বিশ্বকাপের খ্যাতিমান দর্শক

‘ইনজুরি’, শব্দটা সমগ্র বিশ্বের ক্রীড়াবিদদের কাছেই একরকম অপছন্দ, অসহ্যকর, নিদারুণ বেদনার মতো। এক ইনজুরিতেই যে কত খেলোয়াড়ের স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে গেছে তার ইয়ত্তা নেই। বিশেষত, বড় আসর গুলোতে যখন একজন খেলোয়াড়কে মাঠের বাইরে কাটাতে হয় সেই সময়টা তাঁর জন্য হয়ে ওঠে বড্ড অসহনীয়।

চলমান টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপেই বেশকিছু তারকা ক্রিকেটার ইনজুরির কারণে বিশ্বকাপ দল থেকে ছিটকে গেছেন। যাদের উপস্থিতিতে বিশ্বকাপটা হতে পারতো আরো বর্ণময়। মূলত সেই সব তারকা ক্রিকেটারদের নিয়েই খেলা ৭১ এর আজকের আয়োজন। 

  • জনি বেয়ারস্টো (ইংল্যান্ড) 

২০২২ সাল জুড়ে ছিলেন দুর্দান্ত ফর্মে। ফিয়ারলেস ব্যাটিং-এর জন্য সব সময়ই খ্যাতি ছিল। নিজের আক্রমণাত্মক ব্যাটিং এর রেশ টেনে নিয়ে গিয়েছিলেন টেস্টেও। কিন্তু পায়ের ইঞ্জুরির কারণে দল থেকে বিশ্বকাপ দল থেকে ছিটকে গিয়েছেন তিনি। শুধু বিশ্বকাপ নয়, ধারণা করা হচ্ছে এ বছরের বাকি সময়টাই তাঁকে মাঠের বাইরে থাকতে হতে পারে। 

  • জাসপ্রিত বুমরাহ (ভারত)

ইঞ্জুরির কারণে এশিয়া কাপের দলে ছিলেন না। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে নেমে দারুণ প্রত্যাবর্তনও করেছিলেন। কিন্তু সে ম্যাচের পরেই আবারো পিঠের ইঞ্জুরিতে পড়েন বুমরাহ। আর এতেই বিশ্বকাপ যাত্রা শেষ হয়ে যায় তাঁর।

ন্যাচারাল পেস, সুইং সাথে আগ্রাসন- সবমিলিয়ে ভারতের বোলিং লাইনআপে দারুণ এক রসদ হতে পারতেন বুমরাহ। কিন্তু বহুদিন ধরে বয়ে বেড়ানো পিঠের ইঞ্জুরির সেই সম্ভাবনার পথটা রূদ্ধ করে দেয়। এতে করে ভারতের বোলিংটাও বেশ দুর্বল হয়ে গিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে বুমরাহ’র মতো জোরে বল করার মতো একটি বোলারও যে নেই তাদের স্কোয়াডে। 

  • ভ্যান ডার ডুসেন (দক্ষিণ আফ্রিকা)

দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটে তাঁর শুরুটা হয়েছিল বয়স ত্রিশের কোঠা পেরোনোর পর। কিন্তু ডি ভিলিয়ার্স, হাশিম আমলা যুগের পর তাদের রেখে যাওয়া পথ ধরে ঠিকঠাক ভাবেই চলতে থাকেন ভ্যান ডার ডুসেন। ওয়ানডে ক্রিকেটে এই মুহূর্তে তাঁর গড়টা ৮৯.৯২! আর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সেটা ৩৬।

এতে করে প্রোটিয়া মিডল অর্ডারে নিজের জায়গাটা ঠিকই পাকাপোক্ত করে নেন তিনি। কিন্তু আঙুলের ইনজুরির কারণে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল থেকে ছিটকে যান ডুসেন।  আর তাঁর অনুপস্থিতির কারণে বিশ্বকাপে মিডল অর্ডার ব্যাটিংয়ে বেশ খানিকটা ভুগতেও হতে পারে প্রোটিয়াদের।

  • শিমরন হেটমায়ার (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)

হেটমায়ার অবশ্য দল থেকে কোনো ইনজুরির কারণে বাদ পড়েননি। তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিশ্বকাপ দল থে্কে বাদ পড়েছেন অদ্ভুত এক কারণে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের জন্য অস্ট্রেলিয়াগামী ফ্লাইট তিনি টানা দুইবার মিস করেছিলেন।

আর এ কারণেই বিশ্বকাপ দল থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয় তাকে। তবে হেটমায়ারের ক্লিন হিটিং অ্যাবিলিটি, এক মুহূর্তের মাঝে ম্যাচের চিত্র পাল্টে দেওয়ার মতো পারফর্মেন্স নিশ্চিতভাবেই মিস করবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। 

  • জোফরা আর্চার (ইংল্যান্ড)

জোফরা আর্চারের ইনজুরি বেশ পুরনো। সে ইনজুরির কারণে বছর দুয়েক ধরেই মাঠের বাইরে তিনি। তাই বিশ্বকাপ স্কোয়াডেও যে তিনি থাকবেন না তা অনুমিতই ছিল। তবে বড় আসর তাঁর মতো পেসারের অনুপস্থিতিতে কিছুটা তো রঙ হারাবেই। 

  • রবীন্দ্র জাদেজা (ভারত)

বুমরাহর মতোই জাদেজার অনুপস্থিতিও ভারতের জন্য এই বিশ্বকাপে অপূরণীয় এক ক্ষতি। সলিড বোলিংয়ের পাশাপাশি মিডল অর্ডারে ব্যাট করে রানের চাকা সচলও রাখতে পারতেন। ভারতের লাইন আপেও তিনি অটোমেটিক চয়েস ছিলেন।  কিন্তু এশিয়া কাপ চলাকালীন ইনজুরিতে পড়ে বিশ্বকাপ দল থেকে আগেই ছিটকে যান জাদেজা। 

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link