‘গতিদানব’ ছিলেন সামিও!

ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বোচ্চ গতির বোলার হিসেবে রেকর্ড বইয়ে আছে পাকিস্তানি কিংবদন্তি তারকা শোয়েব আখতারের নাম।  ‘রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেস’ খ্যাত শোয়েবের গতির সামনে মুখ থুবড়ে পড়েছে বিশ্বের বাঘা বাঘা ব্যাটাররাও। ক্রিকেট বিশ্বে অনেক তারকা বোলার পরবর্তীতে গতির ঝলক দেখালেও শোয়েবের সেই রেকর্ড আর ভাঙতে পারেননি।

তবে পাকিস্তানের সাবেক পেসার মোহাম্মদ সামি দাবি করলেন শোয়েবের রেকর্ড ভেঙেছেন তিনি। শোয়েবের চেয়েও জোরে দুই ডেলিভারি করেন এই সামি। কিন্তু স্পিডমিটার নষ্ট থাকায় তাঁর সেই ডেলিভারিগুলো গণনা করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সামির এমন দাবিতে আলোচনা-সমালোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। অনেকের মতেই সামির এই দাবি ভিত্তিহীন।

পাকিস্তান টিভিতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সামি বলেছেন, ‘আমি এক ম্যাচে ১৬০ কি.মি/ঘন্টার চেয়েও বেশি গতিতে বল করেছি। এর মধ্যে একটি ১৬২ ও আরেক বল ১৬৪ গতির ছিল। এরপরে বলা হলো যে বোলিং মেশিন (স্পিড গান) কাজ করছে না। তাই বলগুলো ধরা হয়নি সর্বোচ্চ গতি হিসেবে। কিন্তু ওভার অল সব মিলিয়ে যদি বলেন যে ১৬০ এর বেশি গতিতে বল করেছে তাহলে দেখবেন এক বা দুই বলের বেশি হবে না।  এটা এমন না যে ধারাবাহিক কেউ করেছে। এটা মাঝেমধ্যে হয়ে যায়।’

২০০৩ বিশ্বকাপে ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুততম ডেলিভারির রেকর্ড গড়েন পাকিস্তানের তারকা শোয়েব আখতার। ১৬১.৩ কি.মি গতিতে বল করেছিলেন শোয়েব। তাঁর এই রেকর্ড আজ অবধি কেউই ভাঙতে পারেননি। তবে হুট করেই মোহাম্মদ সামির এই দাবি যেন জন্ম দিয়েছে সমালোচনার। ব্রেট, শন টেইটরা বেশ কাছাকাছি গেলেও শোয়েবের সেই রেকর্ড ভাঙতে পারেননি।

ক্লাব ক্রিকেটে থেকে উঠে এসে মাত্র ২০ বছর বয়সে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক। অভিষেকেই দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট সহ ম্যাচে ৮ উইকেট শিকার করেছিলেন তিনি। এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্ট খেলতে নেমেই গড়েন হ্যাটট্রিক।

এরপরই পালটে যায় সামির ক্যারিয়ার। অধারাবাহিকতার কারণে জায়গা হারান পেসার মোহাম্মদ আসিফের কাছে। সাদা পোশাকে বোলিং গড় গিয়ে ঠেকে ৫৩ তে! ৩৬ টেস্টে ৫৩ গড়ে ৮৫ উইকেট নেওয়ার পর আর সাদা পোশাকে ফিরতে পারেননি সামি।

ঘরোয়া ক্রিকেট, ফ্র‍্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে টুকটাক খেললেও নিজেকে আর মেলে ধরতে পারেননি তিনি। অধারাবাহিকতা আর লাইন-লেন্থে সমস্যা থাকায় ক্যারিয়ার লম্বা করতে পারেননি তিনি। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে পাকিস্তানের জার্সি গায়ে ২২৭ উইকেট শিকার করেছেন সামি।

অপরদিকে, ক্রিকেট বিশ্বে শোয়েব আখতার ব্যাটারদের জন্য যমদূত বলা চলে । শোয়েব আখতার মানেই ছিলেন গতি। গতি আর পেসের মিশেলে নিজের দিনে ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। এমন গতিবান দানব ক্রিকেট পাড়ায় আর আসেননি। অনেকে সম্ভাবনা দেখালেও ধারাবাহিকতা দেখাতে পারেননি। টেস্টে ১৭৮ ও ওয়ানডেতে শিকার করেছেন ২৪৭ উইকেট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link