ইম্প্যাক্ট প্লেয়ারের ইম্প্যাক্ট

ক্রিকেটটা এখন এগারো জনের খেলা নেই। এক্স ফ্যাক্টর কিংবা ইম্প্যাক্ট প্লেয়ারের সুবাদে ক্রিকেট পরিণত হয়েছে বারো জনের খেলায়। আইপিএলে প্রতিটি দলই তাই মরিয়া অতিরিক্ত খেলোয়াড়ের সুবিধা নিতে। আসুন দেখে নেয়া যাক এবারের মৌসুমের ইম্প্যাক্ট খেলোয়াড়দের সেরা পাঁচ পারফরম্যান্স।

ক্রিকেটটা এখন এগারো জনের খেলা নেই। এক্স ফ্যাক্টর কিংবা ইম্প্যাক্ট প্লেয়ারের সুবাদে ক্রিকেট পরিণত হয়েছে বারো জনের খেলায়। আইপিএলে প্রতিটি দলই তাই মরিয়া অতিরিক্ত খেলোয়াড়ের সুবিধা নিতে। আসুন দেখে নেয়া যাক এবারের মৌসুমের ইম্প্যাক্ট খেলোয়াড়দের সেরা পাঁচ পারফরম্যান্স।

  • বিজয় শংকর – (২৩ বলে ২৯ রান) বনাম দিল্লী ক্যাপিটালস

২০১৯ বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর একপ্রকার হারিয়েই গিয়েছিলেন ভারতীয় অলরাউন্ডার বিজয় শংকর। তবে এবারের আইপিএল মৌসুম দিয়ে নিজের পুরনো রূপে ফিরছেন এই তারকা। দিল্লী ক্যাপিটালসের বিপক্ষে ইম্প্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে খেলতে নেমে ২৩ বলে ২৯ রানের কার্যকরী এক ইনিংস খেলেন এই তারকা।

১৬২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৫৪ রানেই তিন উইকেট হারিয়ে বিপদেই পড়েছিল গুজরাট টাইটান্স। কিন্তু পাঁচে নেমে সাই সুদর্শনের সাথে ৫৩ রানের জুটি গড়ে সব শংকা উড়িয়ে দেন শংকর। তিন চারে সাজানো তাঁর ২৯ রানের ভর করেই পরবর্তীতে সহজ জয় তুলে নেয় গুজরাট। 

  • আয়ুশ বাদোনি – (২৪ বলে ৩০ রান) বনাম রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু 

গত মৌসুমেই মারকুটে ব্যাটিং দিয়ে সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন লখনৌ সুপার জায়ান্টসের তরুণ ব্যাটসম্যান আয়ুশ বাদোনি। ফর্মটা তিনি ধরে রেখেছেন এবারের মৌসুমেও। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর দেয়া ২১৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে খানিকটা ব্যাকফুটেই ছিল লোকেশ রাহুলের দল।

১২ ওভারে ১০৫ রান তুলতেই হারিয়ে ফেলে পাঁচ উইকেট। কিন্তু সাতে নেমে নিকোলাস পুরানের সাথে ৩৫ বলে ৮৪ রানের জুটি গড়ে দলকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন বাদোনি। পুরান বেশি বিধবংসী থাকলেও ২৪ বলে ৩০ রানের কার্যকরী এক ইনিংস খেলেন বাদোনি। শেষ বলে গড়ানো ঘটনাবহুল সেদিনের ম্যাচে এক উইকেটে জয় পায় লখনৌ। 

  • ধ্রুব জুরেল – (১৫ বলে অপরাজিত ৩২ রান) বনাম পাঞ্জাব কিংস 

ছোটদের বিশ্বকাপে ধ্রুব জুরেলের সতীর্থরা প্রায় সকলেই আইপিএলে নিজেদের জাত চিনিয়েছেন। জুরেল তাই নিজের সামর্থ্যের জানান দিতে বেছে নিয়েছেন এবারের মৌসুমকেই। পাঞ্জাব কিংসের দেয়া ১৯৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের শুরু থেকেই চাপে ছিল রাজস্থান রয়্যালস। ১৫ ওভারে ১২৪ রানে ছয় হারিয়ে ফেলে সঞ্জু স্যামসনের দল।

কিন্তু দারুণ এক বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্তে আপাতদৃষ্টিতে হারা ম্যাচে প্রাণ ফিরিয়ে এনেছিল রাজস্থান ম্যানেজমেন্ট, অভিজ্ঞ জেসন হোল্ডারের বদলে তাঁরা ক্রিজে পাঠায় তরুণ জুরেলকে। মাঠে নেমেই পাঞ্জাবের বোলিং লাইনআপের বিপক্ষে বিধ্বংসী ব্যাটিং শুরু করেন এই তারকা। ১৫ বলে তিন চার এবং দুই ছক্কায় ৩২ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন এই তরুণ। যদিও সেদিন মাত্র পাঁচ রানের আক্ষেপে পুড়তে হয়েছিল জুরেলকে, ১৯১ রানেই থামে রাজস্থানের ইনিংস।

  • সুয়াশ শর্মা – (৩০ রানে তিন উইকেট) বনাম রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু 

কলকাতা নাইট রাইডার্সের স্পিন আক্রমণ বরাবরই শক্তিশালী। এবারে বরুণ চক্রবর্তী, সুনীল নারাইনদের সাথে নতুন সংযোজন তরুণ সুয়াশ শর্মা। 

রয়েল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে নিজের অভিষেক ম্যাচেই তিন উইকেট শিকার করেন এই রহস্য স্পিনার। তাঁর স্পিন বিষে নীল হয়ে একে একে সাজঘরে ফেরেন দীনেশ কার্তিক, অনুজ রাওয়াত এবং কর্ণ শর্মা। তাঁর ৩০ রানে তিন উইকেটের সুবাদেই ৮১ রানের বড় জয় পায় কলকাতা। 

  • ভেঙ্কটেশ আইয়ার – (৪০ বলে ৮৩ রান) বনাম গুজরাট টাইটান্স 

২০২১ আইপিএল দিয়ে আলোচনায় আসলেও ক্রমাগত ব্যর্থতায় একপ্রকার হারিয়েই গিয়েছিলেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার। ২০২৩ আইপিএল দিয়ে নিজের ফিরে আসার মিশনে নেমেছেন এই তারকা। শ্রেয়ার আইয়ার ইনজুরিতে ছিটকে যাওয়ায় এমনিতেই নড়বড়ে কলকাতার ব্যাটিং অর্ডার। তাঁর অভাবটা পূরণেই কিনা দলটি ইম্প্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে আরেক আইয়ার।

সেই আস্থার কি দারুণ প্রতিদান দিচ্ছেন এই তরুণ তুর্কি, গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে খেলেছেন ৪০ বলে ৮৩ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। ২০৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ২৮ রানেই দুই ওপেনারকে হারায় কলকাতা। এরপর অধিনায়ক নীতিশ রানাকে নিয়ে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন আইয়ার, তাঁদের ১০৫ রানের জুটিতেই ম্যাচে ফেরে কলকাতা।

৮৩ রানের ইনিংসে আটটি চারের পাশাপাশি পাঁচটি ছক্কা হাঁকান আইয়ার। পরবর্তীতে শেষ ওভারে রিংকু সিংয়ের পাঁচ ছক্কায় রূপকথার এক জয় পায় দলটি। 

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...