বাংলা টাইগার্সের ক্যাম্পে থাকা যেই চার ক্রিকেটার। চারজনের কেউই অপরিচিত নন। চারজনই বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন। আর যেই নারী ক্রিকেটার তাঁদের সাথে ছবি তুলছেন তিনি খেলেন শেখ রাসেলের হয়ে। আর এই পাঁচজনের মধ্যে মিল আছে আরেকটি। পাঁচজনই পেস বোলিং করেন।
মিরপুরে দুদিন ধরেই চলছে বাংলা টাইগার্সের ক্যাম্পে। জাতীয় দলের আশেপাশে থাকা একঝাক ক্রিকেটারকে নিয়ে চলছে কার্যক্রম।
আর অন্যদিকে চলছে মেয়েদের ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগও। সেজন্যই একাডেমি মাঠে অনুশীলন করতে এসেছিল শেখ রাসেল নারী ক্রিকেট দল। আর সেই দলেরই সদস্য নিপা। নিপা ব্যাটিং করেন, পাশাপাশি পেস বোলিংটাও করেন।
আর মিরপুরে অনুশীলন করতে এসে দেখা হয়ে গেলে বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা চার পেসারের সাথে। তাই মুহূর্তটাকে ফ্রেম বন্দী করে নিতে ভুল করেননি এই নারী ক্রিকেটার।
ছবি তুলেছেন আবু হায়দার রনি, আবু জায়েদ রাহি, কামরুল ইসলাম রাব্বি ও আল আমিন হোসেনের সাথে। এই চার পেসারই আছেন বাংলা টাইগার্সের দলে। সম্প্রতি শুরু হওয়া এই ক্যাম্পে অনুশীলন করছেন এই পেসাররা।
যদিও এই চার পেসারকে আপনি আরেকভাবেও মিলাতে পারবেন। চারজনই একসময় বাংলাদেশের পেস আক্রমণে সম্ভাবনার আলো জ্বালিয়ে এসেছিলেন। তবে এখন তাঁরা প্রত্যেকেই নিজেদের হারিয়ে খুঁজছেন।
২০১৫ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হয়ে নিজের আগামনী বার্তা জানান দিয়েছিলেন আবু হায়দার রনি। তাঁর ইয়োর্কার আটকানোর যেন পথই খুঁজে পাচ্ছিলেন না লোকাল ব্যাটসম্যানরা। ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ পারফর্ম করে জাতীয় দলেও এসেছিলেন। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ক্যারিয়ারটা খুব বেশি লম্বা করতে পারেননি।
বাংলাদেশের হয়ে মাত্র ২ টি ওয়ানডে ও ১৩ টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। সাইফউদ্দিন, মুস্তাফিজ, তাসকিনদের ভীরে নিজের জায়গাটাই হারিয়ে ফেলেছিলেন এই পেসার। তবে এখনো ফিরে আসার লড়াইটা চালিয়ে যাচ্ছেন রনি। বাংলা টাইগার্সের ক্যাম্পে নিজেকে প্রস্তুত রাখছেন।
ওদিকে আবু জায়েদ রাহি টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের নিয়মিত পেসারই হয়ে উঠেছিলেন। তবে শরিফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, এবাদত হোসেন, খালেদ আহমেদদের উঠে আসায় নিজের জায়গাটা হারিয়ে ফেলেছেন রাহি। এখন টেস্ট দলেও আর সুযোগ হচ্ছেনা এই পেসারের। তবে তিনিও নিজেকে প্রস্তুত রাখছেন।
ওদিকে একটা সময় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে কার্য্যকর পেসার ছিলেন আল আমিন। এমনকি এখনো এই ফরম্যাটে তিনি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি পেসার। অথচ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ম্যাচের সংখ্যাটা খুব বেশি লম্বা হলো না তাঁর।
বলের সাথে নিজের জীবন যাপনের লাইন-লেন্থটাও হারিয়ে ফেলেছিলেন কখনো কখনো। সেটাই বুঝি যথেষ্ট ছিল আল আমিনের হারিয়ে যাওয়ার জন্য। তবে আবার নিজেকে খুঁজে পাওয়ার কঠিন সংগ্রামটা চালিয়ে যাচ্ছেন এই পেসার।
কামরুল ইসলাম রাব্বিও ছিলেন বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় এক পেসার। যদিও রঙিন পোশাকের ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে কখনো খেলা হয়নি তাঁর। তবে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে বিদেশের মাটিতে দারুণ কিছু পারফর্মেন্স ছিল রাব্বির। কিন্তু সেই ৭ টেস্টেই থেমে আছে রাব্বির ক্যারিয়ারও।
ফলে এই চার পেসারই ভিন্ন ভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের হয়ে পারফর্ম করেছেন। কখনো কখনো আলোও ছড়িয়েছেন। তবে এই চারজনই এখন একটা অথৈই সাগরে আছেন। তবুও লড়াই করে চলেছেন তীরে উঠে আসার। আর এই লড়াইয়ে তাঁদের পাশে আছে বাংলা টাইগার্স।