বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেলেন করিম বেনজেমা। ব্যালন ডি’অর বিজয়ী এই ফরাসির ছিটকে যাওয়ার কারণ বেরসিক ইনজুরি। ফ্রান্সের বিশ্বকাপ মিশনে লাগল বিরাট এক ধাক্কা।
শনিবার ট্রেনিংয়ে উরুতে যে ব্যাথা পেয়েছিলেন, তাতেই হল সর্বনাশ। খবর নিশ্চিত করেছে খোদ ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশন। এমআরআই পরীক্ষার ফলাফল বলছে, মাসল টিয়ার থেকে সেরে উঠতে তিন সপ্তাহ সময় লাগল রিয়াল মাদ্রিদের এই স্ট্রাইকারের।
৩৪ বছর বয়সী বেনজেমা গেল মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদের সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন। তিনি লা লিগায় ২৭ টি গোল ও উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১৫ টি গোল করেন। স্প্যানিশ জায়ান্টদের দু’টো বড় শিরোপা জয়ের মূল কাণ্ডারি ছিলেন তিনি। ফ্রান্সের হয়ে ৯৭ ম্যাচ খেলে গোল করেছেন ৩৭ টি। এখন তাঁর অনুপস্থিতি নিশ্চয়ই ভোগাবে দিদিয়ের দেশ্যমের দলকে। আর একটা ব্যাপার সত্যি যে, এই জীবনে হয়ত আর বিশ্বকাপই খেলা হবে না বেনজেমার।
১৯৮২ সাল থেকে শুরু করে গেল আসর অবধি প্রতিবারই ব্যালন ডি’অর পাওয়া ফুটবলররা খেলেছেন বিশ্বকাপ। এবারই শুধু হবে এর ব্যতিক্রম। কাগজে-কলমে এই গ্রহের সেরা ফুটবলারকে ছাড়াই মাঠে গড়াবে দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ।
আক্ষেপটা তাই করিম বেনজেমারই সবচেয়ে বেশি। এক ইন্সটাগ্রাম পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আমি এই জীবনে কখনও হাল ছাড়িনি। তবে, এখন আমাকে দলের কথা ভাবতেই হবে, যা আমি সব সময় করে থাকি। জায়গাটা আরেকজনকে ছেড়ে দিতেই হল, যে কি না দারুণ একটা বিশ্বকাপ যাত্রায় আমাদের সাহায্য করতে পারে। সবাইকে আমার পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।’
এরই মধ্যে বেনজেমার বিকল্প ঘোষণা করে দিয়েছেন দিদিয়ের দেশ্যম। দলে এসেছেন এইনট্র্যাক্ট ফ্রাঙ্কফুর্টের র্যান্ডাল কোলো মুয়ানি ও মোনাকো’র অ্যাক্সেল দিসাসি। এখন তাঁরা কি আদৌ বেনজেমার অভাব পূরণ করতে পারেন কি না – তা জানতে সময়ের অপেক্ষা করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
আর এরই মধ্য দিয়ে ফ্রান্স দলের ইনজুরির মিছিল আরও লম্বা হল। পল পগবা, এনগোলো কান্তে, ক্রিস্টোফোর এনকুনকু, প্রেসনেল কিমপেম্বের পর বেনজেমা। বিশ্বকাপ ট্রফি ধরে রাখার মিশনে একের পর এক ফুটবলার ছিটকে যাচ্ছে ফ্রান্সের। এর চেয়ে বড় অভিশাপ আর কিই বা হতে পারে!
কোচ দেশ্যম আক্ষেপ করছেন। তবে, এর মধ্যে ভাল করতে প্রত্যয়ী তিনি। বললেন, ‘করিম (বেনজেমা) এই বিশ্বকাপে বড় লক্ষ্য নিয়ে এসেছিল। তাই ওর জন্য আমি খুবই দু:খিত। তবে, গ্রুপ পর্বে সব কিছুর পরও আমরা পুরো আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠে নামব।’
জানিয়ে রাখা ভাল, এবারের বিশ্বকাপে ‘ডি’ গ্রুপে খেলবে ফ্রান্স। তাদের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া, ডেনমার্ক ও তিউনিশিয়া। ২২ নভেম্বর, মঙ্গলবার রাত একটায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষের ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে ফ্রান্সের বিশ্বকাপ মিশন।