ক্রিকেটের সর্বপ্রথম সংস্করণ টেস্ট ক্রিকেট। এখনও টেস্ট ক্রিকেটকেই বলায় হয় ক্রিকেটের আসল পরীক্ষা ক্ষেত্র। পরে একসময় যুক্ত হয়েছে ওয়ানডে ক্রিকেট। এই ফরম্যাট ক্রিকেটকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছিল। তবে এই মুহুর্তে ক্রিকেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফরম্যাট টি-টোয়েন্টি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের বিশ্বায়নেও বড় ভূমিকা রেখেছে। তবে এখনো ক্রিকেট বোদ্ধারা বলেন একজন ক্রিকেটারকে চেনা যায় টেস্ট ক্রিকেট থেকেই।
ক্রিকেটের সেই কঠিন পরীক্ষার মাস্টার যেই কিংবদন্তিরা এমনকি ওয়ানডে ক্রিকেটেও তাঁরা সেরাদের সেরা। তবে হালের টি-টোয়েন্টি খেলেছেন মাত্র একটি। তাঁদের সময় টি-টোয়েন্টি থাকলে হয়তো এই ফরম্যাটেরও কিংবদন্তি হতেন তাঁরা। যদিও, দুর্ভাগ্যজনকভাবে অনেকেরই টি-টোয়েন্টি অধ্যায় লম্বা হয়নি। কেউ কেউ একটি টি-টোয়েন্টি খেলেই থেমে গেছেন। মাত্র একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা সেই কিংবদন্তিদের নিয়ে আজকের আয়োজন।
- শচীন টেন্ডুলকার (ভারত)
শচীন টেন্ডুলকার বিশ্বের একমাত্র ক্রিকেটার যিনি ২০০ টি টেস্ট খেলেছেন। প্রায় দুই যুগের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ফুটিয়েছেন রানের ফুল ঝুড়ি। টেস্ট ক্রিকেটে ১৫৯২১ ও ওয়ানডে ক্রিকেটে ১৮৪২৬ রানের মালিক এই ব্যাটিং গ্রেট।
তবে ভারতের হয়ে মাত্র একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচই খেলেছেন এই ব্যাটসম্যান। সেই ম্যাচে ৮৩.৩৩ স্ট্রাইক রেটে ১০ রান করেছিলেন শচীন টেন্ডুলকার। সেটিই তাঁর প্রথম ও শেষ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।
- ইনজামাম উল হক (পাকিস্তান)
পাকিস্তানের সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন ইনজামাম উল হক। দেশটির সাবেক এই অধিনায়ক টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজেকে নিয়ে গিয়েছেন সেরাদের কাতারে। মিডল অর্ডারের এই ব্যাটসম্যান ওয়ানডে ক্রিকেটে ১১৭৩৯ রানের মালিক।
টেস্ট ক্রিকেটেও তাঁর ঝুলিতে আছে ৮৮৩০ রান। তবে তিনিও টি-টোয়েন্টি খেলছেন মাত্র একটি। সেখানে তিনি ১১ রান করে অপরাজিত ছিলেন। সেটি ছিল পাকিস্তানের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ।
- জেসন গিলেস্পি (অস্ট্রেলিয়া)
অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি বোলার জেসন গিলেস্পিও আছেন এই তালিকায়। দেশটির হয়ে ৭১ টি টেস্ট ও ৯৭ টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন তিনি। টেস্ট ক্রিকেটে ২৫৯ উইকেটের মালিক তিনি। টেস্টে একটি ডাবল সেঞ্চুরিও আছে তাঁর। ওয়ানডে ক্রিকেটেও তাঁর ঝুলিতে আছে ১৪২ উইকেট।
ডানহাতি এই পেস বোলার তাঁর প্রথম ও একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি খেলেছিলেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ২০০৫ সালে সেই ম্যাচে অলরাউন্ড পারফর্ম করেছিলেন তিনি। ১৮ বলে খেলেছিলেন ২৪ রানের এক ইনিংস। এছাড়া বল হাতেও এক উইকেট নিয়েছিলেন এই বোলার। তবে এরপর আর কখনো টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেননি এই বোলার।
- রাহুল দ্রাবিড় (ভারত)
ভারতের টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় আবিষ্কার রাহুল দ্রাবিড়। তাঁর নিখুঁত টেকনিকের কারণে পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন ‘দ্য ওয়াল’ নামে। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেটে ভারতের অধিনায়কত্বও করেছেন। টেস্ট ক্রিকেটের এই কিংবদন্তি তাঁর প্রথম টি-টোয়েন্টিও ম্যাচেও জয় করেছিলেন দর্শকের হৃদয়।
ব্যাট হাতে প্রায় ১৫০ স্ট্রাইক রেটে খেলেছিলেন ৩২ রানের এক ইনিংস। তবে সেটিই তাঁর একমাত্র টি-টোয়েন্টি হয়ে রয়ে যায়। যদিও, তিনি লম্বা সময় খেলেছেন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল)।
- শাহরিয়ার নাফিস (বাংলাদেশ)
শাহরিয়ার নাফিসকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের বড় আক্ষেপ বলা হয়। ২৪ টেস্টে ১২৬৭ ও ৭৫ টি ওয়ানডেতে ২২০১ রান করলেও বলা হয় তাঁর ক্যারিয়ার আরও বড় হতে পারতো। বাংলাদেশের হয়ে একটি মাত্র টি-টোয়েন্টিই খেলেন তিনি।
সেটা কেবল তারই নয়, বাংলাদেশ দলেরও প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ ছিল। শুধু তাই নয়, ম্যাচটাতে অধিনায়কও ছিলেন শাহরিয়ার নাফিস। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খুলনায় ১৭ বলে করেন ২৫ রান। এরপর তিনি নিষিদ্ধ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগে (আইসিএল) খেলতে যান। সেখানকার নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরলেও টি-টোয়েন্টিতে আর ফেরা হয়নি।