ছেলে জুরেলকে ক্রিকেটার বানাতেই চাননি বাবা

ধ্রুব জুরেলের কার্গিল যুদ্ধের একজন প্রবীণ সৈনিকের সন্তান। ২৩ বছর বয়সী জুরেলের ঠিকানা হতে পারত সেনাবাহিনী, কিন্তু তিনি বেছে নেন ক্রিকেটকে। ভারতের হয়ে খেলতে পারা তাঁর জন্য স্বপ্ন পূরণ হওয়ার সমান।

আর টেস্ট দিয়ে শুরু বলে আনন্দটা আরও বেশি তাঁর। টেস্ট তাঁর জন্য ক্রিকেটের ‘শুদ্ধতম রূপ’। জুরেল বলেন, ‘টেস্ট ক্যাপ আর ম্যাচ সেরার স্মৃতি আমি ভুল না। ভারতের হয়ে টেস্ট খেলতে পারা সত্যিই আনন্দের ছিল। আর টেস্ট হলো ক্রিকেটের বিশুদ্ধতম ধরণ। আমিও নিশ্চিত ছিলাম যে, আমি একদিন টেস্ট ক্রিকেট খেলব। আমার জন্য এটি স্বপ্ন পূরণের মুহূর্ত।’

যদিও বাবার ইচ্ছা ছিল, ছেলে যাবে সেনাবাহিনীতে। জুরেল বলেন, ‘বাবা ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন আমিও মিলিটারিতে যাই, ন্যাশনাল ডিফেন্স একাডেমিতে যোগ দেই। বাবা ডায়েট আর প্রশিক্ষণে ছিলেন শৃখলাবব্ধ।’

শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবনে অবশ্য উপকারই হয় জুরেলের। তিনি মনে মনে বাচিয়ে রাখেন টেস্ট ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন।

পুরনো স্মৃতিচারণের সময় তিনি বলেন, ‘বাবা ক্রিকেটের পক্ষে ছিলেন না। তাই, আমি বাবাকে প্রথমে কিছুই বলিনি। তিনি আমাকে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে বলেন। তারপর আমি মায়ের কাছে গেলাম। মা আমাকে বুঝল। মা আমাকে কাশ্মীর উইলো দিয়ে তৈরি ব্যাট কিনে দিতে রাজি হলেন।’

ক্রিকেট কিটের দাম ওই আমিলে ছিল পাঁচ-ছয় হাজার রুপি। সেটা কেনা সামর্থ্য ছিল না জুরেলের মা। ১২ বছর বয়সেই জুরেল একা একাই আগ্রা থেকে আসতেন নয়ডাতে শুধুমাত্র ক্রিকেটের টানে। নয়ডার স্থাণীয় ক্রিকেট একাডেমিতে তিনি প্রশিক্ষণ নিতেন।

তিনি বলেন, ‘আমি সবসময় টেস্ট খেলতে চেয়েছিলাম। যখন আমি অনূর্ধ্ব ১৯ দলে ছিলাম, তখনই আমার লক্ষ্য ছিল ২০০ টি টেস্ট খেলা। পরবর্তীতে বুঝতে পারলাম যা সম্ভব ছিল না।’

তবে, জুরেলের ধ্যান-জ্ঞান আজও টেস্ট ক্রিকেট। তাই, ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) ও টেস্ট ক্রিকেটের মধ্যকার তুলনা তাঁর জন্য অমূলক।

তিনি বলেন, ‘আইপিএল টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি আমার ভালবাসা কমায়নি। এই দুটোর মাঝে কোনো প্রতিযোগিতা নেই। তবে যখন আমি ব্যাগি (ভারতের টেস্ট ক্যাপ) ক্যাপ পেয়েছি, তখন এর অনুভূতি সম্পুর্ণ আলাদা।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link