প্রথমবারের মত বিশ্বকাপের সুযোগ। তাও বাছাই পর্বে যুদ্ধ করে নয়, বরং স্বাগতিক দল হিসেবে। কাতার দলটা তাই কেমন করবে – তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ ছিল। আর সেই সন্দেহকে সত্যি বলে প্রমাণ করল দক্ষিণ আমেরিকার দল ইকুয়েডর।
প্রথম ম্যাচেই কাতারকে বিশ্বকাপ চিনিয়ে ছাড়ল ইকুয়েডর। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ২-০ গোলে উড়ে গেল স্বাগতিক দল কাতার।
শেষ কয়েকটা প্রীতি ম্যাচে ৪-৪-২ ফর্মেশনেই দলকে খেলিয়েছিলেন স্প্যানিশ কোচ ফেলিক্স সানচেজ। তবে, বিশ্বকাপের শুরুতে ছিলেন রক্ষণাত্মক। প্রথম ম্যাচে ঘর সামলানোতেই বেশি জোর দেন। ৫-৩-২ ফর্মেশনে শুরু করেন তাঁরা।
তবে, শেষ রক্ষা হয়নি। ৪-৪-২ ফর্মেশনে নামা ইকুয়েডর প্রথম থেকেই চেপে ধরে তাঁদের। তিন মিনিটের মধ্যেই ম্যাচের এবারের বিশ্বকাপের প্রথম গোল করেছিলেন ইকুয়েডর অধিনায়ক এনার ভ্যালেন্সিয়া। তবে, গোলটা বাতিল হয় অফ সাইডের জন্য। ভিএআরে (ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি) অপেক্ষা বাড়ে তাঁদের।
যদিও, অপেক্ষার প্রহর খুব বেশি লম্বার ছিল না। ম্যাচের ১৫ মিনিটে পেনাল্ট পেল ইকুয়ের। ভ্যালেন্সিয়া কাতারের বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন। কিন্তু সেই সময়ে গোলরক্ষক তাঁকে অবৈধ ভাবে আটকান। পেনাল্টি পায় ইকুয়েডর। ভুল করেননি ভ্যালেন্সিয়া। বিশ্বকাপের পঞ্চমবারের মত জাল বল জড়িয়ে দেন তিনি।
ম্যাচের ৩১ মিনিটে ভ্যালেন্সিয়া ব্যবধান দ্বিগুন করেন। তিনি পেরেসিয়াদোর শটে বল হেড করে দলকে আরেক দফা এগিয়ে দেন।
প্রথমার্ধে এলোমেলো ফুটবল খেললেও দ্বিতীয়ার্ধে নিজেদের অনেকটাই গুছিয়ে নেয় কাতার। রক্ষণে সাথে সাথে কয়েকটা মোক্ষম আক্রমণও করে তাঁরা। কিন্তু, তাতে শেষ রক্ষা হয়নি। বিপরীত দিকে আক্রমণের ধার কমে আসে ইকুয়েডরেরও।
দ্বিতীয়ার্ধে তাই কোনো গোলের দেখা মিলেনি। কয়েকবার করে দু’দলই গোল করার সুযোগ পেলেও কেউ সফল হয়নি। বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবারের মত উদ্বোধনী ম্যাচে হারল স্বাগতিক দল।
উদ্বোধনী ম্যাচের আগে হয়ে যায় মনোমুগ্ধকর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অ্যালকোহল নিষেধাজ্ঞার মতো ইস্যুতে ইউরোপীয় দেশগুলোর সমালোচনার মুখে পড়েছিল কাতার। বয়কটের ডাকও ছিল। সেসবের মধ্যেই অবশেষে ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অব আর্থ’ মাঠে গড়াল।
পাশাপাশি স্বাগতিক দেশের বিরুদ্ধে ম্যাচ ফিক্সিংয়েরও অভিযোগ উঠছে। এসব বিতর্কের মধ্যেই বিশ্বকাপে দুর্দান্ত পারফর্ম করে ফুটবল বিশ্বে নিজের ছাপ রাখার সুযোগ ছিল কাতারের। সেটা অবশ্য তাঁরা পারেনি। তবে, বলা যায় না, গ্রুপ পর্বে তো আরও দু’টো খেলা বাকি।