‘গ্রুপ বি’ এর গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে প্রথমার্ধের প্রায় পুরোটুকুই ছিলো ম্যারম্যারে। প্রথম ৪৫ মিনিট শেষে আরো একটি গোলশূন্য ড্র এর দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিলো ম্যাচ। প্রথমার্ধে দুই দলই প্রায় সমান সমান আক্রমণ করলেও আধিপত্য কিছুটা বেশি ছিলো ইরানের। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আধিপত্য বজায় রেখে খেলতে থাকে ইরান। ম্যাচের ৫২ তম মিনিটে একই আক্রমণে পর পর দুইবার পোস্টে লেগে প্রতিহত হয় ইরানের শট।
৫৩ তম মিনিটে প্রতি-আক্রমণে প্রায় পুরো ম্যাচেই নিষ্প্রভ ওয়েলস তারকা গ্যারেথ বেলের এক ক্রস থেকে গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলো। কিন্তু ব্যর্থ হয় সেই আক্রমণ। এরপরেই ইরানের আধিপত্য কিছুটা ভেঙে খেলার নিয়ন্ত্রণ নেবার চেষ্টা করে ওয়েলস। বেশ কয়েকটি সুযোগও তৈরি করে তাঁরা।
৮৪ মিনিটে বেন ডেভিসের শট কাঁপন ধরায় ইরানের রক্ষণে। তবে খেলার নিয়ন্ত্রণ ছিলো ইরানের কাছেই। একটির পর একটি সুযোগ তৈরি করে তারা। কখনো রক্ষনে কখনো গোলরক্ষক আবার কখনো পোস্টে লেগে প্রতিহত হচ্ছিলো ইরানের আক্রমণ।
ম্যাচের ৮৫ তম মিনিটে ইরানের আক্রমণ ঠেকাতে ডি-বক্সের অনেকটা বাইরে চলে আসেন ওয়েলস গোলরক্ষক হেনেসি। তখনই তাঁর করা ফাউলে প্রথমে হলুদ কার্ড এবং পরে ভিএআরের সিদ্ধান্তে লাল কার্ড দেখেন হেনেসি। এবারের বিশ্বকাপে লাল কার্ডে নাম লেখানো ব্যক্তি তিনি। মূলত এটিই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। এরপর ম্যাচের ৮৯ তম মিনিটে ইরানের তদাবির শট পোস্ট ঘেষে চলে যায়।
দশজনের ওয়েলস দলকে রীতিমত চেপে ধরে ইরান। একের পর এক আক্রমণ আঘাত করতে থাকে ওয়েলসের রক্ষণে। ওয়েলস দল সবকিছু ভুলে নিজেদের গোলবার আগলে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছিল। অন্যদিকে ইরান জয় ব্যতীত অন্যকিছু যেন চিন্তাও করতে চাইছিল না। তাইতো দলের প্রতিটা খেলোয়াড় ক্লান্তিকে পেছনে ফেলে আক্রমণ অব্যাহত রেখে গেছে শেষ অবধি।
আর ম্যাচের সব রোমাঞ্চ যেন জমে ছিলো অতিরিক্ত সময়ের জন্য। অতিরিক্ত সময়ের একদম শেষ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে নেয়া শটে ইরানকে ১-০ গোলে এগিয়ে দেন চেসমি। এরপরের মিনিটেই রামিন রিজিয়ার গোলে ২-০ গোলে জয় নিশ্চিত হয় ইরানের। এই জয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাবার আশা বেচে রইলো ইরানের বিশ্বকাপে কোনো ইউরোপীয় দলের বিপক্ষে এইটি তাদের প্রথম জয়। অন্যদিকে ওয়েলসের বিদায় অনেকটাই নিশ্চিত এই পরাজয়ে।