উত্থান-পতনের এল পিবিতো

বার্সেলোনায় ম্যারাডোনাকে ডাকা হতো ‘এল পাইব দ্যি ওর’ মানে গোল্ডেন বয়। আর স্যাভিওলাকে বলত ‘এল পিবিতো’ মানে ছোটবাচ্চা। ম্যারাডোনাকে স্মরণ করেই এই নাম। ছোটখাটো গড়নের স্যাভিওলার আরেকটা নাম ছিল - ‘এল কোনেহো’, মানে র‍্যাবিট অথবা খরগোশ। ম্যারাডোনার রেকর্ড ভেঙেই স্যাভিওলা জিতেছিল সবচেয়ে কম বয়সে গোল্ডেন বুট। রিভার প্লেটে শুরু স্যাভিওলার ফুটবল। বার্সা-রিয়াল-বেনফিকা হয়ে আবার রিভারেই শেষ। ১৬ বছর বয়সে প্রথম পরেছিল লাল আর সাদা জার্সি। আইমার-ওর্তেগা-পাবলো অ্যাঞ্জেলসহ তখনই গড়ে ছিল ‘লস কোয়ার্টো ফান্তাস্তিকোস’। নামের অর্থটা অনুমেয়।

মৃত্যু,ট্যাক্স এবং আর্সেনালের বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন লিগে পড়া যেমন সত্য ম্যারাডোনার অবসরের পরে মানে ১৯৯০ এর একেবারে শেষের দিক থেকে শুরু করে মেসি আসার আগ পর্যন্ত আর্জেন্টিনায় নিয়ম ছিল তেমন করে নতুন ম্যারাডোনা উপাধি দেওয়া। অনেকেই পেয়েছেন সেটা।

যদিও ব্যাপারটা এখন আর্সেনালের চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলার মতনই অবসোলিট৷ আর্সেনাল ফ্যানরা আমাকে গালি দিবেন না দয়া করে।অনেক ভেবে চিনতে এই ইন্ট্রো লিখলাম এমন কিছুও না আবার। মাথায় আসল, লিখে ফেললাম। আবার আমার আর্জেন্টিনা-জার্মানিও তো একই কেস। যদিও কোপাটা জিতে গেলাম কয়েক মাস আগে। উইলি ভাই বলেছে তাই এডিট করলাম হালকা করে।

এক গল্প মনে আসল আসলে। ১৯৭১ সালে বেকার স্ট্রিটের লয়েড ব্যাংকে ডাকাতি হল। ডাকাত দল ব্যাংকের থেকে ১-২ বিল্ডিং পরের দোকান ভাড়া নিয়ে মাটি খুঁড়ে খুঁড়ে ব্যাংকের ভল্টে ঢুকেছিল। সবকিছু নিয়ে যাবার সময় দেয়ালে ঝুলিয়ে গেল, ‘শার্লক হোমস,পারলে আমাদের ধরো!’

বেকার স্ট্রিটে ডাকাতি, শার্লককে স্মরণ না করাটা পাপ। যেমনটা আর্জেন্টিনায় নতুন ম্যারাডোনা উপাধি না দেয়া ।এমন ক্রিয়েটিভ ডাকাত( লেখক) হতে পারলে মন্দ হতো না। এই ডাকাতিই নিয়ে কিন্তু বানানো হয়েছে জেসন স্ট্যাথামের মুভি দ্যা ব্যাংক জব।চমৎকার কাহিনি কিন্তু।

