মাশা আমিনির মৃত্যুর ঘটনা তো সারা পৃথিবীব্যাপী সবারই জানা। পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের স্বীকার মাশা আমিনি নামের ইরানি নারীর মৃত্যুর প্রতিবাদে সারা ইরান তোলপাড় হয়েছিল। এই বিক্ষোভ ছড়িয়েছিল গোটা দুনিয়ায়ই। এবার সেই প্রতিবাদের দ্যুতি পৌঁছেছে চলমান ফিফা আসর অবধি। এই প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন ইরানের জাতীয় দলের ফুটবলার থেকে শুরু করে খেলা দেখতে আসা সাধারণ সমর্থকরাও।
বিশ্বকাপে গ্রুপ-বি এর দল ইরান। নিজেদের বিশ্বকাপ মিশনের প্রথম ম্যাচে দলটি মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ডের সাথে। সেই ম্যাচে ‘মোরাল পুলিশিং’-এ জেরে মাশা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় এবং সরকারবিরোধী জুলুমের প্রতিবাদে সামিল হয় ইরানের জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড়রাও।
তবে তাঁদের প্রতিবাদটা ছিল একটু ভিন্ন। ম্যাচের আগে যে আনুষ্ঠানিক জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়, সেখানে শামিল হননি ইরানের ফুটবলাররা। তাঁরা নীরব থেকেই যেন সরব প্রতিবাদের বার্তা দিয়েছেন গোটা বিশ্বকে।
আল রাইয়ানের খলিফা স্টেডিয়ামে প্রতিবাদের এই ভিন্নরূপ দেখে পুরো বিশ্ব। যদিও এই ঘটনার জের গড়িয়েছে বহুদূর। স্বাভাবিকভাবেই একটা জাতীয় দলের ফুটবলাররা, দিনশেষে সরকারের নিয়মে বন্দি। হয়তো দেশে ফিরলে এই প্রতিবাদের শাস্তিও পাবেন তাঁরা।
যার ফলস্বরূপই পরের ম্যাচে দেখা গেল ওয়েলসের সাথে ম্যাচের সময় ফুটবলাররা জাতীয় সঙ্গীত গাইতে বাধ্য হলেন। যদিও এদিন ইরানের সমর্থকরা এই প্রতিবাদকে যেন আরো একধাপ এগিয়ে নিলেন। পতাকা ও ব্যানার হাতে নিয়ে স্টেডিয়ামে ভীড় করেন ইরানি সমর্থকরা।
আহমেদ বিন আলি স্টেডিয়ামে নিরাপত্তার অজুহাতে তখন একজন ইরানি ভক্তের কাছ থেকে একটি শার্ট বাজেয়াপ্ত করার ঘটনাও ঘটে। যেটির পিছনে মাশা আমিনি নামটি মুদ্রিত ছিল। তবে প্রায় দুই মাস ধরে চলে আসা বিক্ষোভের বার্তায় সেদিন গোটা গ্যালারি প্ল্যাকার্ড, স্লোগান এবং নারী অধিকারের বার্তায় মুখর ছিল, যা গোটা বিশ্বকে যেন কিছুক্ষণের জন্য থমকে দিয়েছিল।