আর্জেন্টিনা ৩৬ বছর ধরে বিশ্বকাপ জিতেনি, অ্যাস্টন ভিলা ৪১ বছর ধরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সুযোগ পায়নি – কারণ আর কিছুই না, সেসময় ফুটবল বিশ্বে এমিলিয়ানো মার্টিনেজের অস্তিত্ব ছিল না। এই দেখুন না, তিনি গোলবারের নিচে দাঁড়াতেই তো ভোজবাজির মত বদলে গেলো সব ইতিহাস। আর্জেন্টিনাও বিশ্বকাপ জিতলো, অ্যাস্টন ভিলা জায়গা পেলো ইউরোপীয় মঞ্চে।
এই গোলরক্ষক কেন এতটা ‘স্পেশাল’ উত্তরটা জানার জন্য খুব বেশি কষ্ট করতে হবে না। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে ম্যাচটা দেখলেই দিনের আলোর মত স্পষ্ট হয়ে যাবে সবকিছু, চীনের মহা প্রাচীর গলে হয়তো শত্রু সেনা ঢুকে পড়বে কিন্তু তাঁকে ফাঁকি দেয়া প্রায় অসম্ভব।
পাঁচ মিনিটের সময় মার্কাস রাশফোর্ডের শট থামানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয় এই আর্জেন্টাইনের ব্যস্ত সময়। স্বদেশী আলেহান্দ্রো গার্নাচোর প্রচেষ্টা যেভাবে রুখে দিয়েছেন তাতে মনে হবে তাঁর বুঝি চুম্বক আছে, পোস্টের কোনা ঘেঁষে মারা শটটা তিনি ঠেকিয়ে দিয়েছেন তো, আবার কর্নারও হতে দেননি।
যদিও মার্টিনেজ সবচেয়ে বড় পরীক্ষাটা দিয়েছেন বিরতি থেকে ফিরে, প্রায় বিশ গজ দূর থেকে রাশফোর্ডের গোলার বিপরীতে রক্ষা করেছেন দলকে। লাফিয়ে উঠতে এক মুহূর্ত এক সেদিক হলেই গোল হয়ে যেতে পারতো। ম্যাচের বাকিটা সময় এভাবেই নিজের জাল অক্ষত রেখেছেন তিনি – তাতেই ঘরের মাঠে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে রুখে দিতে সক্ষম হয়েছে অ্যাস্টন ভিলা।
দিন দুয়েক আগে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে ইংলিশ লায়ন্সরা তৈরি করেছিল ইতিহাস, সেদিনও একচ্ছত্র আধিপত্য দেখিয়েছেন বর্তমান গোল্ডেন গ্লাভসজয়ী। হ্যারি কেইন, জামাল মুসিয়ালা, মাইকেল অলিসের মত তারকা সমৃদ্ধ আক্রমণভাগ তাঁর সামনে হয়ে গিয়েছিল নিষ্ক্রিয়।
অ্যাস্টন ভিলা এখনো প্রিমিয়ার লিগ কিংবা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের দাবীদার হতে পারেনি। তবে এমি মার্টিনেজ যে জেদ আর দৃঢ়তা দেখাচ্ছেন তাতে মনে হচ্ছে শীঘ্রই দলটা পরাশক্তিতে রূপ নিবে, তিনি বাধ্য করবেন নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে। তবে দলের বাকিদের, বিশেষ করে ফরোয়ার্ড লাইনকে আরেকটু বোধহয় শক্তিশালী করতে হবে।