তিন বলে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল বারো রান – কঠিন সেই সমীকরণ মিলিয়ে ম্যাচ ড্র করে ফেলেছিলেন অ্যারন জোন্সরা; বোলিং প্রান্তে থাকা হারিস রউফ ততক্ষণে খলনায়ক হয়ে গিয়েছিলেন। লম্বা সময় ধরে ছন্দহীন থাকার পর এই ম্যাচ দিয়ে ফর্মের তলানিতে পৌঁছেছিলেন তিনি। দেয়ালে পিঠ ঠেকলেই নাকি মানুষ ঘুরে দাঁড়ানোর পথ খুঁজে পায়; তাঁর সঙ্গেও সেটাই হয়েছে, ভারতের বিপক্ষে প্রত্যাবর্তনের দুর্দান্ত গল্প লিখেছেন।
ভারত ম্যাচের আগে চলতি বছর সাতটি টি-টোয়েন্টি খেলে তেরো উইকেট পেয়েছেন এই পেসার, কিন্তু ওভার প্রতি দশের বেশি রান খরচ করেছেন। তাই তো একাদশে তাঁর জায়গা পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল; যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ম্যাচের পর বাদ পড়লেও পড়তে পারতেন তিনি। তবে টিম ম্যানেজম্যান্ট তাঁকে পরিকল্পনায় রেখেছিল।
তাতেই বাজিমাত করেছেন এই ডান-হাতি, তিন ওভার হাত ঘুরিয়ে তুলে নিয়েছেন ভারতের তিন উইকেট, বিনিময়ে খরচ করেছেন মাত্র ২১ রান। ঋষাভ পান্তের দারুণ ব্যাটিং সত্ত্বেও টিম ইন্ডিয়া কেবল ১১৯ রানে অলআউট হয়েছে সেটার সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব তাঁরই।
অথচ প্রথম ওভারে টানা তিন চার হজম করে আরও একটা বাজে দিনের ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন হারিস। কিন্তু দ্বিতীয় ওভার থেকেই দৃশ্যপট বদলে যায়, এক্সপ্রেস গতির ডেলিভারিতে সুরিয়াকুমারকে তিনি বাধ্য করেন মিড অফে ক্যাচ দিতে। তাঁর সেই ওভার থেকে স্রেফ এক রান এসেছিল।
নিজের তৃতীয় ওভারে আরও বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন এই বোলার, ভারতের শেষ ভরসা হার্দিক পান্ডিয়াকে সাজঘরের পথ দেখান চতুর্থ বলে। পরের বলেই আবার জাসপ্রিত বুমরাহকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন। হ্যাটট্রিক অবশ্য করতে পারেননি, তবে প্রতিপক্ষের লড়াকু পুঁজির স্বপ্ন ঠিকই ভেঙে দিয়েছেন তিনি।
গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বিরাট কোহলির কাছে দুই ছয় হজম করে ম্যাচ হারের কারণ হয়েছিলেন পাক তারকা। ঠিক পরের বিশ্বকাপে তিনিই হয়ে গেলেন ম্যাচের অন্যতম সেরা পারফর্মার। এজন্যই বোধহয় ক্রিকেটের সাথে জীবনের বড্ড মিল। এখানে পতন আছে, আছে উত্থানও।