‘চাইলেও ভাল উইকেট বানানো সম্ভব নয়’

ঘরের মাঠের সুবিধা কাজে লাগিয়ে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম বারের মতো কোন ফরম্যাটে সিরিজ জিতলেও প্রশ্ন উঠেছে মন্থর ও টার্নিং উইকেটের ফাঁদ বানানো নিয়ে। তবে বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো জানিয়েছেন তাঁরা ভাল উইকেটের আশা করলেও আবহওয়ার কারণেই এখন ভাল ও স্পোর্টিং উইকেট বানানো সম্ভব হয়নি।

এই সিরিজের পাঁচ ম্যাচের দশ ইনিংস মিলিয়ে দলীয় সর্বোচ্চ রান প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের করা ১৩১। আর সর্বনিম্ন শেষ ম্যাচে করা অস্ট্রেলিয়ার ৬২। পাঁচ ম্যাচের এই সিরিজে হাফ সেঞ্চুরি হয়েছে মাত্র দুটি। একটি করেছিলেন মিশেল মার্শ ও আরেকটি এসেছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাট থেকে। এছাড়া বড় ইনিংস খেলতে পারেননি আর কেউই।

অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের সাথে নিজেদের চেনা কন্ডিশনে ব্যর্থ ছিলেন সৌম্য সরকার, নাঈম শেখ, নুরুল হাসান সোহান ও শামিম হোসেন পাটোয়ারিরা। তুলনামূলক ভালো করলেও আফিফ হোসেন ছাড়া ধারাবাহিক ছিলেন না সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা। এই ব্যাটিং বিপর্যয়ের জন্য সবাই কাঠগড়ায় তুলেছে মিরপুরের উইকেটকেই।

অনেকেরই প্রশ্ন জয়ের জন্য এমন উইকেট বানিয়েছে স্বাগতিকরা। কিন্তু ডোমিঙ্গো মনে করেন চাইলেও এই সময় এর থেকে ভালো উইকেট বানানো সম্ভব নয়। তিনি জানিয়েছেন আবহওয়ার কারণেই এখন উইকেট শুকনো রাখা যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, ‘আমি মাঠকর্মী নই, মাঠ তো আমি প্রস্তুত করতে পারবো না, আর এটা আমার কাজও নয়। আমিও ভালো উইকেটের আশা করেছি। কিন্তু এরকম আবহাওয়াতে তো উইকেট ভালো রাখাও কঠিন হয়ে যায়। রোদ না থাকার কারণে উইকেট শুকনো রাখা যাচ্ছে না। আবহওয়ার কারণে বছরের এই সময়টাতে উইকেট মন্থরই থাকবে। আমি ভালো উইকেট চাইলেও এটা কঠিন।’

এমন উইকেটে খেলে জয় পাওয়াতে জয়কে বড় করেও দেখছে না অনেকে। কিন্তু ডোমিঙ্গো মনে করেন যেই রান করেই জয় আসুক না কেনো সেটা সব সময়ই আত্মবিশ্বাস দেবে দলকে। তিনি বলেন, ‘আপনি সব সময় ইতিবাচক থাকুন। ১৪০ রান করে জিতলে সেটাও জয়, ১৮০ রান করে জিতলে সেটাও জয়। জয় সব সময় আপনাকে আত্মবিশ্বাস দেবে।’

প্রতিটা ম্যাচে জয় পেলেও এই সিরিজে ব্যর্থ ছিল বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি। শুধুমাত্র শেষ ম্যাচে উদ্বোধনী জুটি থেকে ৪০ রানের উপর পেয়েছিল বাংলাদেশ। আর কোন ম্যাচেই ৩০ এর উপর রান আসেনি ওপেনিং জুটি থেকে। তবে ব্যর্থ হলেও উইকেট কঠিন থাকার কারণে ও অস্ট্রেলিয়ার বোলিং আক্রমণের কারণেই ওপেনারদের পাশে দাঁড়িয়েছেন ডোমিঙ্গো।

তিনি বলেন, ‘আমার প্রশ্ন হলো এই সিরিজে কোন ওপেনার রান করছে। অস্ট্রেলিয়ার বোলিং আক্রমণ ছিল অনেক ভালো। হ্যাজলউড, স্টার্ক বিশ্বসেরা বোলার। উইকেটও ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিন ছিল। তারা তাদের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করছে।’

এই সিরিজে ব্যাট হাতে ব্যর্থ ছিলেন সৌম্য সরকার। পাঁচ ম্যাচে এই ওপেনারের ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ২৮ রান। তবে এর আগের সিরিজে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুটি হাফ সেঞ্চুরি করে সিরিজ সেরা হয়েছিলেন তিনি। সৌম্য রান পেয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডের সাথেও। তাই এক সিরিজ ব্যর্থ হওয়ায় সৌম্যর সমালোচনা করাটা ভালো ভাবে নেননি ডোমিঙ্গো।

বাংলাদেশের কোচ মনে করেন এক দুই সিরিজ খারাপ করলেও কাউকে বাদ দেওয়া যাবে না। তিনি বলেন, ‘মাত্র দুই ম্যাচ পরেই সৌম্যকে নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। কিন্তু আগে সিরিজেই সে সিরিজ সেরা হয়েছিল। খেলোয়াড়দের সমর্থন দিতে হবে। এক দুই ম্যাচে রান না পেলে দল থেকে বাদ দেওয়া যাবে না। এই ব্যাপারে দয়া করে আপনারা সচেতন হন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link