বার্সেলোনায় ম্যারাডোনাকে ডাকা হতো ‘এল পাইব দ্যি ওর’ মানে গোল্ডেন বয়। আর হ্যাভিয়ের স্যাভিওলাকে বলত ‘এল পিবিতো’ মানে ছোটবাচ্চা। ম্যারাডোনাকে স্মরণ করেই এই নাম। ছোটখাটো গড়নের স্যাভিওলার আরেকটা নাম ছিল – ‘এল কোনেহো’, মানে র‌্যাবিট অথবা খরগোশ। ম্যারাডোনার রেকর্ড ভেঙেই স্যাভিওলা জিতেছিল সবচেয়ে কম বয়সে গোল্ডেন বুট। রিভার প্লেটে শুরু স্যাভিওলার ফুটবল। বার্সা-রিয়াল-বেনফিকা হয়ে আবার রিভারেই শেষ। ১৬ বছর বয়সে প্রথম পরেছিল লাল আর সাদা জার্সি। আইমার-ওর্তেগা-পাবলো অ্যাঞ্জেলসহ তখনই গড়ে ছিল ‘লস কোয়ার্টো ফান্তাস্তিকোস’। নামের অর্থটা অনুমেয়।

রিভার এবং যুব বিশ্বকাপের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স এনে দিল ক্যাম্প ন্যুর হাতছানি। প্রথম মৌসুমেই আসল ১৭ গোল,বয়স মাত্র ১৯। খরগোশের মতন দৌড়াতে পারত পুরো মাঠ। ধরতে গিয়ে ধরা হয় না তাকে, ক্রাশদের মতন! কী সব হাবিজাবি মেটাফোর যে মাথায় আসে আমার! হয়তো আমাকে দেখলে কেউ না কেউ বলত অলস মস্তিষ্ক মেটাফোরের কারখানা।

তবে, জগত বিখ্যাত সাহিত্যিক মিগুয়েল ডি সারভান্তেস খুশি হতেন বেশ আমার লিখায়। ওনার লেখা বিখ্যাত ‘ডন কিহোতে’ নোবেলে পেয়েছিলাম এমন দুর্দান্ত সব মেটাফোর। যেমন যে দুজন ভালোবাসার মানুষকে মিলিত হবার সুযোগ করে দেয়, তাঁকে তিনি বলেছিলেন পিম্প! ফুটবল নিয়ে লিখতে গিয়ে উপন্যাসের কথা বলি,ডাকাতির কথা বলি, অর্থনীতিরও। কী করব আর অন্যকিছু লিখতে পারি না, সুযোগ পাই না।

দুর্দান্ত আর্জেন্টাইন ফুটবলার হবেন আর হারিয়ে যাবেন না সেটি কখনো হতে পারে না। ব্যাপারটা স্পাইডারম্যানের প্রেমিকা এমজের মতন, প্রেমিকা যখন হয়েছে বিল্ডিং থেকে পড়বেই।স্যাভিওলারও তাই হল। প্রথম মৌসুমের পারফরম্যান্স না থাকলেও খারাপ করত না। কিন্তু নতুন কোচ আর ইতোর আগমন বাধ্য করে তাকে বেঞ্চে বাড়ি বানানোর,পরবর্তীতে অন্য ক্লাবে।

মোনাকো-সেভিয়া হয়ে বার্সার শত্রু গ্রিন গব্লিনে মানে রিয়াল মাদ্রিদে। অবশ্য সেখানেও থিতু হতে পারেননি। ইউরোপে নিজের ক্যারিজমার শেষ পদছাপ রাখতে চলে গেলেন পর্তুগালে, বেনফিকাতে। সেখানে শিরোপা জিতলেন।ফিরলেন আতুরঘরে, রিভার প্লেটে।

স্যাভিওলা জোড়া গোল করেছিলেন মনে হয় টানা ২-৩ ম্যাচে। বার্সার হয়ে আছে হ্যাটট্রিকও। রিয়ালের স্মৃতি বললে মনে পড়ে এক প্র‍্যাংক এর কথা। রিয়ালের তিন বদলি প্লেয়ারই মাঠে নেমেছিল সে ম্যাচে। বেঞ্চে থাকা স্যাভিওলার মাথায় নেই সে ব্যাপারটা। পাশে বসা দুজন তাকে বললেন কোচ ‘তোমাকে নামাবে’ বলল, মুখে রাজ্যের হাসি নিয়ে স্যাভিওলা করতে যাবেন ওয়ার্মআপ তখনই ভাঙল ভুল। খেলাটা ভালবাসতেন স্যাভিওলা যখনই সুযোগ এসেছে, কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছেন।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...