বিশ্বকাপ জেতার মূলমন্ত্র, পাওয়ার প্লে-তে আধিপত্য

দশ দলের লড়াইটা এখন নেমে এসেছে দুইয়ে। দেড় মাসের ক্রিকেট যজ্ঞ এখন অন্তিম মহারণের দ্বারপ্রান্তে। ভারত-অস্ট্রেলিয়া ফাইনাল নিয়ে প্রশ্ন কিংবা কৌতূহল এখন একটাই— ছয় নাকি তিন?

৮ বছর আগে নিজেদের মাটিতে শিরোপা জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। আর তার ৪ বছর আগে শিরোপা গিয়েছিল ভারতের ঘরে। পুরনো দুই চ্যাম্পিয়নের চোখ তাই শিরোপা পুনরুদ্ধারেরও। আর সে যাত্রায় এগিয়ে থাকছে কোন দল? ভারত নাকি অস্ট্রেলিয়া?

অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ফেবারিট মানছেন ভারতকেই। তবে আহমেদাবাদে লক্ষাধিক ভারতীয় সমর্থককে চুপ করিয়ে দেওয়ার রসদটা তাঁর জানা আছে। বলাই বাহুল্য, বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে সফলতম দলটার নাম এই অস্ট্রেলিয়া। কন্ডিশনের প্রতিকূলতা দিয়ে তাই অজিবধ করাটা বেশ কঠিনই হবে ভারতের জন্য। 

তবে অস্ট্রেলিয়াকে কুপোকাত করার রণকৌশলটাও নিশ্চয় জানা আছে রোহিতদের। রাউন্ড রবিন লিগের ম্যাচে এই অস্ট্রেলিয়াকেই ২০০ রানের মধ্যে বেঁধে দিয়েছিল বুমরাহ-জাদেজারা। তখন অবশ্য ‘মোহাম্মদ শামি’ নামের মরণাস্ত্র একাদশে ছিলেন না। এবার আছেন। যিনি বাঁহাতি ব্যাটারদের বিপক্ষে ৫২ ডেলিভারিতেই তুলে নিয়েছেন ৯ টি উইকেট। 

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ইনিংস শুরু করবেন দুই বাঁ-হাতি ব্যাটার ডেভিড ওয়ার্নার ও ট্রাভিস হেড। অজিবধের প্রথম ফর্মুলায় দুইয়ে দুইয়ে চার মেলানো যেতে পারে মোহাম্মদ শামিকে বোলিং প্রান্তে এনে। আহমেদাবাদের উইকেটে শুরু থেকেই সিম মুভমেন্ট পাবেন পেসাররা। আর সিম মুভমেন্টে বল স্কিড করাতে শামি কতটা সিদ্ধহস্ত, তার প্রমাণ তো তাঁর এবারের বিশ্বকাপের দুর্দান্ত যাত্রাই স্বাক্ষ্য দিবে। 

পাওয়ার প্লে-র পর আসে মিডল অভার। আর এখানেই দারুণ আধিপত্য দেখিয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজা। রানপ্রসবার এই বিশ্বকাপে ভারতীয় এ স্পিনার মিডল ওভারে বল করেছেন মাত্র ৪.২৫ ইকোনমিতে। ডান হাতি ব্যাটারদের বিপক্ষে সেই সংখ্যাটা ৪.১৮। এ ছাড়া রিস্ট স্পিনার হিসেবে কুলদ্বীপ যাদব তো আছেনই। বাঁ-হাতি কিংবা ডান হাতি, দুই ব্যাটারের বিপক্ষেই মরণ কামড় বসাতে পারেন এ স্পিনার।  

প্রশ্ন হচ্ছে, টসে জিতে কোন সিদ্ধান্ত যৌক্তিক হবে? ব্যাটিং নাকি বোলিং? পরিসংখ্যান বলছে, আহমেদাবাদে রান তাড়া করতে নামা দলগুলোরই জয়সংখ্যা বেশি। চলতি বছরের আইপিএল ফাইনালেও পরে ব্যাট করা দল জয় পেয়েছে। সেই ধারায় এবারের বিশ্বকাপে এই মাঠে ৪ ম্যাচের তিনটিতেই পরে ব্যাট করা দল জিতেছে। আর প্রথমে ব্যাট করে একমাত্র জয় পাওয়া দলটার নাম হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া।

যদিও ফাইনালের পিচ প্রস্তুতকারক জানাচ্ছে, উইকেট হবে মন্থর। রান হবে। তবে টানা বাউন্ডারি বের করা কঠিন হবে। স্কোরবোর্ডে প্রথমে ব্যাট ৩১৫ করলেই, সুবিধাজনক অবস্থায় থাকবে সেই দল। পরে ব্যাট করাটা হবে বেশ কঠিন।

অর্থাৎ টসে যে ম্যাচের ফল নির্ধারণে প্রবলভাবে প্রভাব রাখবে, সেটি এখন অন্তত বলা যাচ্ছে না।  ম্যাচের ফল নির্ধারণ করে দিবে মূলত, পাওয়ার প্লে-র পারফর্মেন্স। প্রথম পাওয়ার প্লে তে, সেটা হোক বোলিং কিংবা ব্যাটিং দিয়ে, যারা শুরুটা ভাল করবে, তাদের জয়ের পাল্লাই হবে ভারী। তবে ভারত-পাকিস্তানের ফাইনাল যে স্পোর্টিং উইকেটেই হতে যাচ্ছে, সেটি সন্দেহাতীত ভাবেই এখন বলা যায়। 

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link