টেস্ট মানসিকতা ও একজন বেলিম

বাংলাদেশের ক্রিকেটে প্রবাদপ্রতীম এক চরিত্র জাভেদ ওমর বেলিম। ধীরগতির রান তোলা, গ্রামাটিকালি বল ছেড়ে দেয়ার জন্যই বেশি আলোচিত। খুব একটা অন্যায় নয়, বেশ স্বাভাবিকভাবেই তিনি এমনই ছিলেন। তবে তখন জীবন সহজ ছিল, বাংলাদেশ দল হিসেবেও কম প্রত্যাশার চাপে ছিল। তাই জাভেদ ওমর বেলিমের ওয়ানডে ম্যাচে প্রথম তিন ওভারের মধ্যে স্কয়ার কাটে একেকটা চারের পরে যে আনন্দ তা এখনো মনে পড়ে। ধারণা করতাম বাংলাদেশ আজ দুইশো করবে।

ইংল্যান্ডে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সিরিজের সিরিজ সেরার কথা মনে পড়ে?

বাংলাদেশের ক্রিকেটে প্রবাদপ্রতীম এক চরিত্র জাভেদ ওমর বেলিম। ধীরগতির রান তোলা, গ্রামাটিকালি বল ছেড়ে দেয়ার জন্যই বেশি আলোচিত। খুব একটা অন্যায় নয়, বেশ স্বাভাবিকভাবেই তিনি এমনই ছিলেন। তবে তখন জীবন সহজ ছিল, বাংলাদেশ দল হিসেবেও কম প্রত্যাশার চাপে ছিল।

তাই জাভেদ ওমর বেলিমের ওয়ানডে ম্যাচে প্রথম তিন ওভারের মধ্যে স্কয়ার কাটে একেকটা চারের পরে যে আনন্দ তা এখনো মনে পড়ে। ধারণা করতাম বাংলাদেশ আজ দুইশো করবে।

জাভেদ ওমর বেলিম ছেলেবেলার এমন অনেক আনন্দের প্রত্যক্ষ উপলক্ষ্যই ছিলেন বলা চলে। জাভেদ ওমর ব্যাট ধরতেন সুন্দর এবং ইনটেন্ট ছিল উইকেটে থাকার- এখনকার ক্রিকেটারদের চেয়ে বেশিই সেটা পারেন তিনি।

সাধারণত দুই যুগের ক্রিকেটারদের তুলনা অযৌক্তিক শোনায়, কিন্তু অনেকেই গুল্লু ভাইকে নিয়ে উপহাস করার টোনেই তাকে প্রাসঙ্গিক আলোচনায় আনেন। কিন্তু তিনি এখনকার অনেক ক্রিকেটারদের চেয়েই বেশি শক্ত এবং পোক্ত- যেমন অভিষেক টেস্টেই ৬২ ও ৮৫*।

জিম্বাবুয়ের বোলিং লাইন আপের বিপক্ষে, বুলাওয়েওতে! যদিও তখন বেশিরভাগ টেস্টই হতো জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে, কিন্তু সেই জিম্বাবুয়ের বোলিং লাইন আপ ছিল তুখোড়, হিথ স্ট্রিক, ব্লিগনট, এনকালা!

নিয়মিত বিরতিতেই জাভেদ ওমর ৫০ প্লাস ইনিংস খেলতেন। দক্ষিণ আফ্রিকা যেবার বাংলাদেশ সফরে আসে সেবারও ছিল ৭১ রানের ইনিং। এরপর পেশোয়ারে খেলেছিলেন পাকিস্তানের বিপক্ষে ১১৯ রানের একটা ইনিংস, এই পেশোয়ার টেস্টে একটা সময় বাংলাদেশ ছিল বড় লিডে।

জাভেদের ক্যারিয়ার বর্ণিল না, আড়ম্বর ছিল কম কিন্তু তিনি ছিলেন কার্যকরী। এখন অনেক মানুষ পাওয়া যায়, কাজ করে দেয়ার মানুষটা কাজের সময় পাওয়া যায় না।

চেস্টার লি স্ট্রিটে ইংল্যান্ডের সর্বকালের সেরা একটা পেস ইউনিটের সামনে ৩৭ ও ৭১ মেরেছিলেন এক টেস্টে। এসব নাম্বার এখন ক্রিকিনফো দেখে মনে করলেও ম্যাচের দৃশ্যপট এখনো চোখে ভাসে। ভঙ্গুর, থরথর সেই বাংলাদেশে জাভেদ ছিলেন বাধের মতো দাঁড়িয়ে।

হগার্ডের সুইং, হার্মিসনের বাউন্স আর ফ্লিনটফের আগ্রাসনের সামনে তিনি বাংলাদেশের সব ব্যাটসম্যান মিলিয়ে করেছিলেন ৪২০ এর মতো। সেখানে জাভেদের একশো!

আজকের দিনে শান্ত, সাইফদের ব্যাটিং তথা আউট হওয়ার স্টাইল দেখে মনেই হচ্ছে জাভেদ-বাশাররা অনেক গাটেড ছিলেন, মনে মনে ১০০ বল খেলার একটা তাড়না নিয়ে নামতেন।

এই লেখাই শেষ করতে করতে রাজিন সালেহ’র কথাও মনে পড়ছে, ১২০ বলের মতো খেলা তার একটা লক্ষ্যই ছিল, রাজিন সালেহ’র খেলার ধরন সিলেটে নিয়মিত ফলো করেছি, তার মতো পরিশ্রমি মনন খুব কম ছিল।

পরিশ্রম শুধু ঘাম ঝরিয়েই হয় না, একটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে আগানোর জন্য প্রয়োজন হয় যথাযথ চিন্তা, প্রক্রিয়া ও প্রয়াসের মিশ্রণ।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...