যদি প্রশ্ন করা হয়, একজন ভালো অধিনায়কের কি গুণ থাকা অবশ্যম্ভাবী? এই প্রশ্নের উত্তরে বলা উচিৎ – ব্যক্তিগত অর্জনের ঊর্ধ্বে দলকে রাখার গুণটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
একজন অধিনায়ক কখনো দলের আগে নিজের কথা ভাবতে পারবেন না। ক্রিকেটে একজন যোগ্য অধিনায়ক দলকে অনেক দূর নিয়ে যেতে পারেন, আবার একজন স্বার্থপর অধিনায়ক দলের ভরাডুবির কারণ হতে পারেন।
বাবর আজম এক্ষেত্রে উদাহরন হতে পারেন। পাকিস্তান দলটির এবারের বিশ্বকাপে ভরাডুবির জন্য প্রশ্ন উঠেছে দলটির অধিনায়ক বাবর আজমের নেতৃত্বগুণ নিয়েও। অবশ্য বাবর আজমের স্বার্থপর আচরণ নিয়ে সমালোচনা আগেও ছিল। এবার পাকিস্তানি অধিনায়ক বাবর আজমের সমালোচনা করলেন সাবেক ভারতীয় ব্যাটার গৌতম গম্ভীরও। গম্ভীর বলেই দিয়েছেন যে বাবর আজম একজন স্বার্থপর অধিনায়ক।
বাবার আজম প্রসঙ্গে সাবেক ভারতীয় এই ক্রিকেটার বলেন, ‘আমার মতে, প্রথমে আপনি নিজের পরিবর্তে আপনার দলের কথা ভাবুন। আপনার পরিকল্পনা অনুযায়ী ফল না পেলে, আপনার ব্যাটিং অর্ডারে ফখর জামানকে পাঠানো উচিত ছিল। এটাকে স্বার্থপরতা বলে। একজন অধিনায়ক হিসাবে, স্বার্থপর হওয়া সহজ। বাবর এবং রিজওয়ানের পক্ষে পাকিস্তানের হয়ে ইনিংস ওপেন করা এবং এত রেকর্ড তৈরি করা সহজ। আপনি যদি নেতা হতে চান তবে আপনাকে নিজের আগে আপনার দল নিয়ে ভাবতে হবে।’
এর আগেও ওয়াসিম আকরাম, শোয়েব আখতার এবং মোহাম্মদ হাফিজের মতো অনেক সাবেক খেলোয়াড় বাবর আজমের খারাপ অধিনায়কত্বের সমালোচনা করেছেন। পাশাপাশি বাবরকে মিডল অর্ডারে খেলার পরামর্শও দিয়েছিলেন অনেকে। ২০২২ সালের এশিয়া কাপে সংযুক্ত আরব আমিরাতে চোট পাওয়ার পর, পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শেষে বাঁ–হাতি ব্যাটার ফখর জামান দলে ফিরেছেন।
যেহেতু বাবর আজম এই পুরো বিশ্বকাপের মঞ্চেই ওপেনার হিসেবে রান খরায় ভুগছেন। ভারত, জিম্বাবুয়ে এবং নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে তাঁর ব্যাট হতে এসেছে ৪,৪ ও ০ রান। তাই নিজে যেহেতু রান পাচ্ছিলেন না সেই জায়গায় অন্য কাউকে বিশেষ করে ফখর জামানকে খেলানোর পরামর্শ দিয়েছেন ক্রিকেট বোদ্ধারা। কিন্তু বাবর নিজের ওপেনিং পজিশন ছাড়তে সম্মত হননি।
প্রথমত ক্রিকেটে অধিনায়কের দায়িত্বের সবচেয়ে কঠিন সংকট হলো দলীয় প্রয়োজনকে, ব্যক্তিগত পারফর্মেন্স এর আগে জায়গা দীতে হয়। নিজের আগে দলের কথা ভাবতে হয়। তবে কেউ যখন অধিনায়কত্বের এই গুরুদায়িত্ব কাঁধে নেন, অবশ্যই তাঁকে সব জেনেশুনেই নিতে হয়। বাবর আজমও নিশ্চয়ই সব জেনে-বুঝে দায়িত্ব নিয়েছেন। কিন্তু আদৌও তাঁর আচরণে একজন যোগ্য অধিনায়কের গুণাবলি আছে কিনা সেটা প্রশ্নসাপেক্ষ।