পিচ বদলে ফেলেছে ভারত, সেমিফাইনালের মঞ্চে বিরাট বিতর্ক!

রাউন্ড রবিন লিগ পেরিয়ে সেমিফাইনালের খেলা গড়াতে না গড়াতেই ভারতের বিপক্ষে এবার পিচ বদলের অভিযোগ উঠেছে।

সেমিফাইনালের আগে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের অনুরোধে পিচ পরিবর্তনের অভিযোগ এনেছে বিভিন্ন দেশের সংবাদমাধ্যম। নিউজিল্যান্ডের দলের তরফ থেকে কিছু এখনও বলা না হলেও ব্রিটিশ ও ভারতীয় গণমাধ্যমের দাবি হল বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের জন্য মুম্বাইয়ের নির্ধারিত পিচে খেলতে চায় না ভারত।

তাই, উইকেট পরিবর্তন করেছে বোর্ড অব কনট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই)। অভিযোগ সত্যি হলে, সেটা সত্যিই গর্হিত এক অন্যায়, যেখানে ভারত মাঠের ক্রিকেটেই আছে দারুণ ফর্মে। গ্রুপ পর্বের নয়টি ম্যাচের সবগুলো খেলে সেমিফাইনালে উঠেছে তাঁরা।

দ্বিপক্ষীয় সিরিজে স্বাগতিক দেশের উইকেট থেকে বাড়তি সুবিধা নেওয়ার ঘটনা ঘটে হরহামেশাই। তবে, মঞ্চটা যখন বিশ্বকাপ, তখন সব কর্তৃত্ব থাকার কথা আইসিসির। কিন্তু রাউন্ড রবিন লিগ পেরিয়ে সেমিফাইনালের খেলা গড়াতে না গড়াতেই ভারতের বিপক্ষে এবার পিচ বদলের অভিযোগ উঠেছে।

ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের চাওয়ায় মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে কিউইদের বিপক্ষে ম্যাচে নাকি পূ্র্ব নির্ধারিত উইকেট বদলে মন্থর উইকেট বেছে নেওয়া হয়েছে। আর সেই লক্ষ্যে পিচের ঘাসও ছেটে ফেলা হয়েছে।

ভারতের একাধিক গণমাধ্যম সূত্র জানাচ্ছে, ‘ভারতীয় স্পিনারদের সুবিধা দিতে আলাদা পিচ বেছে নেওয়া হয়েছে। আইসিসির পিচ কনসালটেন্ট অ্যান্ডি অ্যাটকিনসনের সঙ্গে বিসিসিআই একটি সম্মতিতে পৌঁছেছিল যে, ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে প্রথম সেমিফাইনালের জন্য আজ অব্যবহৃত একটি পিচ দেওয়া হবে। কিন্তু সেই পিচের পরিবর্তে এখন অন্য একটি উইকেটে ম্যাচটি হবে, যেখানে এরই মধ্যে দুটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে।’

মূলত ওয়াংখেড়ের ৭ নম্বর পিচে ভারত-নিউজিল্যান্ডের আজকের ম্যাচটি আয়োজনের কথা ছিল। যেখানে এর আগে কোনো ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়নি। বিপরীতে ৬ নম্বর পিচে বিশ্বকাপের রাউন্ড রবিন লিগে ইংল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকা ও ভারত-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ হয়েছিল।

যেখানে একটি ম্যাচে শ্রীলঙ্কা ৫৫ রানেই অলআউট হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, এমন কিছুর পুনরাবৃত্তি ঘটানোর লক্ষ্যেই ৬ নম্বর উইকেটে খেলানোর জন্য বাড়তি সুবিধা নিচ্ছে ভারত। যদিও আইসিসির পিচ কনসালটেন্ট অ্যাটকিনসনকে এ ব্যাপারে পরিষ্কার কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম ডেইলি মেইল বলছে, আইসিসির পিচ কনসালটেন্ট অ্যান্ডি অ্যাটকিনসন বিষয়টা নিয়ে যারপরনাই বিরক্ত হয়েছেন। তিনি আইসিসি বরাবর ভারতের বিপক্ষে অভিযোগ জানিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে মেইলও করেছেন।

সেমিফাইনালের ভেন্যু আগে থেকে নির্ধারিত ছিল না, সেজন্যই এসব বিপত্তির সুযোগ আসছে বলে মনে করেন অ্যাটকিনসন। শুধু সেমিফাইনাল বা গ্রুপ পর্বের ম্যাচ নয় – অভিযোগ আছে বিশ্বকাপের ফাইনাল নিয়েও।

১৯ নভেম্বর বিশ্বকাপের ফাইনাল। সেই ম্যাচটাও স্পিন ধরে এমন উইকেটেই আয়োজন করতে চায় ভারত – এমন অভিযোগও উঠছে। এক্ষেত্রে বিসিসিআই ও গুজরাট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশেন একে অন্যের টেবিলে বল ঠেলছে।

এ দিকে পুরো টুর্নামেন্টেই যে ভারত ইচ্ছামতো উইকেটে খেলেছে, তারও প্রমাণ মিলেছে একটি প্রতিবেদনে। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের ৯ নম্বর উইকেটে। কিন্তু, হঠাৎই বদলে ফেলা হয় পিচ।

সবচাইতে অবাক করা ব্যাপার হলো, সেই ম্যাচের পিচ বদলানোর ঘটনা জানানোই হয়নি অ্যাটকিনসনকে। সব মিলিয়ে ভারতের পিচ বদলের ঘটনা এখন প্রকাশ্য সত্য। এখন দেখার পালা, এই অভিযোগ ভারত কিংবা আইসিসিকে কতটা প্রভাবিত করে। 

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...