ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) এমনিতেই বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের কদর কম। সাকিব আল হাসান আর মুস্তাফিজুর রহমানই যা একটু নিয়মিত খেলেন। এর বাদে এবার খেলছেন যেমন লিটন দাস। গত কয়েকটা মৌসুম ধরে তাসকিন আহমেদ আলোচনায় থাকলেও তাঁকে এখন অবধি দেখা যায়নি ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক এই আসরে।
এখানে সাকিব নিশ্চয়ই থাকবেন সবার ওপরে। লম্বা সময় ধরে তিনি খেলেছেন আইপিএল আসর। দু’টো শিরোপা জিতেছেন। দল কলকাতার চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় ভূমিকাও রেখেছেন। মোট চারটা ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতায় তাঁকে আইপিএলের ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা ভিনদেশি কিংবদন্তি বলা যায়।
সাকিবের তুলনায় অভিজ্ঞতার বিচারে মুস্তাফিজুর রহমান পিছিয়ে থাকলেও তাঁর শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে ২০১৬ সালে অভিষেকেই চ্যাম্পিয়ন হন, জিতেন সেরা উদীয়মান খেলোয়াড়ের পুরস্কার। এরপর আরও তিনটা ফ্র্যাঞ্চাইজিতে খেলেন তিনি। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, রাজস্থান রয়্যালস হয়ে এখন তিনি দিল্লী ক্যাপিটালসের সেনানী।
যদিও, সময়টা বেশ মলিনই কাটছে তাঁর। প্রথম তিন ম্যাচে ডাগ আউটে বসে থাকার পর দিল্লীর চতুর্থ ম্যাচে এবারের আইপিএলে প্রথম খেলতে নামেন মুস্তাফিজ। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে সেই ম্যাচে ৪ ওভারে ৩৮ রানে ১ উইকেট নিয়েছিলেন মুস্তাফিজ।
পরের ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে তিন ওভারে ৪১ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন মুস্তাফিজ। তৃতীয় ওভারে প্রথমবারের মত বোলিং করতে এসে দুটি চারে ১০ রান দেন মুস্তাফিজ। ১০ তম ওভারে দ্বিতীয়বার বোলিং করে দুটি ছক্কা ও একটি চারে ১৯ রান দেন ফিজ। ১৯ তম ওভারে তৃতীয়বারের মত আক্রমনে এসে দুটি চারে ১২ রান দেন মুস্তাফিজ।
মানে, ব্যাপারটা এমন যেন মুস্তাফিজের ম্যাজিক ট্রিকের উত্তর যেন সবারই জানা। আর টানা বাজে পারফরম্যান্সে যেটা হয়েছে – দিল্লী ক্যাপিটালস ম্যানেজমেন্টের ভরসা স্বাভাবিক ভাবেই কমে যেতে শুরু করেছে। এই মৌসুমে তাঁকে আর সুযোগ দেওয়া তাই নাও হতে পারে। এমন না যে, দিল্লীর অবস্থা খুব ভাল। গোটা দলই আসলে ছন্নছাড়া পারফরম্যান্স দেখাচ্ছে। টানা ম্যাচ হেরে পয়েন্ট তালিকায় সবার নিচে আছে ডেভিড ওয়ার্নারের দল।
এমন অবস্থায় মুস্তাফিজের আইপিএল ভবিষ্যৎ পড়েছে হুমকির মুখে। এমনিতেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) আইপিএলে যেতে খেলোয়াড়দের এনওসি বা অনাপত্তিপত্র নিয়ে গড়িমসি করে। এমনকি বাংলাদেশের ক্রিকেটেরদের ওপর ‘ছায়া নিষেধাজ্ঞা’ আরোপ করার পরিকল্পনাও আছে – ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর।
তার ওপর পারফরম্যান্সও যদি না থাকে, তাহলে ভিত্তিমূল্য যত কমই হোক না কেন – মুস্তাফিজদের দিকে আর হয়ত হাত বাড়াবে না ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। সেটাই যদি হয়, তাহলে বলা যায় – মুস্তাফিজের আইপিএল ক্যারিয়ার কার্যত শেষই হতে চলেছে।