পুরো টুর্নামেন্ট দাপিয়ে বেড়িয়েছে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের ব্যাটাররা। মুড়ি-মুড়কির মত রান এসেছে ট্রাভিস হেড, অভিষেক শর্মা, এনরিখ ক্লাসেনদের ব্যাট থেকে। দলগতভাবে কতশত রেকর্ড হল। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের সর্বোচ্চ দলীয় রানের রেকর্ডটাও ভেঙে চুরমার করে দেওয়া হল। কিন্তু যেদিন ব্যাটারদের জ্বলে ওঠা ছিল ভীষণ দরকার, সেদিনই প্রদীপের জ্বালানি ফুরিয়ে গেল।
দুর্দান্ত সাফল্যের দেখা পেয়েছেন এবারে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের ব্যাটাররা। ট্রাভিস হেড, অভিষেক শর্মার উদ্বোধনী জুটি তো ছিল প্রতিপক্ষ বোলারদের ত্রাস। পাওয়ার প্লের সেই ৬ ওভারের মাঝে তাণ্ডব চালিয়েছেন এই দুই ব্যাটার। ছয় ওভারে ১০০ রানের গণ্ডিও পেরিয়েছে হায়দ্রাবাদের তাদের কল্যাণে।
কিন্তু ফাইনালের দিন এই দুই ব্যাটার হয়েছেন ব্যর্থ। এমনকি দলের বাকি ব্যাটারদেরও যেন খারাপ দিন হিসেবে অপেক্ষায় ছিল ফাইনালের দিন। এদিন পাওয়ার প্লের নির্ধারিত ৬ ওভারে হায়দ্রাবাদের সংগ্রহ মোটে ৪০ রান। যা কি-না তাদের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। আর এই রান তুলতে গিয়েই তিন তিনটি উইকেট হারাতে হয়েছে আইপিএলের একবারের চ্যাম্পিয়নদের।
মোট চারটি ম্যাচে সানরাইজার্স ব্যাটাররা পাওয়ার-প্লে তে পঞ্চাশ বা তার অধিক রান নিতে পারেনি। প্লে-অফ থেকে ফাইনাল এই সময়ে দুইবার কলকাতা নাইট রাইডার্সের মুখোমুখি হয়েছিল হায়দ্রাবাদ। এই দুই দেখাতেই ৫০ এর নিচে রান নিতে পেরেছে অভিষেক, রাহুল ত্রিপাঠিরা। আর সেই দু’টো ম্যাচই হারতে হয়েছে তাদের।
এছাড়া লিগ পর্যায়ের দুইটি ম্যাচে প্রথম ছয় ওভারে ৪০ ও ৩৫ রান নিতে পেরেছিল হায়দ্রাবাদের ব্যাটাররা। মুল্লানপুরে পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে খেলা ম্যাচটিতে মাত্র ২ রানে জিতেছিল সানরাইজার্স। অন্যদিকে, ঘরের মাঠে রাজস্থান রয়্যালসকে ১ রানের ব্যবধানে হারিয়েছিল হায়দ্রাবাদ।
ট্রাভিস হেড, অভিষেক, ক্লাসেন, রাহুল ত্রিপাঠিরা ব্যর্থ হলেই ম্যাচ হাত থেকে ফসকে গেছে কিংবা ফসকে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। আবার ভিন্ন চিত্রও আছে। টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই হায়দ্রাবাদ তাদের টপ অর্ডারের উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল। সেটা হওয়াও বেজায় স্বাভাবিক ঘটনা। কেননা প্রতিটা ব্যাটাররাই যে বেদম প্রহারের মহোৎসবে মত্ত ছিলেন।
সেটাই বরং কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে প্যাট কামিন্সের দলের জন্য। তাদের ব্যাটাররা ঠিক বুঝে উঠতে পারেননি চেন্নাইয়ের টু-পেসড উইকেটে ঠিক কিভাবে ব্যাটিংটা করতে হত। তাদের কাছে সব উইকেটই একই রকম ঠেকেছিল। উইকেটে বোলারদের একটু খানি সুবিধা থাকলেই সে ম্যাচে খাবি খেয়েছে হায়দ্রাবাদ। এমনকি চিপক স্টেডিয়ামে চেন্নাইয়ের বিপক্ষে ১৩৪ রানেই হয়েছিল তারা অলআউট।
মাঠের বাইরে কলকাতার মস্তিষ্কগুলো কাজ করেছে বেশ। হায়দ্রাবাদের শক্তিমত্তাই যে তাদের অন্যতম দূর্বলতা সে বিষয়টি নিয়ে ঘাটাঘাটি করেছে কলকাতার টিম ম্যানেজমেন্ট। এরপর তাদের দুর্ধর্ষ ব্যাটিং লাইন আপকে কাবু করবার ফন্দি এঁটেছে। দিনশেষে ট্রফি হাতে সফলতার গান গাইতে গাইতে বাড়ি ফিরেছে কলকাতা নাইট রাইডার্স।