রাজধানী ঢাকায় এমন গরম ভাদ্রমাসে আসে। তীব্র তাপদাহে পি সারা ওভালের সামনে এক অটো চালক পাওয়া গেল। বাংলাদেশ থেকে এসেছি শুনেই বললেন, ‘কি খবর!’ আরও জানা গেল, বাংলাদেশে তাঁর কিছু বন্ধুবান্ধবও নাকি আছে।
যদিও, বড় ব্যাপার হল তিনি নাকি এক সময় ক্রিকেটও খেলতেন। আরও অবাক করা বিষয় হল তিনি ছিলেন খোদ চান্দিকা হাতুরুসিংহের সহপাঠী।
হাতুরু-কে বাংলাদেশের কে না চেনে, বাংলাদেশের সাবেক কোচ। দুই মেয়াদে কাজ করে গেছেন এই লঙ্কান। যদিও কোনোবারই শেষটা ভাল ছিল না তাঁর।
এবার তাঁর শৈশবের হারিয়ে যাওয়া বন্ধুকে খুঁজে পাওয়া গেল কলম্বোর রাস্তায়। হাতুরুসিংহে বিশ্বজুড়ে কোচিং করিয়ে বেড়ালেও বন্ধু এখন অটো চালান। ক্লাস এইট গ্রেড অবধি পড়াশোনা করেছেন, ইংরেজিটা খুব একটা মন্দ জানেন না। কাজ চলে যায়।
তাঁর বাহনে ওঠার পরই তাঁর আলাপের জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। চলতে চলতেই হঠাৎ করে বললেন, ‘তোমরা উপুলকে চেনো তো?’ উপুল কে? উপুল চন্দনা? ‘আরে না! তোমাদের তো চেনার কথা, বাংলাদেশের কোচ ছিল। স্কুলে নাম ছিল উপুল চান্দিকা হাতুরুসিংহে।’
আকাশ থেকে পড়লাম। এতো টেকো মাথার সেই মাস্টারমাইন্ড। যিনি বাংলাদেশের হয়ে অনেক অর্জন করেছেন, আবার হারিয়েছেনও অনেক। নিজের সম্মান খুঁইয়ে বিদায় নিয়েছেন। এখন পরিবার নিয়ে অস্ট্রেলিয়াতেই থাকেন আগের মত।
হাতুরুসিংহের এই বন্ধুটির নাম হল হিরিপিটিয়া। হাতুরুসিংহের সাথে একই স্কুল দলে খেলতেন। দলের অধিনায়কের নামও মনে করতে পারলেন, তিনি হলেন ডেভ। এই নামের কোনো ক্রিকেটারের খোঁজ অবশ্য ইন্টারনেট ঘেটে পাওয়া গেল না। হাতুরুসিংহের কথা মনে করে বললেন, ‘হি ওয়াজ আ নাইস প্লেয়ার!’
এক সময় কাতার এয়ারওয়েজে কাজ করেছেন। সেখানে অনেক বাংলাদেশি বন্ধুও জুটিয়ে ফেলেছেন, সাইফুল বা ইদ্রিস – এমন কয়েকজনের নাম বললেন।
বাংলাদেশ ক্রিকেটও খুব ফলো করেন। তিনি নাকি আবার মুশফিকুর রহিমের ভক্ত। অঙ্গ ভঙ্গি করে বোঝাতে চাইলেন, ‘ওই যে তোমাদের ছোট-মত একজন উইকেট রক্ষক আছে না – ওকে আমার দারুণ লাগে।’
আরও বললেন সাকিব আল হাসানের কথা। সাথে টিপ্পনি কেটে বললেন, ‘রাগী হলেও ছেলেটা দারুণ অলরাউন্ডার।’ প্রশ্নও করলেন, ‘সাকিব এখন আর ক্রিকেট খেলে না কেন?’
দেখতে দেখতে পথটা শেষ হয়ে গেল। কিন্তু, তাঁর গল্প থামে না। পি সারা ওভাল ছেড়ে চলে আসতে হল সিংহলিজ ক্রিকেট গ্রাউন্ডে। পিছনে ফেলে আসতে হল হিরিপিটিয়াকে।