গ্রেটনেসের উৎসব ইংল্যান্ডের

ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি নয় বরং প্রতিশোধের ঘটনাই ঘটল। পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৯৯২ এর ওয়ানডে বিশ্বকাপ হাতছাড়ার মধুর প্রতিশোধটা ইংল্যান্ড নিল ২০২২ এর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এসে। সেই একই মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড সাক্ষী হয়ে থাকলো উভয় ঘটনার। বিশ ওভারের ফরম্যাটের সেরা দল হিসেবে ক্রিকেটবিশ্বে নিজেদের জাহির করলো ইংল্যান্ড। ইংরেজ শিবির থেকে ইংরেজ ভক্ত সমর্থক সবাই আজ সেই খুশিতে মাতোয়ারা।

ইংল্যান্ড ওয়ানডে ফরম্যাটেও বর্তমানে বিশ্বসেরা দল। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ আসরে চ্যাম্পিয়ন হয় তাঁরা। এবার সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটেও সিংহাসন দখল করে নিলো দলটি। বুক ফুলিয়ে দলটি এখন বল্যতেই পারে ক্রিকেটের সীমিত ফরম্যাট গুলোতে তাঁরাই বিশ্বসেরা দল।

ইংল্যান্ড অধিনায়ক জশ বাটলার ম্যাচশেষের আনুষ্ঠানিকতায় নিজের অনুভূতি ভাগ করে নিলেন সবার সাথে। তিনি বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিততে পেরে আমি সত্যিই গর্বিত। আমাদের জন্য এটি দীর্ঘ যাত্রা এবং কিছু পরিবর্তনও এসেছে। তবে আমরা গত কয়েক বছরে যেভাবে খেলে আসছি তার পুরষ্কার হিসেবে এই শিরোপা পেয়েছি। এটি একটি চমৎকার টুর্নামেন্ট হয়েছে। এখানে আসার আগে আমরা পাকিস্তান খেলতে গিয়েছিলাম, যেটি দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময় ছিল। অভিজ্ঞতাটি কাজে দিয়েছে।’

যশ বাটলার আরও বলেন, ‘আদিল রশিদ দুর্দান্ত করেছেন। গত তিন ম্যাচে তিনি আমাদের জন্য অসাধারণ ছিলেন। ফাইনালে আমরা শুরুটা ভালো করতে পেরেছিলাম, কিন্তু সহজ ছিল না। আদিল রশিদের দুর্দান্ত ওভারটা ম্যাচের গতি ঘুরিয়ে দিল। পরে ব্যাটিংয়ে বেন স্টোকস শেষ পর্যন্ত অনবদ্য পারফর্ম করেন। তিনি যা করেন নিজের সেরাটা দিয়ে করেন এবং তাঁর দারুণ অভিজ্ঞতাও কাজে দিয়েছে। তাঁর সঠিক সময়ে আবির্ভূত হওয়া এবং শেষ অবধি মঈন আলির ইনিংসটাই পাকিস্তানকে জয় থেকে ছিটকে দিয়েছে।’

এইদিকে দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্সের দরুন প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ এবং প্লেয়ার অব দ্য সিরিজও নির্বাচিত হয়েছেন ইংল্যান্ডের স্যাম কারান। ইংলিশদের পক্ষে ১২ রান খরচ করে তিনটি উইকেট শিকার করেছেন এই বোলার। ম্যান অব ম্যাচ এবং সিরিজের পুরস্কার নিতে এসে জানিয়েছেন নিজের অনুভূতি।

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না এটা আমার পাওয়া উচিত। আমি মনে করি যেভাবে বেন স্টোকস খেলেছে, ফাইনালে ফিফটি পেয়েছে এবং সে দলের জন্য বারংবার করে যাচ্ছে, স্টোকসের এটা পাওয়া উচিত। আমরা এই অর্জনটি উপভোগ করতে যাচ্ছি, কারণ এটি বিশেষ ব্যাপার। এখানে বড় স্কয়ার বাউন্ডারি। তাই আমি জানতাম আমার ইনটু দ্য উইকেট টাইপ বোলিং কাজ করবে। উইকেটটিকে যতটা ভালো ভেবেছিলাম আমরা,  ততটা ভালো ছিল না। আমরা এখন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, ব্যাপারটি বেশ ভালো। স্টোকস খুব স্পেশাল। তিনি এমন একজন ব্যক্তি যার উপর আমরা নির্ভর করি এবং দলের প্রয়োজনে যিনি সর্বদা অবদান রাখেন।’

ইংলিশ এই বোলার আরও বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। এটি একটি দুর্দান্ত টুর্নামেন্ট হয়েছে। আমার প্রথমবারের বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ এবং শিরোপা জয়। এখানে আশ্চর্যজনক ভিড়। আমি টুর্নামেন্টে এসে মানিয়ে নিতে চেয়েছিলাম। আগে ডেথ ওভারে আমি খুব বেশি বোলিং করিনি কারণ এটি এমন একটি দক্ষতা যা আমি ঝালিয়ে নিতে চেয়েছিলাম। এই লাইন আপে ব্যাট করা কঠিন হলেও আমি আমার ব্যাটিংয়ে আরও উন্নতি করতে চাই। আহা! বিশ্বচ্যাম্প হওয়া কতই না ভালো!’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link