ক্রিকেটে এমন একটা সময় ছিল যখন দলগুলো পাঁচ জন জেনুইন বোলার নিয়ে মাঠে নামতো। সেই বোলাররা আসলে ব্যাট হাতে দলের জন্য তেমন কোনো রান করতে পারতেন না। অবশ্য সেই দিন এখন বদলেছে। এখন মোটামুটি সব দলে দু-একজন অলরাউন্ডার থাকেন।
তাছাড়া এখনকার বোলাররাও কিছুটা ব্যাট করতে জানেন। দশ-এগারো নাম্বারে খেলতে নামা বোলাররাও এখন দলের জন্য ২০-৩০ রান করে দিতে পারেন। অন্তত টেস্ট ক্রিকেটে ক্রিজ আঁকড়ে থেকে অপর প্রান্তের ব্যাটসম্যানকে সঙ্গ দিতে পারেন। তবে ১১ নম্বরে নেমে বড় ইনিংস খেলা সত্যিই কঠিন। টেস্ট ক্রিকেটে ১১ নম্বরে নেমে কোনো বোলারই এখনো সেঞ্চুরি করতে পারেননি তবে বেশ ভালো কিছু ইনিংস খেলেছেন। সেই সব ইনিংস গুলোই একসাথে করেছে খেলা ৭১।
- আশটন অ্যাগার (অস্ট্রেলিয়া): ৯৮
অস্ট্রেলিয়ার এই স্পিনার তাঁর অভিষেক টেস্টেই খেলেন ৯৮ রানের ইনিংস। এখন পর্যন্ত কোনো ১১ নম্বর ব্যাটসম্যানের এটাই সর্বোচ্চ ইনিংস। একটুর জন্য তিনি প্রথম ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্ট সেঞ্চুরি মিস করেন। সেই ম্যাচে ১১৭ রানে অস্ট্রেলিয়ার ৯ উইকেট চলে যাওয়ার পর ব্যাট করতে নামেন তিনি। ১০১ বলের সেই ইনিংসে ছিল ১২টি চার ও ২টি ছয়। ম্যাচের ওই অবস্থা থেকে অজিরা ওই ইনিংসে ৬৫ রানের লিড পায়।
- টিনো বেস্ট (ওয়েস্ট ইন্ডিজ): ৯৫
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে মোট ২৫ টি টেস্ট খেলেছেন এই বোলার। এই তালিকার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংসটি এসেছে তাঁর ব্যাট থেকেই। প্রথম ইনিংসে ২৮৩ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৯ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ব্যাটিং করতে নামেন তিনি। তারপর উইকেট কিপার দীনেশ রামদিনের সাথে অসাধারণ পার্টনারশিপ গড়েন। সেই ইনিংসে ১১ নম্বরে খেলতে নেমে টিনো বেস্ট খেলেন ৯৫ রানের ইনিংস। ১১২ বলের সেই ইনিংসে ছিল ১৪টি চার ও ১টি ছয়। শেষ পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ এর স্কোর দাঁড়ায় ৪২৬ রান।
- জেমস অ্যান্ডারসন (ইংল্যান্ড): ৮১
ক্যারিয়ারে ৩০ বার ৫ উইকেট নেয়া ইংল্যান্ডের এই পেসার ব্যাট হাতেও করেছেন রেকর্ড। তবে তাঁর ক্যারিয়ারে এই একবারই তিনি আফ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। ভারতের বিপক্ষে একটি টেস্টে ১১ নম্বরে নেমে এই কীর্তি করেন তিনি। ভারত প্রথম ইনিংসে করে ৪৫৭ রান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ২৯৮ রানেই ৯ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। তারপর জো-রুটের সাথে পার্টনারশিপ গড়েন এই বোলার। শেষ পর্যন্ত ১৩০ বলে ৮১ রান করেন এন্ডারসন।
- জহির খান (ভারত): ৭৫
ভারতের এই পেসার বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে এই রেকর্ড করেন। ২০০৪ সালে ওই ম্যাচে ৭৫ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। মজার ব্যাপার হচ্ছে সেদিন দশম উইকেট জুটিতে শচীন টেন্ডুলকারের সাথে ১৩৩ রানের পার্টনারশিপ করেন তিনি। সেই ম্যাচে শচীন ২৪৮ রানে নট আউট ছিলেন। তবে ১১৫ বলে ৭৫ রান করে আউট হন জহির খান।
- রিচার্ড কলিঞ্জ (নিউজিল্যান্ড): ৬৮
তালিকার শেষ ব্যক্তি নিউজিল্যান্ডের এই বাঁ-হাতি পেসার। তিনি ১১ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে খেলেছিলেন ৬৮ রানের এক অপরাজিত ইনিংস। পাকিস্তানের বিপক্ষে সেই ম্যাচে ২৫১ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে ফেলে নিউজিল্যান্ড। তারপর দশ নম্বর জুটিতে বিশাল পার্টনারশিপ করে শেষ পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের স্কোর দাঁড়ায় ৪০২ রান।