এই মুহূর্তে বিশ্ব ক্রিকেটের সেরা ব্যাটসম্যান বিরাট কোহলিকে বললে বোধহয় খুব বেশি মানুষ আপত্তি জানানোর কথা নয়। ভারতের রান মেশিন নিজেকে নিয়ে গিয়েছেন এক অনন্য উচ্চতায়। তবে রান, সেঞ্চুরি বা বয়সে বিরাটের থেকে অনেকটা পিছিয়ে থাকা বাবর আজমও আসতে পারেন এই আলোচনায়। গত কয়েক বছরে ভারতের ও পাকিস্তানের এই দুই অধিনায়ক যেনো পাল্লা দিয়েই লড়ছেন। দুজনই নিজ নিজ দেশের সফল ব্যাটসম্যান ও অধিনায়ক।
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তানের দুই অধিনায়কের পাশাপাশি কেন উইলিয়ামসন, স্টিভ স্মিথদের নামও আসতে পারে এই তালিকায়। তবে বাকিদের তুলনায় বাবর আজম অনেকটা পিছিয়ে থাকলে তাঁর নিখুঁত টেকনিক দিয়ে নিজেকে দ্রুত সময়েই নিয়ে এসেছেন সেরাদের তালিকায়। ধারণা করা হয় বিরাটদের মত লম্বা সময় ক্রিকেট খেললে সবাইকেই ছাড়িয়ে যাবার ক্ষমতা রাখেন এই পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান।
তবে একটি ব্যাপারে এখনই বিরাটের থেকে এগিয়ে যাচ্ছেন বাবর আজম। সেটি হচ্ছে নিয়মিত বড় ইনিংস খেলার ক্ষমতা। লম্বা সময় ধরে সেঞ্চুরির দেখা পাচ্ছেন না ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি। তিনি সবশেষ ওয়ানডে সেঞ্চুরি করেছিলেন প্রায় দেড় বছর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। এরপর টানা ১৫ ওয়ানডে ম্যাচে কোনো সেঞ্চুরির দেখা পাননি তিনি। অথচ শেষ ১৫ ম্যাচে চারটি সেঞ্চুরি আছে বাবর আজমের। তাঁর শেষ চার ওয়ানডে ইনিংসেই দুইটি সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন তিনি।
এক্ষেত্রে পাকিস্তানের সাবেক পেস বোলার আকিব জাভেদ মনে করেন বাবর আজমের থেকে টেকনিকে খানিকটা পিছিয়ে যাচ্ছেন বিরাট কোহলি। তিনি মনে করেন শচীন টেন্ডুলকারের মতই টেকনিক্যালি অনেক বেশি শার্প বাবর আজম। দুইজনের ব্যাটিং এই কোনো দুর্বলতা চোখে পড়ে না।
ক্রিকেট পাকিস্তানকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি তিনি বলেন, ‘আপনি যখন বাবরে ব্যাটিং দেখবেন, তখন তাঁর কোনো দুর্বল জায়গা খুঁজে পাবেন না। বাবর ট্যাকনিকালি অনেক বেশি সেইফ। তবে বিরাটের ফিটনেস অসাধারণ। বাবর যদি বিরাটের মত ফিটনেস ধরে রাখতে পারে তাহলে সে বিরাটকেও ছাড়িয়ে যাবার ক্ষমতা রাখে। কোহলি বরং বাবরের টেকনিক ফলো করতে পারেন বড় ইনিংস খেলার জন্য।’
পাকিস্তানের ঐতিহ্যবাহী ব্যাটিং ইতিহাসকে আরো সমৃদ্ধ করছেন বাবর আজম। মোহম্মদ ইউসুফ বা ইনজামাম উল হক দের মত গ্রেট ব্যাটসম্যানদের যোগ্য উত্তরসরি তিনি। অনেকেই মনে করেন এই ধারবাহিকতা ও ফিটনেস ধরে রাখতে পারলে খুব শীঘ্রই সেরাদের কাতারে চলে যাবেন এই ব্যাটসম্যান।
জাভেদ মনে করেন, সেদিন খুব দূরে নয় যেদিন আইসিসি র্যাংকিংয়ে কোহলিকে ছাড়িয়ে যাবেন বাবর। তিনি বলেন, ‘গত দুই-তিন বছরে পাকিস্তানের ব্যাটিং এর অর্ধেকই যেনো বাবর আজম। আমি কখনো ভাবিনি সে এতটা ধারাবাহিক হবে এবং র্যাংকিং এ বিরাট কোহলিদেরও পেড়িয়ে যাবে। পাকিস্তান খুব আনন্দিত যে তিনি এমন একটা দলের হাল ধরেছেন এবং সামনে থেকে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এমনকি অধিনায়কত্বের চাপ তাঁর ব্যাটিং এ একটুও পড়ছে না।’
বোঝাই যাচ্ছে, বাবর-বিরাটের লড়াইয়ের আড়ালে ভারত-পাকিস্তান লড়াইও জমে উঠছে!