ইয়র্কারের বন্যায় হাসবেন হাসান

একেবারে ইয়র্কার স্লটে বল। মুশফিকের ব্যাটের খোঁচা বলের গতিপথ থার্ড ম্যানের দিকে। এর আগের বলটাও ছিল একই লাইন আর লেন্থের। তবে সেটা মুশফিকের প্যাডে হানা দিয়েছিল। আবার তৃতীয় ইয়োর্কার বলে মুশফিকের নিয়ন্ত্রিত খোঁচা।

পরপর তিনটি বল। একই লাইন আর লেন্থের বল। টানা ইয়র্কার ছুঁড়ে যাওয়ার অনুশীলন হাসান মাহমুদের। সেই অনুশীলনে আবার যুক্ত হন মুশফিকুর রহিম।

বাংলাদেশ জাতীয় দলের ডেথ বোলিংয়ে আস্থার নাম হাসান মাহমুদ। পেস বোলিং আক্রমণ যে সুদিন পার করছে তার অন্যতম সেনানী তিনি। দল যখন শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে বুদ, তখন নিশ্চয়ই তার উপর বাড়তি দায়িত্ব চলে আসে।

সেই দায়িত্ববোধ থেকেই হাসান মশগুল নিজের ধারাবাহিকতা নিয়ে। সাদা বলে, শেষের ওভারগুলোতে ব্যাটাররা হাত খুলে খেলেন। তখন উইকেটের চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে রানের জন্য ছোটেন ব্যাটাররা। তাদেরকে যেন দমিয়ে রাখা দায়।

ব্যাটারদের লাগাম টেনে ধরার অন্যতম অস্ত্র পিন পয়েন্ট ইয়োর্কার। হাসান নিজের সেই ইয়োর্কারই শাণিত করার মিশনে নেমেছেন। সবাই যখন নেটে ব্যাটারদের বিপক্ষে বোলিং অনুশীলনে ব্যস্ত, ঠিক তখন হাসান একটু আলাদা। একাকী তিনি ক্রমাগত ইয়র্কার ছোড়ার অনুশীলন করেছেন।

প্রথমে অর্ধেক কাটার এক টায়ার দিয়ে শুরু করেন তিনি। সেই টায়ারের মাঝ দিয়ে বল ছুঁড়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা চালান। কখনো তা হয়েছে একেবারে মনমত। কখনোও আবার লাইন আর লেন্থে হয়েছে গড়মিল। তবে অধিকাংশ বলই হয়েছে তাঁর টপনচ।

হাসানের এই ইয়োর্কার অনুশীলনের মাঝে মুশফিক এসে খানিকক্ষণ হানা দেন। মুশফিক ইয়র্কার বল খেলার অনুশীলন করতেই সঙ্গী হয়েছিলেন হাসানের। প্রথম বলটা খোঁচা দিয়ে বিহাইন্ড দ্য উইকেটে পাঠাতে চেষ্টা করলেন। কিন্তু টাইমিংটা হয়নি ঠিকঠাক।

গতির কাছেই যেন পরাস্ত তিনি। তবুও বেশ কয়েকটি ইয়র্কার বল খেললেন তিনি। যেন নিজের নতুন ব্যাটিং রোলের জন্য পূর্ণ প্রস্তুতিই নিচ্ছেন মুশফিকুর রহিম। কেননা এখন যে তাকে ব্যাট করতে হয় ছয় নম্বরে।

সেই ব্যাটিং পজিশনের চাহিদাই থাকে দ্রুত রান তোলা। আর স্লগ ওভারে প্রতিপক্ষ বোলাররাও ওয়াইড ইয়োর্কার ও ইয়োর্কারের পসরা সাজিয়ে বসে। সেই সময়ে যেন অন্তত রানের চাকা সচল রাখতে পারেন মুশি, ঠিক সে কারণেই ইনজুরি শঙ্কাকে দূরে ঠেলে ইয়র্কার বল খেলেছেন তিনি।

তাতে অবশ্য হাসানের হয়েছে লাভ। তিনি অন্তত বুঝতে পারলেন লাইন আর লেন্থ ছাড়াও ব্যাটারকে পরাস্ত করতে প্রয়োজন গতি। গতির তারতম্যই ভরকে দিতে পারে ব্যাটারকে। আর তাতে উইকেট যেমন জমা পড়বে হাসানের পকেটে, তেমনি রানের চাকায় জোরেশোরে ব্রেক কষা যাবে।

এখন মাঠের লড়াইয়ে হাসানের এমন ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকাই মূল চ্যালেঞ্জ। তেমনটা হলে অন্তত বাংলাদেশেরই ফায়দা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link