সংযুক্ত আরব আমিরাত দিন দিন ক্রিকেটের আঁতুড়ঘর হয়ে উঠছে। আরব আমিরাত দল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তেমন কোন সাফল্য না পেলেও বিগত সময়ে ক্রিকেটের অনেকগুলো বড় ইভেন্টের ভেন্যু ছিল দেশটির বিভিন্ন স্টেডিয়াম। গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও হয়েছিল এই দেশটিতে, আয়োজক যদিও ভারত। এছাড়া দুবাইয়েই অবস্থিত আইসিসির সদরদপ্তর।
তারপরও দেশটির আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কোন অর্জন নেই। নিয়মিত আইসিসি আসর খেললেও সেখান থেকে ফেরে খালি হাতে। তাঁর বড় একটা বড় কারণ, তাঁদের নিজস্ব কোন ক্রিকেটার নেই। যা আছে, তারা কেউ ভারতীয়, কেউ পাকিস্তানি, কেউ বা শ্রীলঙ্কা থেকে আসা। ভারতে জন্ম কিন্তু, আরব আমিরাতের হয়ে খেলেছেন – এমন ক্রিকেটারের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়।
- কৃষ্ণ চন্দ্রন
অলরাউন্ডার কৃষ্ণ চন্দ্রন আরব-আমিরাতের হয়ে ২০১৫ বিশ্বকাপেও মাঠে নেমেছিলেন। সেই বিশ্বকাপের প্রস্ততি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিন উইকেটও নিয়েছিলেন তিনি। এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার এখন অবধি আমিরাতের হয়ে ১২ টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন। তবে ভারত জন্ম নেয়া এই ক্রিকেটার কর্ণাটকের হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটও খেলেছেন।
- আনশ ট্যান্ডন
আনশ ট্যান্ডন মাত্র ১৯ বছর বয়সী এক ক্রিকেটার। দিল্লীতে জন্মগ্রহণ করলেও পরবর্তীতে পাড়ি জমান আরব আমিরাতে। ২০২০ সালে সৌদি আরবের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষিক্ত হয় এই ক্রিকেটারের। এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তিনি নাকি বিরাট কোহলির বিরাট ভক্ত! যদিও, এরপর আর কোনো ম্যাচেই তাঁকে দেখা যায়নি।
- আলিশান শারাফু
আলিশান শারাফু আরেক ভারতে জন্ম নেয়া ক্রিকেটার যিনি এখন সংযুক্ত আরব আমিরাতের হয়ে খেলছেন। ২০০৩ সালে ভারতের কেরালায় জন্মগ্রহণ করেন এই ক্রিকেটার। তবে এখন তিনি খেলছেন আরব আমিরাতের ওপেনার হিসেবে। দেশটির হয়ে ইতোমধ্যেই ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয়েছে তাঁর।
- বাসিল হামিদ
২০১৯ সালে আরব-আমিরাতের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন বাসিল হামিদ। আমিরাতের এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানেরও জন্ম হয়েছিল ভারতের কেরালায়। এই সময়ের আমিরাত দলের অন্যতম সেরা ব্যাটারদের একজন তিনি। অফস্পিন বোলিংটাও করেন দারুণ। আসলে তাঁকে পুরোদস্তর অলরাউন্ডার বলাই ভাল।
- বৃত্ত অরবিন্দ
একেবারেই তরুণ বয়স থেকে আরব আমিরাতের প্রাণভোমরা বনে গিয়েছেন তিনি। টি-টেন লিগেও পুনে ডেভিলসের হয়ে খেলেছিলেন এই উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান। আমিরাতের এই ব্যাটসম্যানের জন্ম হয়েছিল চেন্নাইয়ে। মরুর দেশটির ওপরে টি-টোয়েন্টি বা ওয়ানডে – দুই ফরম্যাটেই ৩০-এর ওপর গড় নিয়ে ব্যাট করেছেন।
- চুন্দাঙ্গাপোয়িল রিজওয়ান
রিজওয়ানেরও জন্ম হয়েছিল ভারতের কেরালা অঞ্চলে। কেরালা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের হয়ে খেলেছিলেন তিনি। তবে এরপর তিনি চলে যান আরব-আমিরাতে। তিনি মিডল অর্ডারে ভরসার নাম। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে দারুণ একটা হাফ সেঞ্চুরি আছে তাঁর।
- চিরাগ সুরি
ভারতের অনেক ক্রিকেটপ্রেমীই চিরাগ সুরিকে চিনবেন। ভারতে জন্ম নেয়া এই ক্রিকেটার এখন খেলেন আরব-আমিরাতের হয়ে। তবে আমিরাতের হয়ে খেলেও ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। ২০১৭ সালে গুজরাট লায়ন্স কিনেছিল সুরিকে। ভারতে জন্ম নিয়েও বিদেশি ক্রিকেটার হিসেবে আইপিএল খেলতে এসেছিলেন তিনি। যদিও, ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। তবে, এটা ঠিক যে তিনি আন্তর্জাতিক মানের ব্যাটার।
- লক্ষ্মণ শ্রীকুমার
কেরালা থেকে আমিরাতে আসা ক্রিকেটারের তালিকাটা বেশ লম্বা। এই তালিকায় আরেকজন হলেন লক্ষ্মণ শ্রীকুমার। তাঁর জন্মও কেরালায়। ৩৫ বছর বয়সী এই ব্যাটসমান এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন আরব-আমিরাতের হয়ে। দেশটির জার্সিতে সর্বশেষ ২০১৭ সালে মাঠে নামেন তিনি।
- স্বপ্নীল পাতিল
ভারতে জন্ম নেয়া এই ক্রিকেটার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার স্বপ্নে পাড়ি জমিয়েছিলেন আরব আমিরাতে। পাতিলের সেই স্বপ্ন পূরণও হয়েছে। ২০১৬ সালে আমিরাতের হয়ে এশিয়া কাপ খেলেছেন। এছাড়া ওয়ানডে ক্রিকেটে এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানের ঝুলিতে আছে দু’টি হাফ সেঞ্চুরি। ৩৭ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারের অবশ্য আমিরাতের হয়ে খেলার সম্ভাবনা কম।
- ভিক্রান্ত শেঠি
তাকেও অবশ্য ‘সাবেক ক্রিকেটার’ই বলা যায়। ভারতের মহারাষ্ট্রে জন্মগ্রহণ করেছিলেন ভিক্রান্ত শেঠি। আরব আমিরাতের হয়ে ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলেছিলেন তিনি। জাতীয় দলের হয়ে সেবারই শেষ খেলেন তিনি।
- আরিয়ান লাকরা
বাংলাদেশ-আরব আমিরাত সিরিজটা দেখে থাকলে আরিয়ান লাকরাকে আপনি চিনবেন। বাঁ-হাতি ব্যাটার, বাঁ-হাতি স্পিনার। যেন আমিরাতের সাকিব আল হাসান। তাঁর জন্ম ভারতের হরিয়ানায়।