ফরম্যাট, কন্ডিশন, প্রতিপক্ষ নির্বিশেষে জাসপ্রিত বুমরাহ বিশ্বের সেরা বোলার – না, এমন বাড়াবাড়ি মন্তব্যকে এখন আর সামান্য মতামত বলে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। অন্তত ভারত-পাকিস্তান হাইভোল্টেজ ম্যাচের পর এটাকে ধ্রুব সত্য বলেই মেনে নিতে বাধ্য থাকবেন সবাই। কি অনায়াসে ম্যাচের গতিপথ বদলে দিলেন তিনি, কি অনায়াসে পাকিস্তানের বুকের ওপর আসুরিক আঘাত হানলেন।
এইতো সবশেষ আইপিএলে ব্যাটারদের কাছে যখন তুলোধুনো হচ্ছিলো চামড়ার বলটা, তখনো এই পেসার জাদু দেখিয়েছেন নিজের মত করে। অবলীলায় পরাস্ত করেছেন বিধ্বংসী হয়ে উঠা ব্যাটারকে, বলে-কয়ে থামিয়ে দিয়েছেন রানের চাকা। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচেও তাঁর সুনিপুণ পারফরম্যান্স দেখা গিয়েছে।
আর পাকিস্তানের বিপক্ষে তো বছরের পর বছর মনে রাখার মত করেই পারফরম করলেন এই ডানহাতি। চার ওভারে ১৪ রান খরচায় তিন উইকেট শিকার করেছেন তিনি; অধিনায়ক যখন যেভাবে যা চেয়েছিল তাঁর কাছে, তখন সেভাবেই নিজের সেরাটা দিয়েছেন। দুই বছর আগে বিরাট কোহলি যেমন অবিশ্বাস্য একটা জয় এনে দিয়েছিলেন মেলবোর্নে, ঠিক সেটাই বল হাতে করলেন বুমরাহ।
শুরুটা করেছিলেন পাকিস্তানের মূল ভরসা বাবর আজমকে দিয়ে। নিউ ইয়র্কের উইকেট বাবরই হতে পারতেন নায়ক, কিন্তু তাঁকে নিজের দ্বিতীয় ওভারেই ফিরিয়ে দিয়েছেন। এরপর মোহাম্মদ রিজওয়ান যখন দলকে জয়ের পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখন আবার তাঁকে বোল্ড করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন এই বোলার।
আর শেষ ওভারে তিনি যা করলেন সেটা সত্যিই ভয়ানক সুন্দর। ইফতেখার আহমেদকে যেভাবে গোল খাইয়ে ছেড়েছেন তাতেই ম্যাচে পরাজয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল বর্তমান রানার আপদের।
গতি, অ্যাকুরেসি, সুইং, সিম, বাউন্স, স্লোয়ার, ইয়র্কার কিংবা ব্যাটারকে রিড করার ক্ষমতা – এত এত গুণের সমাহার নিয়ে এই তারকা রাজ করবেন সেটাই তো স্বাভাবিক। প্রতিটা ম্যাচের আগেই হয়তো বলে দেয়া যায়, তিনি বিপদের কারণ হবেন। তবু তাঁকে ঠেকানোর উপায় জানা নেই কারোই, এই ক্রিকেট দুনিয়া এখন তাই তাঁর সাম্রাজ্য!