বাংলাদেশ ক্রিকেটে সৌম্য সরকারের উত্থানটা হয়েছিল চান্দিকা হাতুরুসিংহের হাত ধরে। এমনকি ফর্মহীনতার পরও লঙ্কান এ কোচের ছায়াতলে নিয়মিত সুযোগ পেয়ে গিয়েছেন বাঁহাতি এ ব্যাটার। দ্বিতীয় মেয়াদে আবারো যখন বাংলাদেশের দায়িত্ব নিলেন হাতুরু, তখনই ধারণা করা হচ্ছিল, হাতুরুর চাওয়ার আবারো জাতীয় দলে ফিরতে পারেন সৌম্য।
হয়েছেও সেটিই। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অ্যাওয়ে সিরিজেও নতুন করে ডাক পেয়েছেন তিনি। শুধু স্কোয়াডেই ফেরেননি, সরাসরি জায়গা করে নিয়েছিলেন একাদশেও। তবে ব্যাট হাতে শূন্য রান, ফিল্ডিংয়ে ক্যাচ মিস আর বল হাতে খরুচে বোলিং করে রীতিমত সবাইকে হতাশায় ডুবিয়েছেন তিনি।
সীমিত ওভারে দুই সংস্করণ মিলিয়ে সর্বশেষ ৫ ম্যাচের ৪ ইনিংসে ৩ বারই সৌম্য আউট হয়েছেন শূন্য রানে। তারপরও কেন সৌম্যকেই সুযোগ দেওয়া হয়? মূলত সাকিবের অনুপস্থিতির কারণেই সৌম্যকে দলভূক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাতুরুসিংহে।
এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথার বলার সময় সৌম্য প্রসঙ্গে হাতুরুসিংহে বলেন, ‘আমরা এমন একজন চেয়েছিলাম, যে বোলিং ও ব্যাটিং করতে পারে। এখানে সাকিব আল হাসান নেই, বাংলাদেশ দল গত ১৭ বা ১৫ বছর ধরে সাকিবকে নিয়ে খেলে অভ্যস্ত। তাঁকে ছাড়া দলের ভারসাম্য ঠিক রাখা কঠিন। এই জন্য সৌম্য অলরাউন্ডার হিসেবে আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’
অবশ্য সৌম্য যে সাকিবের অভাব পূরণ করতে পারবে না, সেটা যে আশা করাও বোকামি তা জানিয়ে হাতুরু বলেন, ‘সাকিব যা পারে সে তা করবে, এমন আশা করি না। আমরা আশা করছি, সে বোলিং ও ব্যাটিং করতে পারবে। অলরাউন্ডার হিসেবে দুই বিভাগে অবদান রাখবে।’
তবে সৌম্যর সমস্যা কোথায়, সেটিই ধরতে পারছেন না লঙ্কান কোচ। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘গত পাঁচ ম্যাচে ৩ টা ডাক। আমি জানি না, কেন এমন হচ্ছে। আমি তাঁকে এবার কেবল এক ম্যাচ দেখলাম। আমি জানি না, তাঁর কী সমস্যা। সে তো ঘরোয়া ক্রিকেটে রান করছিল।’
অবশ্য সৌম্য ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল করে জাতীয় দলে ঢুকেছে, এমন একটা ব্যাখ্যা ছড়িয়ে পড়লেও তাতে শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে অনেকটা। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সর্বশেষ মৌসুমে তাঁর ব্যাটিং গড় ছিল মোটে ২৬.৬৩। সর্বশেষ বিপিএলে গড় ছিল ১৪.৫০। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে চলমান বিসিএলের প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে দুই ইনিংস মিলিয়ে করেছিলেন ৪০ রান।
তবে জাতীয় লিগে কিছুটা রান পেয়েছিলেন। ১১ ইনিংসে ৪টি অর্ধশতকসহ ৪৮.৮৮ গড়ে করেছিলেন ৪৩৬ রান। তবে, যে সাদা বলের ক্রিকেটে তাঁকে ফেরানো হয়েছে, সেই সাদা বলেই গত কয়েক বছর ধরে রানখরায় ভুগছেন তিনি। রান করেছেন লাল বলের ক্রিকেটে, কিন্তু সুযোগ পেয়েছেন সীমিত ওভারের ক্রিকেটে। মূল ফাঁকিটা মূলত এখানেই।