ভারতের ভবিষ্যৎ পেস বোলিং কাণ্ডারি

গত এক দশকে অভাবনীয় উন্নতি করেছে ভারতের পেস আক্রমণ। একসময় চার স্পিনার নিয়ে খেলা ভারত দেশের মাটিতে দুর্দান্ত প্রতাপে ম্যাচ জিতলেও বিদেশের মাটিতে করতো অসহায় আত্মসমর্পণ।

তবে দিন বদলের পালা এসেছিল ভারতীয় ক্রিকেটে। অস্ট্রেলিয়া বা ইংল্যান্ডের মাটিতেও পেস বোলিংয়ের শক্তিতে নিয়মিত টেস্ট জেতে ভারত। সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়া সফরে তো অজিদের ঘরের মাঠে সিরিজ হারিয়েই এসেছে টিম ইন্ডিয়া।

কিন্তু ইশান্ত শর্মা, ভুবনেশ্বর, মোহাম্মদ শামি কিংবা জাসপ্রিত বুমরাহদের পর ভারতীয় পেস বোলিংকে কে বা কারা নেতৃত্ব দিতে পারেন তা এখনো বোঝা যায়নি।

একটা প্রজন্মের পর যেন আর বিশ্বমানের পেসার তেমন ভাবে উঠেই আসছে না। নাহলে, জাসপ্রিত বুমরাহ এক বছর ধরে মাঠের বাইরে থাকলেও তাঁর অভাব কেন পূরণ করতে পারবেন না কেউ।

তাই তিন ফরম্যাটের জন্য ভবিষ্যতের পেস বোলার খুঁজে বের করাটাই ভারতের জন্য বিশাক এক চ্যালেঞ্জ এখন। জাসপ্রিয় বুমরাহ প্রায় এক বছর ধরে মাঠের বাইরে, বাজে ফর্মের কারণে টেস্ট দল থেকে বাদ পড়েছেন উমেশ যাদব, আর বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে বিশ্রাম দেয়া হয়েছে মোহাম্মদ শামিকে। তাই সামনের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে একমাত্র মোহাম্মদ সিরাজ ছাড়া বাকিদের বেশ আনকোড়াই বলতে হবে।

তবে ভারতের সাবেক পেসার ইশান্ত শর্মা অবশ্য আশাহত হতে রাজি নন। নতুন প্রজন্মের পেসারদের মধ্যেও ভালো সম্ভাবনা দেখেন তিনি। মনে করেন, উমরান মালিক কিংবা আর্শদ্বীপ সিংদের মাঝে সম্ভাবনা আছে ভবিষ্যতে ভারতীয় বোলিংকে নেতৃত্ব দেবার।

ইউটিউবের একটি পডকাস্টে ইশান্ত বলেন, ‘যদি তাকে নিয়ে ভালোভাবে কাজ করা যায় তাহলে বলব উমরান মালিকের সামর্থ্য আছে দেশের জন্য দীর্ঘ সময়ে ধরে ভালো কিছু করার। আরেকজন হতে পারে আর্শদ্বীপ সিং।’

এছাড়াও আইপিএল দিয়ে আলোচনায় আসা পেসার মুকেশ কুমারের মাঝেও বেশ ভালো ভবিষ্যৎ দেখেন ইশান্ত। গত আইপিএলে মুকেশের সাথেই দিল্লী ক্যাপিটালসের হয়ে খেলেছেন ইশান্ত।

যদিও নিজের প্রথম আইপিএলটা ভালো যায়নি মুকেশের। দশ ম্যাচ খেলে মাত্র সাত উইকেট নিয়েছেন ১০.৫২ ইকোনমিতে। তবে পরিসংখ্যানের দিকে না তাকিয়ে মুকেশের মত বোলারদের সামর্থ্যের ওপর আস্থা রাখতে বললেন ইশান্ত।

তিনি বলেন, ‘অনেকেই মুকেশের গল্পটা জানে না। কিন্তু আমি তাঁর মত সাধারণ মানুষ আর দেখিনি। যদি তাকে একটি নির্দিষ্ট বল করতে বলা হয় তাহলে সে শুধুমাত্র সেটিই করবে। মাঠে তাঁর সঠিক দিক নির্দেশনা দরকার যাতে করে যখন চাপ আসবে তখন যেন সে বুঝতে পারে কোন ডেলিভারিটি করত হবে। আইপিএলে সে অনেক রান দিয়েছে কারণ তাকে কঠিন পরিস্থিতিতে বল করতে হয়েছে। সে কোন পরিস্থিতিতে বল করেছে বা কার বিরুদ্ধে বোলিং করেছে সেসব কেউ দেখে না। সবাই শুধু দেখে সে চার ওভারে ৫০ রান দিয়েছে।’

মুকেশকে খুব কাছ থেকে দেখার সুবাদে ইশান্ত জানেন কি পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে বোলিং করতে হয়েছে তাকে। ব্যাখ্যা দিলেন সেটিরই, ‘যখন রাসেল ব্যাটিং করছিল এবং তারা আট উইকেট হারিয়ে ফেলল তখন তাঁর আর কি বা হারানোর আছে? যদি তখন আপনি একটা ইয়োর্কার করতে একটু ভুলও করেন তখন সে আপনাকে ছক্কা মেরে দেবে। কেউ এসব জিনিস লক্ষ্য করে না। যদি তাকে সঠিক ভাবে দেখভাল করা হয় তাহলে সে অনেক ভালো একজন পেসার হবে।’

সামনের মাসের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের টেস্ট এবং ওয়ানডে দলে সুযোগ পেয়েছেন মুকেশ কুমার। তবে উমরান মালিক কিংবা আর্শদ্বীপদের জায়গা হয়নি লাল বলের ক্রিকেটে। এই দুই পেসারই আছেন ওয়ানডে দলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link