ক্ষুধার্ত বাঘের সামনে হরিণের প্রতাপ!

ড্রাইভিং সিটে আন্দ্রে রাসেল। ইনিংসের শেষ ওভারে বোলিং প্রান্তে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। গ্যালারি কিংবা ম্যাচ পরিস্থিতি কোনোটাই তখন এ পেসারের অনুকূলে নেই। মিরপুরের পুরো গ্যালারিও অপেক্ষায় ছিল রাসেল তাণ্ডবের। কিন্তু সবাইকে নিশ্চুপ বনে পাঠিয়ে কুমিল্লা থেকে ম্যাচের মোমেন্টামের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিজেদের দিকে আনেন সাইফউদ্দিন। 

ক্ষুধার্ত বাঘের সামনে হরিণের প্রতিরোধ। দৃশ্যায়নটাকে ঠিক এভাবেই সংজ্ঞায়িত করা যায়। ম্যাচের মোমেন্টামটা তখন ঘুরে গিয়েছিল কুমিল্লা শিবিরেই। ক্রিজে এসেই আন্দ্রে রাসেল থমকে যাওয়া ইনিংসে ব্যাট হাতে একটা দমকা হাওয়া বইয়ে দিলেন জেমস ফুলারের উপরে। অথচ সেই ওভারের আগে ম্যাচের সেরা বোলিংটা করেছিলেন এই ইংলিশ বোলারই। কিন্তু উনিশ তম ওভারে এসে আন্দ্রে রাসেলের বিপক্ষে ওই এক ওভারেই হজম করলেন তিনটা ছক্কা। আগের তিন ওভারের দুর্দান্ত বোলিং তাই ম্লান হয়ে যায় নিজের শেষ ওভারেই।

রাসেলের ওই ছক্কা ঝড়ের পর কুমিল্লা ততক্ষণে দেড়শো রানের সংগ্রহ পেরিয়ে ১৭০-এ চোখ রাখছে। ড্রাইভিং সিটে আন্দ্রে রাসেল। ইনিংসের শেষ ওভারে বোলিং প্রান্তে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। গ্যালারি কিংবা ম্যাচ পরিস্থিতি কোনোটাই তখন এ পেসারের অনুকূলে নেই। মিরপুরের পুরো গ্যালারিও অপেক্ষায় ছিল রাসেল তাণ্ডবের। কিন্তু সবাইকে নিশ্চুপ বনে পাঠিয়ে কুমিল্লা থেকে ম্যাচের মোমেন্টামের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিজেদের দিকে আনেন সাইফউদ্দিন।

আগের দুই ওভারে ৪ ছক্কা হাঁকানো আন্দ্রে রাসেল সাইফউদ্দিনের করা ৬ বলের মধ্যে ৫ টা বলই ফেস করলেন। কিন্তু রান বের করতে পারলেন মাত্র ২ টা। তার মধ্যে একটি রান আবার আসলো লেগ বাইয়ের মাধ্যমে। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের ওই ওভারে খামতি বলতে ছিল শুধু ৩ টা ওয়াইড আর একটা নো বল। কিন্তু রাসেলের সামনে ফ্রি হিটে বাউন্ডারি তো দূরে থাক, রানই দিলেন না, ডট বল। আর ১০ বলের সেই ওভারে রান দিলেন মোটে ৭ রান। যার মধ্যে ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ২ রান।

ফরচুন বরিশালের ম্যাচভাগ্য পাল্টে যায় তাতেই। আগের ওভারে ফুলার যেখানে ২১ রান হজম করে দলকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছিলেন, সেখানে শেষ ওভারে মাত্র ৭ রান দিয়ে আবারো বরিশালকে স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ড্রেসিংরুমে ফিরতে সাহায্য করেন সাইফউদ্দিন। এ ম্যাচে তাঁর বোলিং ফিগার শেষ হয়েছে ৩৭ রানে ১ উইকেট দিয়ে। কিন্তু ম্যাচ পরিস্থিতিতে উইকেটের চেয়েও যেন, দুর্দান্ত ছিল নিজের করা শেষ ওভারটি।

অবশ্য গোটা টুর্নামেন্ট জুড়েই বল হাতে আলো জ্বালিয়েছেন তিনি। ৮ ম্যাচে নিয়েছেন ১৫ উইকেট। নতুন বলে বোলিং কিংবা ডেথ ওভার, বরিশালের হয়ে দুই ‘প্রয়োজন’ই মিটিয়েছেন এ পেস বোলিং অলরাউন্ডার। ইনজুরির কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অনিয়মিত হয়ে পড়েছেন। তবে নিজেকে ফেরানোর জন্য প্রমাণ করার মঞ্চটাতে ঠিকই নিজেকে চেনালেন। দুরন্ত প্রত্যাবর্তনে ক্রিকেটে ফিরেছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও সেই পুনরাবৃত্তি নিশ্চয়ই অপেক্ষা করছে তাঁর সামনে।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...