নামের পাশে ফিফটি নেই। নেই শতকও। বড় ইনিংস বলতে গেলে ৪০ রানের অপরাজিত একটি ইনিংস। এবারের বিপিএলে রাউন্ড রবিন লিগ পর্ব শেষে জাকের আলী অনেকের সঙ্গী ১৭৯ রান। আপাতদৃষ্টিতে, আলোচনায় আসার জন্য নিশ্চয়ই এই পরিসংখ্যান যথেষ্ট নয়।
তবে পরিসংখ্যানের খেরোখাতায় যখন উঠে আসে, ৯ ইনিংসে জাকেরকে আউট করা গেছে মাত্র ২ বার, আর পুরো টুর্নামেন্টটি তিনি কাটাচ্ছেন দেড়শোর উপরে স্ট্রাইকরেটের ব্যাটিংয়ে, তখন আলোচনা ছাপিয়ে তাঁকে নিয়ে বিশ্লেষণ করাই যায়। জাকের আলী অনিক, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের যেন এক নয়া আবিষ্কার। যে আবিষ্কারের মাঝে লুকিয়ে আছে সম্ভাবনা, পূর্ণতার এক উৎস।
মিরপুরের মন্থর উইকেটেই হয় বিপিএলের সিংহভাগ ম্যাচ। আর সে কারণে দেশি ব্যাটারদের স্ট্রাইকরেটও তেমন আশার সঞ্চার তৈরি করে না। তবে এর মাঝেই আশা জাগানিয়া এক নাম হয়ে উঠছেন জাকের আলী। এবারের বিপিএলের শুরুটা করেছিলেন ২৯ রানের কাযকারী ইনিংস। রাউন্ড রবিন লিগের শেষটাও করলেন অপরাজিত ৩৮ রানের ইনিংস খেলে।
এই ধরনের ছোট ইনিংসগুলো অনুমিতভাবেই আলোচনায় আসে কম। কিন্তু এই ছোট ইনিংসগুলোই যে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয় দলের। কুমিল্লা সেই সুফল ভোগ করেছে পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই। জাকেরে মুগ্ধ হয়ে তো দলটির কোচ সালাউদ্দিন জানিয়েই দিয়েছিলেন, গায়ের রঙ কালো হওয়াতেই তিনি ব্রাত্য জাতীয় দলে।
আসলেও কি তাই? বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলে অনেক দিন ধরেই শূন্যস্থান হয়ে আছে পিঞ্চ হিটারের জায়গাটা। জাকের সেই জায়গাটাই পূর্ণ করতে পারেন। অন্তত সময় বুঝে তাঁর ব্যাটিং, গেমসেন্স এরই মধ্যে নজর কেড়েছে।
জাকের লোয়ার মিডল অর্ডারেই ব্যাটিং করে থাকেন। এই পজিশনে বেশি রান করার চেয়ে প্রয়োজন দ্রুতগতিতে রান তোলা। কিন্তু এই পজিশনে অদ্যাবধি কেউ রান করেন তো রানগতি কম, আবার কারোর পাওয়ার হিটিং আছে তো, ধারাবাহিকতা নেই। জাকের সেই দুই চাওয়া মেটাতে পারেন এক সাথেই। পুরো বিপিএলে মাত্র ২ বার আউট হয়েছেন। ১৫১ স্ট্রাইকরেট, গড় ৮৯.৯। এই পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে, জাকের এই পজিশনে কতটা সিদ্ধহস্ত।
জাকেরের সুযোগ অদূর সময়ে মিলবে কিনা তা সময়ই বলে দিবে। তবে এবারের বিপিএল দিয়ে যে তাঁর একটা উত্থান ঘটেছে, তা নিয়ে সংশয় নেই। এই উত্থানযাত্রার ধারাবাহিকতা থাকলেই সুফল পাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট।