প্রথম ইনিংস শেষে যে এক তরফা ম্যাচের আভাস ছিল – সেটা হল না। বরং পাকিস্তান নিজেদের উজাড় করে দিয়েই লড়াই করল। কিন্তু, তাতে শেষ রক্ষা হল না – তার সাথে যোগ হল শাহীন শাহ আফ্রিদির ইনজুরি। সব মিলিয়ে বরং ইংল্যান্ডের পাল্লাটাই ভারি হল। প্রথমে স্যাম কারেন আর আদিল রশিদের বোলিংয়ের পরে যুক্ত হল পরিস্থিতি বিবেচনায় বেন স্টোকসের দায়িত্বশীল ব্যাটিং। ১২ বছর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতল ইংল্যান্ড। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে এটা তাঁদের তৃতীয় বিশ্বকাপ শিরোপা।
ফাইনালে টসে জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার। দুই দলই আগের ম্যাচের একাদশ নিয়েই ফাইনালে মাঠে নামে। এদিন মেলবোর্নের প্রায় ৭০ হাজার দর্শকের সামনে শুরুটা দেখেশুনেই করেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার বাবর আজম এবং মোহাম্মদ রিজওয়ান। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে স্যাম কারেনের বলে ১৪ বলে ১৫ রানে আউট হওয়ার মাধ্যমে নিজের এক ব্যর্থ বিশ্বকাপ মিশন শেষ করেন রিজওয়ান।
এদিন ব্যর্থ ছিলেন পাকিস্তানের টপ অর্ডারের অন্য দুই ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ হারিস এবং ইফতিখার আহমেদ ও। মাঝে অধিনায়ক বাবর আজম এবং শান মাসুদ মিলে ইনিংস গড়ার চেষ্টা করলেও দ্রুতই বাবর আজম এবং ইফতিখার আহমেদ এর ফিরে যাওয়ায় আবারও ধাক্কা খায় পাকিস্তানের ইনিংস।
শেষ দিকে শান মাসুদ এবং শাদাব খান পরপর দুই ওভারে ফিরে গেলে বাকি ব্যাটসম্যানদের কেউই সেরকম কিছু করতে পারেন নি।শেষ পর্যন্ত নিজেদের ইনিংসের ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৭ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেন শান মাসুদ, অধিনায়ক বাবর আজম করেন ৩২ রান। ইংলিশদের পক্ষে ১২ রানে ৩ উইকেট দিয়ে ফাইনালের সেরা বোলার ছিলেন স্যাম কারান।
১৩৮ বা তার কম রানের টার্গেট বিশ্বকাপের ফাইনালে এর আগে শুধুমাত্র একবারই ডিফেন্ড করতে পেরেছিল আগে ব্যাট করা কোনো দল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম শ্রীলঙ্কা, ২০১২)। তবে, এক দশক আগের স্মৃতি এবার আর ফিরল না মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে।
রান ডিফেন্ডের জন্য পাকিস্তানের দরকার ছিল দ্রুত উইকেট তুলে নেয়া। জবাবে ইনিংসের প্রথম ওভারেই ইংল্যান্ডের সেমিফাইনালের নায়ক এলেক্স হেলস কে বোল্ড করে জাঁকজমকপূর্ণ ফাইনালের আভাস দেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। এরপর পাওয়ার প্লেতে আরও দুই উইকেট তুলে নিলে ম্যাচ জমিয়ে তোলে পাকিস্তান।
কিন্তু, বেন স্টোকস ২০১৬ সালের ফাইনালের ভিলেন হওয়ার পর থেকেই হয়ত এরকম মঞ্চ খুঁজছিলেন। সবকিছু যেন সাজানোই ছিল,শুধু অপেক্ষা ছিল তার জ্বলে ওঠার। স্টোকসও যেন সেই মোতাবেকই জ্বলে উঠলেন। পাকিস্তানকে পরবর্তীতে আর কোন সুযোগ না দিয়ে ৪৯ বলে ৫২ রানে হার না মানা অপরাজিত এক ইনিংস পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে দলকে চ্যাম্পিয়ন করেই মাঠ ছাড়েন বেঞ্জামিন এন্ড্রু স্টোকস।
নিজেদের ইনিংসে যথেষ্ট রান করতে না পারার পাশাপাশি, বোলিংয়ের শেষ দিকে শাহীন শাহ আফ্রিদির ইনজুরির ফলে দুই ওভার বল করতে না পারাটা হয়ত আফসোসই বাড়াবে পাকিস্তানের সমর্থকদের। পাকিস্তানের হয়ে হারিস রাউফ ২ উইকেট লাভ করেন।