ক্রিকেট হল গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা। আর এই ক্রিকেটের ফরম্যাট যত ছোট হতে থাকে ততই যেন বাড়ে অনিশ্চয়তা। আর টি-টোয়েন্টিকে তো বলাই হয় ঘোরতর অনিশ্চয়তার খেলা। ক্রিকেটের এই সংস্করণে শক্তির কোনো ব্যবধান থাকে না।
নিজেদের দিনে যেকোনো দলই হারিয়ে দিতে পারে বিশ্ব সেরাদের । ঠিক তেমনি এক ম্যাচ দিয়েই পর্দা উঠলো অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপের। এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে ৫৫ রানে হারিয়ে দিলো আইসিসির সহযোগী দেশ নামিবিয়া। অথচ, ক’দিন আগেই কি প্রতাপ দেখিয়ে ভারত, পাকিস্তান সবাইকে হারিয়ে লঙ্কানরা জিতেছিল এশিয়া কাপের শিরোপা। অথচ, অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে নামিবিয়ার সামনে সে সবই যেন অতীত।
‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে নামিবিয়ার বিপক্ষে ‘ফেবারিট’ হয়েই মাঠে নেমেছিল দাসুন শানাকার দল। এই ম্যাচ দিয়েই আনুষ্ঠানিক ভাবে পর্দা ওঠে বিশ্বকাপের। অস্ট্রেলিয়ার জিলংয়ের সিমন্ডস স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দাসুন শানাকা।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা বেশ নড়বড়ে ছিল নামিবিয়ার। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে ৪৩ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে আফ্রিকার এই দেশটি। এরপর অধিনায়ক গেরহার্ড ইরাসমাস ও স্টিফেন বার্ড মিলে দলকে খাঁদের কিনারা থেকে তোলার চেষ্টা করেন।
কিন্তু, ইনিংসের ১২,১৪ ও ১৫ তম ওভারে ইরাসমাস,বার্ড ও ডেভিড উইসে আউট হয়ে গেলে দলীয় ৯৩ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে নামিবিয়া। ইনিংসের শেষ পাঁচ ওভারে দুই নামিবিয়ান অলরাউন্ডার জ্যান ফ্রাইলিঙ্ক ও জেজে স্মিট মিলে রীতিমতো তুলো-ধুনো করেন লঙ্কান বোলারদের। জিলংয়ের ছোট বাউন্ডারির সুবিধা নিয়ে এই দুই ব্যাটার শেষ পাঁচ ওভারে ৬৮ রান তুলে নামিবিয়াকে ১৬৩ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়তে সহায়তা করেন।
জ্যান ফ্রাইলিংক ২৮ বলে ৪৪ ও জেজে স্মিট ১৬ বলে ২ চার ও ছয়ের মারে ৩১ রান করেন। শ্রীলঙ্কার হয়ে প্রমোদ মাদুশান দু’টি উইকেট নেন।
নামিবিয়ার ১৬৩ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে শ্রীলঙ্কা যেন শুরুটা এশিয়া কাপের ফাইনালের নিজেদের ব্যাটিংয়ের পুনরাবৃত্তি প্রদর্শন করলো। ইনিংসের চতুর্থ ওভারেই দলীয় ২১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেললো লঙ্কান বাহিনী।
এরপর ৪০ রানে ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও দলীয় ৭৪ রানে ভানুকা রাজাপাকসে আউট হয়ে গেলে হারকেই যেন নিয়তি মনে হচ্ছিলো শ্রীলঙ্কার। অধিনায়ক দাসুন শানাকা ২৩ বলে ২৯ করে ম্যাচ বাঁচানোর চেষ্টা করলেও তা শুধু হারের ব্যবধান কমিয়েছে মাত্র।
৮৮ রানে সপ্তম উইকেট হিসেবে শানাকা আউট হয়ে গেলে বাকি ব্যাটসম্যানরা ব্যাট হাতে ঘুরে দাঁড়াতে না পাড়ায় ১৯ ওভারে ১০৮ রানে অলআউট হয় এশিয়ার চ্যাম্পিয়নরা। নামিবিয়ার হয়ে ডেভিড উইসে, বার্নার্ড স্কোলজ, জ্যান ফ্রাইলিঙ্ক ও বেন শিকঙ্গো দুইটি করে উইকেট নেন। বল ও ব্যাট হাতে দারুণ পারফরম্যান্সের পুরস্কার হিসেবে ম্যাচ সেরা হন নামিবিয়ান অলরাউন্ডার জ্যান ফ্রাইলিঙ্ক।
গ্রুপ ‘এ’ এর বাকি দুইদল হলো নেদারল্যান্ডস ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। গ্রুপের প্রতিটা দল একে অপরের সাথে মুখোমুখি হয়ে সেরা দুই দল মূল পর্বে উত্তীর্ণ হবে।