এবাদত থাকলে সিলেট হতে পারত মাউন্ট মঙ্গানুই

বিশ্বকাপের ঝমকালো রঙিন দুনিয়া পেছনে ফেলে দেশের ক্রিকেট ফিরছে বনেদী ফরম্যাটে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মাঠে নামছে বাংলাদেশ দল। ২০১৮ সালের পর আবারও সিলেটের মাটিতে আয়োজিত হতে চলেছে টেস্ট ক্রিকেট। তবে সিলেটের ঘরের ছেলে এবাদত হোসেনকে থাকতে হচ্ছে মাঠের বাইরে।

বিশ্বকাপের আগ মুহূর্তে ইনজুরি আক্রান্ত হয়েছিলেন এবাদত হোসেন। পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ফিরে আসার আপ্রাণ চেষ্টা তিনি করেছেন। তবে তাকে যেতেই হয়েছে অস্ত্রপচার টেবিলে। তাইতো এখনও ম্যাচ খেলার মত ফিট তিনি হয়ে উঠতে পারেননি। ঠিক সেকারণেই সিলেটের মাঠে সাদা পোশাকে খেলতে নামতে না পারার আক্ষেপটা তাকে নিশ্চয়ই পীড়া দিচ্ছে।

২০১৮ সালে এই সিলেটের মাটিতে হওয়া একমাত্র টেস্ট ম্যাচটিতে বাংলাদেশ হেরেছিল ১৫১ রানের বিশাল ব্যবধানে। সেই দলে অবশ্য এবাদত ছিলেন না। বাংলাদেশ ক্রিকেটের এক দুঃখস্মৃতির সাক্ষী সিলেট হলেও তাকে হতে হয়নি।

আবার অন্যদিকে এবাদত অবশ্য বিশাল এক সুখস্মৃতির কারিগর। এই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা সর্বশেষ টেস্ট সিরিজে যে জয় রয়েছে বাংলাদেশের। তাও আবার স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের মাটিতে। সেই জয়ের অন্যতম নায়ক যে ছিলেন সিলেটের ‘স্পিডস্টার’।

মাউন্ট মঙ্গানু-তে হওয়া সিরিজের প্রথম টেস্টের দুই ইনিংস মিলিয়ে সাত উইকেট শিকার করেছিলেন এবাদত। তবে তার কার্য্যকর বোলিং স্পেল তিনি করেছিলেন দ্বিতীয় ইনিংসে। সেই ইনিংসে ৬ উইকেট নিজের করে নিয়েছিলেন ডান-হাতি এই পেসার।

নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং অর্ডারের শুরুর ছয় ব্যাটারের মধ্যে পাঁচজনই হয়েছিলেন এবাদতের শিকার। ডেভন কনওয়ে থেকে শুরু করে রস টেলর, উইল ইয়ং, হেনরি নিকলস ও টম ব্লান্ডেন সবাইকেই সাজঘরের পথ দেখিয়েছিলেন এবাদত হোসেন।

এরপর কাইল জেমিসনকেও নিজের শিকারে পরিণত করেন তিনি। এবাদতের সেই আগুন ঝড়া বোলিংয়ের সুবাদেই ১৬৯ রানেই গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। তাতে বাংলাদেশের জয়ের টার্গেট গিয়ে দাঁড়ায় মাত্র ৪০ রান। সেই রানটুকু অবশ্য বাংলাদেশি ব্যাটারদের করতে খুব একটা অসুবিধা হয়নি।

সেই সুখস্মৃতির সাথে আরও একটি স্মৃতি হয়ত এদফা যুক্ত করে নিতে পারতেন এবাদত। ঘরের মাঠে সবুজে ঘেরা স্টেডিয়ামে তিনি আবারও হতে পারতেন জয়ের নায়ক। তবে নিয়তি এদফা কোনভাবেই হচ্ছে না তার সহায়। মাঠের বাইরে থেকেই তাই সতীর্থদের উৎসাহ জুগিয়ে যেতে হবে এবাদতকে।

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের পেস বোলিংয়ের চিত্রে খানিকটা বদল এসেছিল। তার অন্যতম সেনানী ছিলেন এবাদত হোসেনও। এমনকি বিশ্বকাপে তিনি অনুপস্থিত থাকায় হতাশা ঝড়েছিল খোদ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের কণ্ঠেও। তিনি বাংলাদেশের বর্তমান সেটআপে বেশ গুরুত্বপূর্ণ এক সদস্য।

তাইতো তার অভাবটা প্রতিটা মুহূর্তেই প্রতিলক্ষিত হয়। স্কোয়াডে তার অনুপস্থিতি একটু হলেও চিন্তার সৃষ্টি করে। আর ঠিক সে কারণেই হয়ত এবাদত ফিরে আসার যথাযথ প্রচেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। তার দ্রুত ফেরা যে বিষাদগ্রস্ত দলটির জন্যে হতে পারে ‘টনিক’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link