বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। আগের নয় আসরে ব্রডকাস্টিং, ডিআরএস, প্রোডাকশন কোয়ালিটিসহ নানা ইস্যুতেই বড় রকমের সমালোচনার মুখে ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তবে দশম আসরে এসে কিছুটা আশার আলো দেখাতে পেরেছে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এবার আসরের শুরু থেকেই আছে ডিআরএস। সাথে সম্প্রচারের মানের দিক থেকেও বেশ এগিয়েছে বিপিএল।
আগের বারের মতো এবারও প্রোডাকশনের দায়িত্বে ছিল রিয়েল ইম্প্যাক্ট টেকনোলজিস। তাই শঙ্কা ছিল, আশার বাণী শুনিয়েও হয়তো শেষ মেশ বিপিএলের চিরায়ত ধরনের মতো সম্প্রচার করবে প্রতিষ্ঠানটি। তবে সবাইকে অবাক করে দিয়ে সর্বশেষ প্রযুক্তির প্রয়োগ ঘটিয়ে এবারের বিপিএলে দারুণ ব্রডকাস্টিংয়ে অবদান রাখছে প্রতিষ্ঠানটি।
টিভি সম্প্রচারের মান উন্নত করতে বিপিএলে এর আগেও যুক্ত হয়েছিল স্পাইডার ক্যাম। তবে মাঝের কয়েক আসরে দেখা যায়নি উন্নত এ প্রযুক্তির ছোঁয়া। তবে এবার বিপিএলের মাঠে ফিরেছে ড্রোন ক্যামসহ উন্নতমানের সব প্রযুক্তি। এ ছাড়া সম্প্রচারে নতুনত্ব আনতে স্পাইডার ক্যামেরার পাশাপাশি ব্যাগি ক্যামেরাও ব্যবহার করা হয়েছে এবারই প্রথমবার।
এখানেই শেষ নয়। পুরো মাঠে এবার ব্যবহার করা হচ্ছে ৩৫ টি ফোর-কে ক্যামেরা। যা টিভি সম্প্রচারে দর্শকদের দিচ্ছে দারুণ এক অভিজ্ঞতা। তাছাড়া ডিআরএসের সিদ্ধান্ত দ্রুতকরণের জন্য এবার দেখা গিয়েছে জিং স্ট্যাম্পেরও ব্যবহার। এ ছাড়া দুই প্রান্তের স্ট্যাম্পেই ছিল ব্যাক ক্যামেরা। যা সম্প্রচার মানকে করেছে আরও উন্নত।
বিসিবি এবার শুধু যে টিভি সম্প্রচারেই মন দিয়েছে, তা কিন্তু নয়। ধারাভাষ্যের মান বাড়াতে এবারের বিপিএলে মাইক্রোফোন হাতে দেখা গিয়েছে, শ্রীলঙ্কার রাসেল আরনল্ড, স্যার কার্টলি অ্যামব্রোস, এইচডি অ্যাকারম্যানের মতো তারকারা। এ ছাড়া সামনে দেখা যেতে পারে জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকর রমিজ রাজাকেও।
এ দিকে এবারই প্রথম দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে বিপিএলের ওয়েবসাইট। এর আগের আসরে যদিও সেটির অস্তিত্ব ছিল। তবে পুরোপুরি প্রস্তুত ছিল না। এবার প্রতি দলের ম্যাচ থেকে শুরু করে স্কোয়াডের তথ্য, স্ট্যাটস, পয়েন্ট তালিকা দেখা যাচ্ছে এ ওয়েবসাইটে। বিপিএলকে আরও পৌঁছে দিতে দর্শকদের জন্য রয়েছে কুইজের ব্যবস্থাও।
ব্রডকাস্টিং কোয়ালিটি থেকে শুরু করে স্কোরকার্ড ডিজাইন, ধারাভাষ্য প্যানেল, সব কিছুতেই এবারের বিপিএলে রয়েছে নতুনত্বের ছোঁয়া। শত সমালোচনার বিপিএলে এখন পর্যন্ত এটাই প্রাপ্তি। বিসিবি নিশ্চয়ই এটার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাইবে।