ম্যাচের আগে হয়েছিল বৃষ্টি, আকাশও খানিকটা মেঘলা; তাই তো টসে জিতে সুরিয়াকুমার যাদব যখন বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন তখন জানিয়েছিলেন আদ্রতার কারণে পিচে ব্যাটিং করা এখন কঠিন হবে, নিজেদেরকেই সেজন্য চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছেন। তাছাড়া সিরিজ তো জিতেই গিয়েছিল ভারত – সবমিলিয়ে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে তাঁদের কাছ থেকে খানিকটা সতর্ক ব্যাটিংই হয়তো আশা করেছিল সবাই।
কিন্তু ইনিংস বিরতিতে ভারতের নামের পাশে জ্বলজ্বল করতে দেখা যায় ২৯৭ রান! কেউ ওয়ানডে ম্যাচ ভেবে বসলে তাঁকে দোষ দেয়া যায় না। টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে এটাই টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড! আফগানিস্তান-আয়ারল্যান্ড ম্যাচ বাদ দিলে এর আশেপাশেও নেই বড় কোন দলের কীর্তি।
কিন্তু কি হলো বাইশ গজে? কি ঘটলো বিশ ওভারে – বাংলাদেশের বোলাররা বোলিং করেননি এদিন, পাওয়ার হিটিং অনুশীলন করিয়েছেন স্বাগতিক ব্যাটারদের। রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে কেবল বাউন্ডারির বর্ষণ দেখা গিয়েছে পুরোটা সময়, পাড়ার ক্রিকেটে ছোটদের বিপক্ষে বড়দের একটা দলকে নামিয়ে দিলেও বোধহয় এতটা তান্ডবলীলা দেখা যেত না।
তাসকিন আহমেদের প্রথম ওভারে টানা চারটি চার হাঁকিয়ে সঞ্জু স্যামসন শুরুতেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন ভয়ঙ্কর কিছু ঘটতে যাচ্ছে। অধিনায়ক সুরিয়াকুমারকে নিয়ে এরপর তিনি যা করলেন সেটা অবশ্যই ভয়ঙ্কর, ভয়ানক বা বিধ্বংসী কোন শব্দেই প্রকাশ করা যায় না।
সেঞ্চুরিয়ান স্যামসন আউট হওয়ার আগে দু’জনের জুটিতে এসেছিল ১৭২ রান; স্কোরিং রেটের দিক দিয়ে আইসিসির পূর্ণ সদস্য দলগুলোর আর কেউই তাঁদের আগে নেই। এমন অলৌকিক ব্যাটিংয়ে ভারত একের পর এক রেকর্ড ভেঙ্গেছে, এগিয়ে গিয়েছে উল্কা বেগে। এই দুই ডানহাতি ফিরে গেলে শেষদিকে হার্দিক পান্ডিয়া আর রিয়ান পরাগের ক্যামিওতে রেকর্ড সংগ্রহ পায় টিম ইন্ডিয়া।
মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে নেপালের ৩১৪ রান এখন পর্যন্ত পর্যন্ত আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। তবে ক্রিকেটের পরিসর বিবেচনায় এমন ইনিংস সাধারণত আলোচনার টেবিলে আসে না, তাই যতবারই ক্ষুদ্রতম সংস্করণের বৃহত্তম তান্ডব নিয়ে আলাপ হবে ততবারই উঠে আসবে ভারত-বাংলাদেশের এ ম্যাচ। আর ততবারই লজ্জার সাগরে ডুবে মরবে টাইগাররা।