এন্ড্রিকের স্বপ্ন ছোঁয়ায় রেকর্ড গড়া

ব্রাজিলের জার্সি গায়ে প্রথম গোলের দেখা পেলেন। ইতিহাস তাকে আমন্ত্রণ জানালো নতুন এক অধ্যায় হওয়ার। 

সবাই তো স্বপ্ন দেখে। স্বপ্নকে বাস্তবে রুপান্তরিত ক’জনই বা করতে পারে। যারা পারে তাদের নাম লেখা হয়ে যায় ইতিহাসের পাতায়। তারা হয়ে যান অমর। যেমনটা এন্ড্রিক ফেলিপে হয়ে গেলেন। ব্রাজিলের জার্সি গায়ে প্রথম গোলের দেখা পেলেন। ইতিহাস তাকে আমন্ত্রণ জানালো নতুন এক অধ্যায় হওয়ার।

এক ঝঞ্ঝার পর ব্রাজিল দলের নতুন শুরু। ইংল্যান্ডের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের বিপক্ষে খেলতে নামে ব্রাজিল। সেই দাপুটে ব্রাজিলের আজকাল আর দেখা পাওয়া যায় না। ২০০২ বিশ্বকাপের পর থেকেই যেন কোথাও একটা মিলিয়ে গেছে সেই প্রতাপ।

তবে ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে নতুন দিনের বার্তা নিয়ে হাজির হয় ব্রাজিল। নামের দাপট নেই। পারফরমেন্স পেয়েছে প্রাধান্য। তাইতো কিশোর বয়সেই ব্রাজিলের জার্সি গায়ে মাঠ মাতানোর সুযোগ মিলে যায় এন্ড্রিকের। ম্যাচের ৭১ মিনিটে তখনও দুই দলের নেই কোন গোল। ব্রাজিলের রক্ষণের সামনে গিয়ে কুপোকাত হয়েছেন ফিল ফোডেন, জুড বেলিংহামরা।

অন্যদিকে, দুর্বল সব শটে গোল বঞ্চিত ছিলেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র, রাফিনহারা। তবে একটা জয় ব্রাজিলের জন্য ছিল বড্ড প্রয়োজন। সেই জয়ের দূত হয়েই হাজির হলেন এন্ড্রিক। ম্যাচের ৮০ তম মিনিটে গোল করে বনে যান সর্বকনিষ্ঠ গোলস্কোরার।

মাঠে নামার মাত্র নয় মিনিটের মাথায় জালের ঠিকানা খুঁজে নেন তিনি। এরপর বুনো উল্লাস, সৃষ্টিকর্তার কাছে চোখ জোড়া বন্ধ করে করা প্রার্থণাই বলে দেয়, এন্ড্রিক ঠিক কতটুকু অধীর আগ্রহে এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলেন। সেই দিনটি তার সামনে এসে ধরা দিলো বটে। এবং তাকে জায়গা করে দিল ব্রাজিলের ইতিহাসে। তাকে জায়গা করে দিল ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের ইতিহাসে।

মাত্র ১৭ বছর ২৪৬ দিন বয়সে গোল করেছেন তিনি। এর আগে ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে এত অল্প বয়সে গোল করবার রেকর্ড নেই আর কারোই। শুধু কি তাই? ব্রাজিলের জার্সিতেও কনিষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে গোল করেছেন সেই ১৯৯৪ সালের পর।

১৯৯৪ সালে ১৭ বছর ২২৩ দিন বয়সে গোল করেছিলেন রোনালদো, ‘দ্য ফেনোমেনন’। এরপর ব্রাজিলের জার্সিতে তরুণ খেলোয়াড়দের অভিষেক থেমে থাকেনি। তবে কেউ সেই গোলের দেখা পাননি। এন্ড্রিকের পরের স্থানে অবস্থান করছেন কৌতিনহো। তিনি ১৭ বছর ৩২৪ দিনে গিয়ে করেন গোল। তাও আবার সেই ১৯৬১ সালে।

এখনও অবধি ব্রাজিলের জার্সিতে সর্বকনিষ্ঠ গোলস্কোরার পেলে। সেই ১৯৫৭ সালে মাত্র ১৬ বছর ২৫৮ দিন বয়সে গোল করেছিলেন পেলে। সেই রেকর্ড এখন অবধি ভাঙতে পারেনি কেউ। তবে ব্রাজিল সর্বদাই ফুটবল প্রতিভায় বিমোহিত করেছে গোটা বিশ্বকে। কোন একদিন হয়ত পেলের রেকর্ডও ভেঙে চুড়ে হবে একাকার।

তবে তার আগে নিশ্চয়ই এন্ড্রিক নিজের এই শুরুটাকে নিয়ে যেতে চাইবেন অনন্য উচ্চতায়। আসছে জুনে তিনি যোগ দেবেন রিয়াল মাদ্রিদে। সেখানে ইতোমধ্যেই দাপট দেখাচ্ছেন স্বদেশী ভিনিসিয়াস ও রদ্রিগো। তাদের সাথে জোট বেঁধে তিনি হতে চাইবেন বিশ্বসেরাদের একজন।

সর্বোপরি ২০০২ সালের পর ব্রাজিলকে আরও একটি বিশ্ব সেরার শিরোপা এনে দিতে চাইবেন তিনি। সেটা তো ব্রাজিলের অলিতে-গলিতে ফুটবল পায়ে দৌড়ে বেড়ানো প্রতিটা ছেলের স্বপ্ন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...