প্রায়শই লোকেমুখে শোনা যায়, ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটে নাকি টাকা ওড়ে। সে কথার প্রচলন ঘটিয়েছে খোদ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। যাত্রার পর থেকে এখন পর্যন্ত খেলোয়াড়দের কখনোই নিরাশ করেনি আইপিএল। আর্থিকভাবে খেলোয়াড়রা লাভবান হয়নি এমন অভিযোগ তোলা যে দায়।
প্রথমত, আইপিএলের খেলোয়াড়রা সবচেয়ে বড় অংকের উপার্জনটা করে থাকেন নিলাম থেকে। নিলাম টেবিলেই নির্ধারিত হয়ে যায় কোন খেলোয়াড়ের একটি মৌসুমের বেতন। নিলাম টেবিলে একজন খেলোয়াড়ের ঠিক যত দাম ওঠে সেটাই তার সেই মৌসুমের স্যালারি।
এমনকি খেলোয়াড়দের ন্যূনতম বেতনের ক্ষেত্রেও মাথায় রাখা হয় বেশ কিছু বিষয়। একজন খেলোয়াড়ের অভিজ্ঞতা, তার দক্ষতা এসবের নিরিখে খেলোয়াড়দের সর্বনিম্ন বেতন ঠিক করে দেওয়া হয়। এমনকি জাতীয় দলে অভিষেক না হওয়া খেলোয়াড় ও জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের মধ্যেও পার্থক্য থাকে বেতন নির্ধারণে।
এরপর সেই ন্যূনতম থেকেই শুরু হয় বনি। প্রতিটি ফ্রাঞ্চাইজি তাদের প্রয়োজন অনুসারে নির্দিষ্ট খেলোয়াড়কে দলে ভেড়াতে চায়। কোন একজন খেলোয়াড়ের যখন চাহিদা থাকে অধিকাংশ ফ্রাঞ্চাইজিগুলোর মাঝে, ঠিক তখনই তার বেতন আকাশচুম্বী হয়। নিলামের টেবিল দর তখন ক্রমশ বাড়তে থাকে।
তবে সে ঘটনার প্রভাবক হিসেবে কাজ করে খেলোয়াড়ের সাম্প্রতিক পারফরমেন্স। এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে ব্র্যান্ড ভ্যালু। হ্যা, ব্র্যান্ড ভ্যালুও একটা নিয়ামক হিসেবে কাজ করে আইপিএলে খেলোয়াড় নির্ধারণের ক্ষেত্রে। আইপিএল ফ্রাঞ্চাইজিগুলোর মূল আয়ের উৎস পৃষ্ঠপোষকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত অর্থ।
পৃষ্ঠপোষকরা আইপিএলে টাকা ঢালতে রীতিমত মুখিয়ে থাকেন। এর মূল কারণ গোটা বিশ্বের আকর্ষণ। তাতে করে তাদের পণ্যের মার্কেটিং হয়ে যায় অনায়াসে। সেখান থেকেও কোন কোন খেলোয়াড়ের বাড়তি একটা আয়ের উৎস তৈরি হয়। নির্দিষ্ট কোন ব্র্যান্ডের বিশেষ মার্কেটিং ক্যাম্পেইনে দলের অন্যতম পারফরমারকে অন্তর্ভূক্ত করতে দেখা যায়। জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা আছে এমন খেলোয়াড়দের সাথে ব্র্যান্ডগুলো আলাদা এন্ডোর্সমেন্ট করে থাকে।
এছাড়াও ম্যাচ ফি হিসেবে খেলোয়াড়রা আয় করে থাকেন আইপিএল থেকে। প্রতিটি ম্যাচ খেলার জন্যে খেলোয়াড়ের বেসিক বেতনের উপর ভিত্তি করে দেওয়া হয় ম্যাচ ফি। পাশাপাশি উপঢৌকন, বোনাস এসব থেকেও আইপিএলে খেলোয়াড়রা অর্থ উপার্জন করে থাকেন।
তাছাড়া কোন দল চ্যাম্পিয়ন হলে একটা মোটা অংকের অর্থ পুরষ্কার পায়। সেই অর্থ নির্দিষ্ট অংকে বিভক্ত হয়ে ছড়িয়ে যায় খেলোয়াড়দের মাঝে। সেখান থেকেও আসলে খেলোয়াড়রা একটা মোটামুটি ভাল পরিমাণ অর্থ আয় করে থাকেন বেসিক স্যালারির বাইরে।
তাছাড়া কোন কোন ফ্রাঞ্চাইজি মালিক, কোন এক নির্দিষ্ট দিনের পারফরমারকে খুশি হয় অর্থ-উপহারও দিয়ে থাকেন। সেটাও একটা আয়েরই উৎস। তাতে করে আবার খেলোয়াড়দের মাঝে পারফরম করবার বাড়টি স্পৃহা জাগ্রত হয়। অতএব আইপিএলের প্রতিটি পরতে পরতেই অর্থের ছড়াছড়ি। খেলোয়াড়রা তাইতো আইপিএল খেলবেন বলে মুখিয়ে থাকেন।