাংলাদেশের পরবর্তী সিরিজ গুলো। এফটিপির সূচির সাথে যেনো সাংঘর্ষিক না হয় সেই বিষয়টি মাথায় রেখে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ঘরোয়া লিগের ক্যালেন্ডার করবে বিসিবি।
সুজন বলেন, ‘যেহেতু আমাদের এফটিপি ২০২৩ সাল পর্যন্ত একটা কনসার্ন করা আছে সেটাকে মাথায় রেখে আমাদের ঘরোয়া লিগের জন্যও ২০২৩ সাল পর্যন্ত একটা ক্যালেন্ডার তৈরি করা হবে। বিশেষ করে মূল যে টুর্নামেন্টগুলো আছে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ, বিপিএল, জাতীয় লিগ সহ অন্যান্য যে প্রতিযোগিতাগুলো আছে সে টুর্নামেন্টগুলোর একটা সূচি নির্ধারণ করার জন্য আমরা কাজ করছি। এ ব্যাপারে প্রক্রিয়াগত কিছু ব্যাপার সংশ্লিষ্ট কমিটি থেকে সুপারিশ আসার পরই আমরা প্রকাশ করতে পারবো বোর্ডের অনুমোদন সাপেক্ষে।’
করোনা প্রকোপের কারণে গত বছর মাঠে গড়ায়নি বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ঘরোয়া টুর্নামেন্ট বাংলাদেশ প্রিমিয়াম লিগ (বিপিএল)। এনসিএল ও ডিপিএলের সাথে এবার বিপিএল আয়োজনেরও প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল অনুমোদন দিলে চলতি মাসেই প্রকাশ হতে পারে সূচিও।
বিপিএল আয়োজন করা নিয়ে বিসিবির এই প্রধান নির্বাহী বলেন, ‘বিপিএল পরবর্তী আসরের জন্য আমরা একটা স্লট বের করে রেখেছি। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের অনুমোদন সাপেক্ষে আমরা এটা প্রকাশ করবো।’
গত মাস থেকেই করোনার ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়েছে বাংলাদেশে। নিউজিল্যান্ড সফরে যাওয়ার আগে করোনার ভ্যাকসিন নিয়েছেন জাতীয় দলের স্কোয়াডে থাকা ক্রিকেটাররা। বিসিবি প্রধান নির্বাহী জানিয়েছেন ঘরোয়া লিগ শুরু হওয়ার আগে ক্রিকেটার সহ সংশ্লিষ্টদেরও ভ্যাকসিন নিশ্চিত করা হবে।
তিনি বলেন, ‘আমি আগেও বলেছি ভ্যাকসিনের জন্য তালিকা ইতোমধ্যে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে পাঠানো হয়েছে। ইনফরমেশন পেয়েছি এটা প্রক্রিয়াধীন। এরপর সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাথে সামঞ্জস্য করে যত দ্রুত সম্ভব আমরা চেষ্টা করবো খেলোয়াড়, সাপোর্ট স্টাফ ও গ্রাউন্ডসম্যানদের ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসতে।’