আবেদন হারিয়েছে ভারত-পাকিস্তান লড়াই

ভারত-পাকিস্তানের এমন ক্ল্যাসিকোতে বাদ যায় না মাঠের বাইরের আলোচনাও। সে অলোচনায় যোগ দেন দুই দেশের সাবেক ক্রিকেটাররা। এবার ভারত-পাকিস্তানের বাইশ গজের লড়াইকে কেন্দ্র করে বেফাঁস মন্তব্য করে বসলেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি। ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথে নাকি কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই খুঁজে পান না তিনি।

ক্রিকেটে ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ বরাবরই ভিন্ন একটা মাত্রা যোগ করে। দুই দেশের কূটনৈতিক বৈরিতায় সে লড়াই হয়ে ওঠে আরো বেশি চিত্তাকর্ষক। ভারত-পাকিস্তানের এমন ক্ল্যাসিকোতে বাদ যায় না মাঠের বাইরের আলোচনাও।

সে অলোচনায় যোগ দেন দুই দেশের সাবেক ক্রিকেটাররা। তবে এবার ভারত-পাকিস্তানের বাইশ গজের লড়াইকে কেন্দ্র করে বেফাঁস মন্তব্যই করে বসলেন ভারতের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলি।

ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথে নাকি কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই খুঁজে পান না তিনি। প্রিন্স অব ক্যালকাটার মতে, এই সময়ে ভারত যে ধরনের ক্রিকেট খেলছে তাতে ভবিষ্যতে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে প্রাধান্য বিস্তার করেই জিতবে টিম ইন্ডিয়া।

এ নিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে বরাবরই উত্তেজনা থাকে। তবে দীর্ঘ সময় ধরে ভারতই জিতছে তাদের বিপক্ষে। বিশ্বকাপের মঞ্চে পাকিস্তান প্রথম ভারতকে হারানোর স্বাদ পেল এই ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে।’

সৌরভ গাঙ্গুলির এমন বিবৃতির সাথে অবশ্য সাম্প্রতিক সময়ের কোনো মিল নেই। ২০২০ এর পর থেকে ভারত-পাকিস্তান মধ্যকার লড়াইয়ে দুই দলই ২ টি করে ম্যাচ জিতেছে। যার মধ্যে ৩ টি ম্যাচই ছিল দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ণ। উল্টো এই চার ম্যাচের যে একটি ম্যাচে একপেশে লড়াই হয়েছে, তাতে জয়টা ছিল পাকিস্তানেরই।

২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সে ম্যাচে ভারতকে ১০ উইকেটে হারিয়েছিল পাকিস্তান। এর বাইরে ভারত এশিয়া কাপে একবার আর ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে কোহলি বীরত্বে মেলবোর্নে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় পেয়েছিল।

দুই দেশের রাজনৈতিক বৈরিতায় এখন দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ আর হয়না বললেই চলে। তাই দুই দেশের লড়াই দেখার জন্য আইসিসির টুর্নামেন্ট আর এশিয়া কাপের দিকেই চেয়ে থাকতে সমর্থকদের। তবে সমর্থকদের সে অপেক্ষা ঠিকই মিটে যায় দীর্ঘ বিরতির পর দুই দেশের দারুণ লড়াইয়ে।

ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি লড়াইয়ে পাকিস্তানই এগিয়ে। এখন পর্যন্ত খেলা ১৩২ টি ওয়ানডের মধ্যে পাকিস্তানের জয় ৭৩ টিতে, আর ভারতের জয়ে ৫৫ টিতে।

টি-টোয়েন্টিতে অবশ্য এগিয়ে ভারত। তাদের ৮ জয়ের বিপরীতে পাকিস্তান জয়ে পেয়েছে ৩ টিতে। আর টেস্ট ক্রিকেটে পাকিস্তানের ১২ জয়ের বিপরীতে ভারত জয়ে পেয়েছে ৯ টি টেস্টে।

তবে বিশ্বকাপের মঞ্চ হিসাব করলে ভারতের আধিপত্যের প্রমাণ সুস্পষ্ট। সৌরভ গাঙ্গুলি হয়তো সে পরিসংখ্যানকেই সর্বেসবা হিসেবে ধরেছেন। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিলিয়ে ১৪ বারের দেখায় ভারতকে একবারই মাত্র হারাতে পেরেছে পাকিস্তান। বাকি ১৩ টি ম্যাচেই ১২ টিতেই জয় পেয়েছে ভারত। আর বাকি একটি ম্যাচ ছিল ফল শূন্য। অর্থাৎ পরিত্যাক্ত।

তারপরও সাম্প্রতিক সময়ের কথা টেনে আনলে ভারত-পাকিস্তান দুই দলই নিজেরদের মধ্যে লড়াইয়ে সমান তালে এগিয়েছে। বরং ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জেতা পাকিস্তানই কিছুটা এগিয়ে। অন্তত ট্রফি দিয়ে বিচার করলে এই রায়ই আসার কথা।

এই বছরেই নিজেদের মধ্যে বেশ কয়েকটা ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছে ভারত-পাকিস্তান। আসন্ন এশিয়া কাপের মাধ্যমে অন্তত দুইবার ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ দেখার সুযোগ পাবে বিশ্ব ক্রিকেট। দুই দল ফাইনালে উঠলে সেই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়াবে তিনে।

এশিয়া কাপের পরেই আবার বিশ্বকাপ। আগামী ২৫ অক্টোবরে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের মঞ্চে আবার দেখা মিলবে এ দ্বৈরথের। শুধু তাই নয়, দুই দল সেমিতে উঠলেও নক আউট পর্বে কিংবা ফাইনালের মঞ্চে আবারো দেখা যেতে পারে এ দুটি দলকে।

যদিও কখনোই এ দুটি দল ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে একসাথে ওঠেনি। অবশ্য সে সব অতীত ইতিহাসই তো আর শেষ নয়। এবারের বিশ্বকাপ দিয়েও নতুন এক ইতিহাসে নাম লেখাতে পারে এ দ্বৈরথ।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...