থ্রো ডাউন স্পেশালিস্ট, ক্রিকেটের সম্ভবনাময় ক্যারিয়ার

বল থ্রো ডাউনের এ ব্যাপারটা প্রথম নজরে এসেছিল গ্যারি কার্স্টেনের হাত ধরে। তখন ভারতের কোচ ছিলেন তিনি। বোলিং মেশিনের পাশাপাশি আলাদা করে তিনি ব্যাটারদের দিকে বল ছুঁড়তেন। এ ছাড়া বলে সুইং করানোর জন্য টেনিস ব্যবহারও করতেন। যা ঐ সময়ে ভারতীয় ব্যাটারদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে দারুণ কাজ করতো।

ব্যাটারদের নেট প্র্যাকটিসে বোলিং মেশিনের চল বহুকাল আগে থেকেই। তবে শেষ এক যুগে বোলিং মেশিনের পাশাপাশি বল থ্রো ডাউন স্পেশালিস্টদের আনাগোনা অনেকাংশেই বেড়েছে। 

বল থ্রো ডাউনের এ ব্যাপারটা প্রথম নজরে এসেছিল গ্যারি কার্স্টেনের হাত ধরে। তখন ভারতের কোচ ছিলেন তিনি। বোলিং মেশিনের পাশাপাশি আলাদা করে তিনি ব্যাটারদের দিকে বল ছুঁড়তেন। এ ছাড়া বলে সুইং করানোর জন্য টেনিস ব্যবহারও করতেন। যা ঐ সময়ে ভারতীয় ব্যাটারদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে দারুণ কাজ করতো। 

গ্যারি কার্স্টেনের সেই পদ্ধতি পরবর্তীতে রপ্ত করেন রাঘবেন্দ্র নামের এক ক্রিকেট কোচ। ফলশ্রুতিতে ভারতীয় ব্যাটাররাও নিজেদের ব্যাটিংটা আরেকটু ঝালাই করে নিতে পারতেন। 

রাঘবেন্দ্রর ডাক নাম রঘু। ভারতীয় দলে তাঁর পরিচিতি এই নামেই। বিরাট কোহলির ভাষ্যমতে, শেষ ১০ বছরে ব্যাটিংয়ে ভারতের উন্নতির পিছনে অনেক বড় একটা অবদান রয়েছে রঘুর। কারণ রঘু ১৫০ কিলোমিটার গতিতে বল ছুঁড়তে পারেন। 

যার ফলে অনুশীলনেই বড়সড়ো পরীক্ষা দিতে হয় ভারতীয় ব্যাটারদের। এতে করে অবশ্য লাভ হয়েছে তাদেরই। ম্যাচে এর চেয়েও সাধারণ কম গতিতে বল আসে। তাই ম্যাচে শেষ ১০ বছরে ভারতীয় ব্যাটারদের সফল হওয়ার হারও বেশি। 

রঘুর বেড়ে ওঠা দরিদ্র ঘরেই। হতে চেয়েছিলেন ক্রিকেটার। কিন্তু ইনজুরির কারণে অফস্পিনার হিসেবে ক্যারিয়ারটা আর বেশিদূর টানতে পারেননি। এরপরেই বেছে নেন কোচিং ক্যারিয়ার। শুরুর দিকে বল থ্রো ডাউনের ব্যাপারটা বুঝতেনই না। 

কিন্তু যখন ব্যাঙ্গালুরুতে আসলেন, তখনই এ ব্যাপারে অবগত হন তিনি। মজার ব্যাপার হলো, কোচিংয়ের নেশা থাকলেও ঐ বল থ্রো ডাউনেই দারুণ আগ্রহ খুঁজে পান তিনি। আর ঐ আগ্রহবোধেই ভারতীয় দলের থ্রো ডাউন স্পেশালিস্ট হয়ে যান তিনি। 

এই মুহূর্তে রঘু প্রায় ১৫৫ কিলোমিটার গতিতে বল ছুঁড়তে পারেন। তবে ভারতীয় দলের পাশাপাশিও রঘুর একটি একাডেমিও রয়েছে, যেখানে তাঁর অধীনে কাজ করে ৪ জন থ্রো ডাউন স্পেশালিস্ট।

রঘুর ভাষ্যমতে, ক্রিকেটে ক্যারিয়ার হিসেবে বল ‘থ্রো ডাউন স্পেশালিস্ট’ পেশা মোটেই খারাপ কিছু নয়। বরং তুলনামূলক অনেক অর্থ যোগই হয় এ পেশায়। ক্যারিয়ারের শুরুতেই মেলে প্রায় ত্রিশ থেকে পয়ত্রিশ হাজার টাকার স্যালারি। 

তবে একজন থ্রো ডাউন স্পেশালিস্টের নিজেরও দক্ষতা বৃদ্ধিতে কাজ করতে হয়। রঘু সেটা নিজেও একদিনে পাননি।

কোহলি যেমন তাঁকে নিয়ে বলেছিলেন, ‘যত সময় গিয়েছে, রঘু তত পরিণত হয়েছে। এখন আমাদের ফুটওয়ার্ক বুঝতে পারে। ব্যাটিং মুভমেন্ট রিড করতে পারে। যে ব্যাপার গুলো একজন থ্রো ডাউন স্পেশালিস্টের জানা খুবই দরকার।’

রঘু অবশ্য এর মধ্যে বহুবার বেশ কিছু দলের কোচিংয়ের অফার পেয়েছেন। আইপিএলের একাধিক দল তাঁকে পেতে চেয়েছে। কিন্তু রঘু থেকে গিয়েছেন শুধু ভারতীয় দলের জন্যই। সে যাত্রা এখন এক দশক পেরিয়ে এক যুগের পথে। 

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...