ফুলটসে ছক্কা মারতে না পারা অন্যায়

একটা জুসি ফুলটস। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ শরীরের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়েই মারলেন যেন। তবুও সে বল পেরুলো না বাউন্ডারির সীমারেখা। লং অনে দাঁড়িয়ে থাকা এইডেন মার্করাম অনায়াসে ধরে ফেললেন ক্যাচ। ব্যাস, কেল্লাফতে! মাথায় হাত দিয়ে বিস্ময় ভরা নয়নে তাকিয়ে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

এই যে ছক্কাটা শেষ অবধি হল না, তাতে কি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের কোন দায় নেই? নিশ্চয়ই রয়েছে। তিনি একজন অভিজ্ঞ ব্যাটার। দীর্ঘকাল ধরে এমন চাপের মুহূর্তে তিনি খেলেছেন বাংলাদেশের জার্সি গায়ে। শেষ ওভারে জয়ের জন্যে প্রয়োজন ১১ রান। শেষ দুই বলে ছয়। তার থেকেও বড় বিষয় বোলিং প্রান্তে একজন স্পিনার।

কেশভ মহারাজ এর আগে কখনোই ইনিংসের শেষ ওভার করেননি। তিনি নিশ্চিতরুপেই ছিলেন ভীষণ চাপে। সেই চাপ থেকেই তো ভুল করেছেন। ইয়োর্কার করতে চেয়েছিলেন বোধহয়। সেই বলটা ইয়োর্কার তো দূরে থাক, একেবারে সাদাসিধে এক ফুলটস বলে পরিণত হয়েছে। অফ স্ট্যাম্পের বাইরের দিকের সেই বলটা রিয়াদের উচিত ছিল বাউন্ডারির ওপারে নিয়ে ফেলা।

কিন্তু তিনি পারেননি। এরপরের বলেও তিনি ফুলটস দিয়েছে। সেটা আরও খানিকটা উপড়ের দিকেই ভাসমান। সেই বলটিকেও তাসকিন আহমেদ সীমানা ছাড়া করতে পারেননি।  তিনিও সজোরে ব্যাট চালিয়েছিলেন বটে। কিন্তু পারেননি।

তাসকিনকে হয়ত ক্ষমা করে দেওয়া যায়। কেননা তিনি তো বোলার। তাছাড়া ওমন পরিস্থিতিতে তিনি ছক্কা সচারচর মারবেন না বা মারতে পারবেন না। কিন্তু মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মত একজন ব্যাটারের এমন ফুলটস বলে ছক্কা হাঁকাতে না পারা অন্যায়।

সেখানেই চলে আসে স্কিলের প্রশ্ন। আদোতে এমন জুসি ফুলটস বলগুলোতে ছক্কা হাঁকাতে প্রচুর পেশিশক্তির প্রয়োজন পড়ে না। ঠিকঠাক টাইমিংয়ে সাথে একটু বাড়তি গায়ের জোরেই তা গ্যালারিতে আছড়ে পড়তে পারে। এমনও নয় যে বোলার তাতে গতি দেননি। তিনি ইয়োর্কার করতে চেয়েছিলেন, স্বাভাবিকভাবেই তাই গতি ছিল বলে।

আগের দিন এই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদই ম্যাচ জিতিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। তবে এদিন সুযোগ পেয়েও তিনি তা কাজে লাগাতে পারেননি। প্রশংসা তিনি সেদিন কুড়িয়েছেন বিশ্বের। এদিনের এমন সহজ সুযোগ কাজে না লাগাতে পারার ব্যর্থতার দায় তিনি নিশ্চয়ই এড়িয়ে যেতে পারেননি।

ঠিক তেমননি জাকের আলি অনিকও দায় এড়াতে পারেননা। তিনিও এক লো ফুলটস পেয়েছিলেন। সেই বল থেকে কোন প্রকার বাউন্ডারি আদায় করতে পারেননি। উলটো পরের বলে আউট হয়ে চাপ বাড়িয়েছেন বাকিদের উপর। শেষের ওভারে স্পিনারের বিপক্ষে তিন-তিনটি ফুলটস বলে বাউন্ডারি মারতে না পারাকে অন্যায় না বলে উপায় নেই। দিনশেষে তাই বিতর্ক ধোপে টেকে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link