‘২০-৩০ মিনিট দৌঁড়ালেই আমার বুক কাঁপতো’

মহামারি করোনা ভাইরাস ইতোমধ্যে পৃথিবীর প্রায় বিশ লক্ষ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। থমকে দিয়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবন ব্যবস্থা। ক্রিকেট দুনিয়াতেও এর প্রভাব বিস্তর।

বিশ্বের নানা ক্রিকেটারই আক্রান্ত হচ্ছেন কোভিড ১৯-এ। এই তালিকায় আছেন দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান হেনরিখ ক্ল্যাসেন। তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন গত বছরের ডিসেম্বরে। দুই মাসেরও বেশি সময় পেড়িয়ে গেলেও এখনো বেশ ভালোই ভুগছেন তিনি।

অনেকেরই ধারণা এই ভাইরাসটি শুধু শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদেরই জেঁকে ধরেছে। তাঁদের জন্য বিরাট সতর্কবার্তা হতে পারেন ক্ল্যাসেন। ২৯ বছর বয়সী ফিট এই ক্রিকেটারের সেড়ে উঠতে পোহাতে হচ্ছে বেশ ঝক্কি-ঝামেলা।

পাকিস্তানের লাহোরে বসে সংবাদ সম্মেলনে ক্ল্যাসেন বলেছেন তাঁর আদ্যোপান্ত। তিনি বলেন, ‘আমার জন্য দুটি মাস ভীষণ কঠিন ছিল। প্রথম ১৬-১৭ দিন তো কিছুই করার মত অবস্থায় ছিলাম না।আমি ব্যায়ামও করতে পারছিলাম না।কিংবা করলেও ২০-৩০ মিটারের বেশি দৌড়াতে পারছিলাম না। অথবা ২-৩ মিনিটের জন্য কিছু করলেও হৃদস্পন্দন অনেক বেড়ে যাচ্ছিল।’

সময়টা কঠিন ছিল। ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকা (সিএসএ) থেকে ক্ল্যাসেনের জন্য কিছু ব্যায়াম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, তার জন্যও ফিট ছিলেন না ক্ল্যাসেন।

তিনি বলেন, ‘বোর্ড থেকে আমাদের প্রতিদন ১০-১৫ মিনিট ব্যায়াম করা বা ২০০ মিটার হাঁটার কথা বললেও আমি সেটাও করতে পারছিলাম না। আমার শুধু হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রনে আনতেই অনেক সময় লেগে যাচ্ছিল। তাই সবমিলিয়ে মানসিক ভাবেও সময়টা আমার জন্য কঠিন ছিল। বাসায় বসে থাকা বাদে আমার কিছুই করার ছিল না।’

যদিও পাকিস্তান সফরে আসার আগ দিয়ে অবস্থার উন্নতি হয়। ক্ল্যাসেন বলেন, ‘তবে, পাকিস্তান আসার তিন সপ্তাহ আগে থেকে আমি বেশ ভালো ভাবেই অনুশীলন করতে পারছিলাম।আমার এখন মনে হচ্ছে আমি সুস্থ ও নিরাপদ এবং আমি আবার ও ক্রিকেটটা খেলতে পারবো।’

দক্ষিন আফ্রিকা তাঁদের পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে ক্যাসেনকে অধিনায়ক হিসেবে ঘোষণা করেছে। করোনা যুদ্ধে জয়ী ক্ল্যাসেনের সামনে এখন তাই নেতৃত্বের চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, ‘এই দলে নিয়মিত কয়েকজন ক্রিকেটার না থাকলেও আমরা বেশ ভালো দল নিয়েই খেলতে এসেছি। করোনার কারণে অনেক দলেরই নিয়মিত খেলোয়াড়রা খেলতে পারছেন না। আমাদেরও তাই হয়েছে।’

অনেকটা সময় লাগলেও ক্ল্যাসেন সুস্থ হয়ে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন। অনেকেই হয়তো আর ফিরতে পারেন নি। তাই যাঁরা বিভন্ন অজুহাত দেখিয়ে ভাইরাসটিকে অবহেলা করছেন তাদের বোধহয় এখন ক্ল্যাসেনের ফিরে আসার গল্প দেখে সতর্ক হবেন।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link